Dhaka ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে তরুণীকে বিক্রিকালে পাচারকারী গ্রেপ্তার

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 242

জনতার আদালত অনলাইন  ভাল চাকরী ও বেশী বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রির চেষ্টাকালে ১৯ বছর বয়সী এক তরুনীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় ঘটনায় জড়িত রফিক সরদার (৩৪) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের তাহের কাজীর পাড়া গ্রামের উম্বার সরদারের ছেলে।

গত মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পল্লীর প্রধানগেট থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। এসময় অপর আসামী রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার নাদুরিয়া বাস্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিবর কসাই (৫০) কৌশলে পালিয়ে যায়।

উদ্ধার হওয়া তরুনী জানায়, তার নানা গরু কেনা বেচার ব্যবসা করেন। ব্যবসার কারনে পলাতক আসামী মজিবার কসাইয়ের সাথে পরিচয় ও তার নানা বাড়িতে যাতায়াত ছিল। এ কারণে তার সাথেও (উদ্ধার হওয়া তরুনী) মজিবর কসাইয়ের সাথে পরিচয় হয়। সে বিউটি পর্লারে কাজ করত। একদিন মজিবর কসাই তাকে জিজ্ঞাসা করে সে কত বেতন পায়। সে জানায় বিউটি পার্লারে কাজ করে সে মাসে ৭ হাজার টাকা বেতন পায়। মজিবর কসাই তার নানাকে প্রস্তাব দেয় যে অনেক ভালো বেতনে তার চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিবে। মজিবর কসাইয়ে কথায় সে ও তার নানা রাজি হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারী সে তার নানার সাথে টাঙ্গাইল তার খালার বাড়িতে রওনা হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌছালে মজিবর কসাই রফিক সরদারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে জানান, উনি ভালো চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিবেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারী রফিক সরদার ফোনে তাদের (উদ্ধার হওয়া তরুনী ও তার নানা) জানায়, ভালো চাকরীর ব্যবস্থা হয়েছে, বাসাও ঠিক করা হয়েছে, তারা যেন দ্রুত দৌলতদিয়ায় চলে আসে। তারা ওই দিনই বিকেল ৫টার দিকে রফিকের কথায় বিশ্বাস করে দৌলতদিয়ায় চলে আসেন। দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় তার নানা পাশের দোকানে গেলে রফিক তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর প্রধান গেটে নিয়ে যায়। এসময় সে (তরুনী) তার নানার জন্য অপেক্ষা করতে বললে রফিক জানায়, ‘তোমার নানা বাসা চেনেন, ওনি চলে আসবেন। অসুবিধা নেই ওখানে তোমার মত আরো অনেক মেয়ে আছে।’ কিছুদুর এগুতেই সে বুঝতে পারে তাকে যৌনপল্লীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় সে ভেতরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এ অবস্থায় তাকে জোরপূর্বক যৌনপল্লীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সে (তরুনী) চিৎকার করতে শুরু করে। এসময় স্থানীয়রা সহ বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি মহিলা সমিতির কর্মীরা এগিয়ে এসে থানা পুলিশকে খবর দেয়।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, খবর পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থালে গিয়ে ওই তরুনীকে উদ্ধার ও একজনকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় জড়িত অপর আসামীকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে উদ্ধার হওয়া তরুনী বাদি হয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে তরুণীকে বিক্রিকালে পাচারকারী গ্রেপ্তার

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

জনতার আদালত অনলাইন  ভাল চাকরী ও বেশী বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রির চেষ্টাকালে ১৯ বছর বয়সী এক তরুনীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় ঘটনায় জড়িত রফিক সরদার (৩৪) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের তাহের কাজীর পাড়া গ্রামের উম্বার সরদারের ছেলে।

গত মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পল্লীর প্রধানগেট থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। এসময় অপর আসামী রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার নাদুরিয়া বাস্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিবর কসাই (৫০) কৌশলে পালিয়ে যায়।

উদ্ধার হওয়া তরুনী জানায়, তার নানা গরু কেনা বেচার ব্যবসা করেন। ব্যবসার কারনে পলাতক আসামী মজিবার কসাইয়ের সাথে পরিচয় ও তার নানা বাড়িতে যাতায়াত ছিল। এ কারণে তার সাথেও (উদ্ধার হওয়া তরুনী) মজিবর কসাইয়ের সাথে পরিচয় হয়। সে বিউটি পর্লারে কাজ করত। একদিন মজিবর কসাই তাকে জিজ্ঞাসা করে সে কত বেতন পায়। সে জানায় বিউটি পার্লারে কাজ করে সে মাসে ৭ হাজার টাকা বেতন পায়। মজিবর কসাই তার নানাকে প্রস্তাব দেয় যে অনেক ভালো বেতনে তার চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিবে। মজিবর কসাইয়ে কথায় সে ও তার নানা রাজি হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারী সে তার নানার সাথে টাঙ্গাইল তার খালার বাড়িতে রওনা হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌছালে মজিবর কসাই রফিক সরদারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে জানান, উনি ভালো চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিবেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারী রফিক সরদার ফোনে তাদের (উদ্ধার হওয়া তরুনী ও তার নানা) জানায়, ভালো চাকরীর ব্যবস্থা হয়েছে, বাসাও ঠিক করা হয়েছে, তারা যেন দ্রুত দৌলতদিয়ায় চলে আসে। তারা ওই দিনই বিকেল ৫টার দিকে রফিকের কথায় বিশ্বাস করে দৌলতদিয়ায় চলে আসেন। দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় তার নানা পাশের দোকানে গেলে রফিক তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর প্রধান গেটে নিয়ে যায়। এসময় সে (তরুনী) তার নানার জন্য অপেক্ষা করতে বললে রফিক জানায়, ‘তোমার নানা বাসা চেনেন, ওনি চলে আসবেন। অসুবিধা নেই ওখানে তোমার মত আরো অনেক মেয়ে আছে।’ কিছুদুর এগুতেই সে বুঝতে পারে তাকে যৌনপল্লীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় সে ভেতরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এ অবস্থায় তাকে জোরপূর্বক যৌনপল্লীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সে (তরুনী) চিৎকার করতে শুরু করে। এসময় স্থানীয়রা সহ বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি মহিলা সমিতির কর্মীরা এগিয়ে এসে থানা পুলিশকে খবর দেয়।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, খবর পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থালে গিয়ে ওই তরুনীকে উদ্ধার ও একজনকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় জড়িত অপর আসামীকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে উদ্ধার হওয়া তরুনী বাদি হয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।