Dhaka ০৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবেসে ১৮টি গান লিখেছেন কৃষক মহসিন আলী

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মার্চ ২০২১
  • / ১২৭৮ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥  স্কুলের বারান্দায় যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি তার। নৈশ স্কুলে দেড় মাসের মত পড়েছিলেন। পড়াশোনার এই জ্ঞানটুকু দিয়েই বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গান লিখে চলেছেন মো. মহসিন আলী শেখ। নিজের করা সুরে গানগুলো গান তিনি নিজেই। ৫৫ বছর বয়সী মহসিন আলী রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন কৃষক। তার আক্ষেপ বড় বড় নেতাদের কাছে ধর্ণা দিয়েও গানগুলো তাদের শোনাতে পারেননি।

শনিবার সকালে কৃষক মহসিন আলী দৈনিক জনতার আদালত কার্যালয়ে এসে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা কয়েকটি গান শোনান। জারী, সারি, ভাটিয়ালীর সুরে করা গানগুলোর কথায় বঙ্গবন্ধু ও  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ভালোবাসার ছোঁয়া আছে।

মহসিন আলী জানান, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, তখন তার বয়স মাত্র ১০ বছর। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবরে তার শিশুমন কেঁদে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আবেগ ভালোবাসা তখন থেকেই জন্মাতে থাকে। সময় গড়ায়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিছু করার সাধ জাগে। তার বাবা ছিলেন কৃষক। দরিদ্র পরিবারের সন্তান তিনি। তাই পড়াশোনা করা হয়নি। এরশাদের আমলে নৈশ স্কুলে ভর্তি হয়ে দেড় মাস মত পড়েছিলেন। পড়াশোনার ওই জ্ঞানটুকু দিয়েই তিনি গান লেখার কথা চিন্তা করেন। ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনার প্রকোপ শুরু হলে কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষেতের কাজ শেষ করে খাতা কলম নিয়ে নিজেই লেখা শুরু করেন গান। সন্ধ্যায় সেই গানের সুর দিতে চেষ্টা করেন। নিজের গলায় গাওয়ার চেষ্টা করেন গানগুলো। এভাবে এগুতে এগুতে এ পর্যন্ত ১৮টি গান লিখেছেন। পদ্মা সেতু নিয়েও লিখেছেন একটি গান।

গানগুলো কথা ও সুর করার পর অনেকের কাছেই ধর্ণা দিয়েছেন কোনো অনুষ্ঠানে গাওয়ার জন্য কিন্তু কেউ তাকে গুরুত্ব দেয়নি। যেকারণে এখনও কোথাও গাওয়া হয়নি পরম যতেœ লেখা ও সুর করা গানগুলো। তার টাকা পয়সা নেই। হতদরিদ্র। নিজের কোনো জমিজমা নেই। পরের জমি চাষ করে সংসার চালান। গানগুলো রেকর্ড করার মত অবস্থা তার নেই।

মহসিন আলী বলেন, গানগুলো যাতে প্রধানমন্ত্রী শুনতে পারেন সে ব্যবস্থা কেউ করে দিলে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া করতাম।

তার একটি গান এমন; জয় বাংলা জয় বাংলা বলে কাঁদছে আমার প্রাণ..

টুঙ্গিপাড়া যাব আমি কে কে যাবি আয়..

বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি টুঙ্গপাড়ায়..

থাকতো যদি বঙ্গবন্ধু সালাম দিতাম পায়।।

দুই মেয়ে এক ছেলের বাবা মহসিন আলী নিজে লেখাপড়া না জানলেও ছেলেকে উচ্চ শিক্ষিত করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ^াবিদ্যালয় থেকে মাসটার্স পাশ করেছেন তার ছেলে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবেসে ১৮টি গান লিখেছেন কৃষক মহসিন আলী

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মার্চ ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥  স্কুলের বারান্দায় যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি তার। নৈশ স্কুলে দেড় মাসের মত পড়েছিলেন। পড়াশোনার এই জ্ঞানটুকু দিয়েই বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গান লিখে চলেছেন মো. মহসিন আলী শেখ। নিজের করা সুরে গানগুলো গান তিনি নিজেই। ৫৫ বছর বয়সী মহসিন আলী রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন কৃষক। তার আক্ষেপ বড় বড় নেতাদের কাছে ধর্ণা দিয়েও গানগুলো তাদের শোনাতে পারেননি।

শনিবার সকালে কৃষক মহসিন আলী দৈনিক জনতার আদালত কার্যালয়ে এসে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা কয়েকটি গান শোনান। জারী, সারি, ভাটিয়ালীর সুরে করা গানগুলোর কথায় বঙ্গবন্ধু ও  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ভালোবাসার ছোঁয়া আছে।

মহসিন আলী জানান, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, তখন তার বয়স মাত্র ১০ বছর। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবরে তার শিশুমন কেঁদে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আবেগ ভালোবাসা তখন থেকেই জন্মাতে থাকে। সময় গড়ায়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিছু করার সাধ জাগে। তার বাবা ছিলেন কৃষক। দরিদ্র পরিবারের সন্তান তিনি। তাই পড়াশোনা করা হয়নি। এরশাদের আমলে নৈশ স্কুলে ভর্তি হয়ে দেড় মাস মত পড়েছিলেন। পড়াশোনার ওই জ্ঞানটুকু দিয়েই তিনি গান লেখার কথা চিন্তা করেন। ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনার প্রকোপ শুরু হলে কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষেতের কাজ শেষ করে খাতা কলম নিয়ে নিজেই লেখা শুরু করেন গান। সন্ধ্যায় সেই গানের সুর দিতে চেষ্টা করেন। নিজের গলায় গাওয়ার চেষ্টা করেন গানগুলো। এভাবে এগুতে এগুতে এ পর্যন্ত ১৮টি গান লিখেছেন। পদ্মা সেতু নিয়েও লিখেছেন একটি গান।

গানগুলো কথা ও সুর করার পর অনেকের কাছেই ধর্ণা দিয়েছেন কোনো অনুষ্ঠানে গাওয়ার জন্য কিন্তু কেউ তাকে গুরুত্ব দেয়নি। যেকারণে এখনও কোথাও গাওয়া হয়নি পরম যতেœ লেখা ও সুর করা গানগুলো। তার টাকা পয়সা নেই। হতদরিদ্র। নিজের কোনো জমিজমা নেই। পরের জমি চাষ করে সংসার চালান। গানগুলো রেকর্ড করার মত অবস্থা তার নেই।

মহসিন আলী বলেন, গানগুলো যাতে প্রধানমন্ত্রী শুনতে পারেন সে ব্যবস্থা কেউ করে দিলে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া করতাম।

তার একটি গান এমন; জয় বাংলা জয় বাংলা বলে কাঁদছে আমার প্রাণ..

টুঙ্গিপাড়া যাব আমি কে কে যাবি আয়..

বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি টুঙ্গপাড়ায়..

থাকতো যদি বঙ্গবন্ধু সালাম দিতাম পায়।।

দুই মেয়ে এক ছেলের বাবা মহসিন আলী নিজে লেখাপড়া না জানলেও ছেলেকে উচ্চ শিক্ষিত করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ^াবিদ্যালয় থেকে মাসটার্স পাশ করেছেন তার ছেলে।