Dhaka ০৭:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ী পৌরসভা নির্বাচন: ইভিএম নিয়ে প্রার্থী ভোটারদের উদ্বেগের পাশাপাশি আছে কৌতুহলও

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:২০:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ১৩৬৩ জন সংবাদটি পড়েছেন

 জনতার আদালত অনলাইন ॥ চতুর্থ ধাপে রাজবাড়ী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে ভোট নিয়ে প্রার্থী ভোটারদের উদ্বেগ যেমন আছে তেমন কৌতুহলেরও শেষ নেই। প্রার্থীরা বলছেন, ভোটারদের ভোটদান পদ্ধতি হাতে কলমে শেখানো দরকার। তা নাহলে কিছু ভোটারের ভোট পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নাও যেতে পারে। তবে কয়েক প্রার্থী নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে ইভিএম সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, উদ্বেগের কিছু নেই। এবিষয়ে ভোটারদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে শিগগিরই।

১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়ী পৌরসভা ‘ক’ শ্রেণির অধিভুক্ত। নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভার মোট ভোটার ৪৫ হাজার ২০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যাই বেশি।  পৌরসভার নাগরিকদের বেশিরভাগই খেটে খাওয়া মানুষ। জেলায় শিক্ষিতের হার ৫২.৩ ভাগ। ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে সবাই এতদিন ব্যালটেই সীল মেরে ভোট দিয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিটা তাদের কাছে একেবারেই অচেনা। এই পদ্ধতিতে ভোট দিতে গিয়ে তারা বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে বয়ষ্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা একটু বেশিই হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের ভোটার ফারুক উদ্দিন বলেন, পৌরসভার ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। মানুষ ভোট দিতে গিয়ে হিমশিম খাবে। আর এমনটি হলে পোলিং এজেন্টরা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। ভোটারের পছন্দমত জায়গায় ভোট নাও পড়তে পারে। তবে ইভিএম একটি নতুন প্রযুক্তি। মানুষ নতুন একটি যন্ত্রের সাথে পরিচিত হবে। বিষয়টি নিয়ে ভোটারদের নিশ্চয় কৌতুহলও রয়েছে।

৯ নং ওয়ার্ডের ভোটার ফয়েজুল হক বলেন, ইভিএম সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। আমরা না হয় একটু জেনে বুঝে ভোট দিতে পারব। কিন্তু অনেক বয়ষ্ক ভোটার আছেন যারা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়বেন। তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিতও হতে পারেন। ইভিএম নিয়ে আগে থোকেই প্রচার প্রচারণা দরকার। মানুষকে বোঝানো দরকার।

রাজবাড়ী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর নির্মল চক্রবর্তী শেখর বলেন, ইভিএম নিয়ে আমি ভোটাদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে ইভিএম বিষয়টিই বোঝেনা। এই ভোটদান পদ্ধতি নিয়ে সরকার আগে থেকে প্রচার করলে ভালো হতো। তবে যতটুকু বুঝেছি নির্বাচন কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। যেহেতু ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হবে। এজন্য ভোটারদের সচেতন করার কাজে নিজেই নেমে পড়েছি। প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি মানুষকে ইভিএমে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করছি।  দুই একদিনের মধ্যে ইভিএম কাগজে এঁকে কীভাবে ভোট দিতে হয় তা নিজেই শেখাবো। এছাড়া ভোটাররা যাতে সঠিক জায়গায় তাদের ভোটটি দিতে পারে এজন্য কলেজ পড়–য়া ছাত্রদের কয়েকটি ব্যাচ করে বাড়ি বাড়ি পাঠানোর কথাও ভাবছি।

৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ মজনু বলেন, বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। মানুষ সঠিক জায়গায় ভোটটি দিতে পারবে কীনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এজন্য ভোটারদের প্রশিক্ষণ দরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এধরণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলোনা।

রাজবাড়ী পৌরসভার সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন সাহা জানান, ইভিএম নিয়ে প্রচার প্রচারণা খুব শীগগীরই শুরু হবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (নির্বাচনের দুদিন আগে) প্রতিটি কেন্দ্রে মক ভোট অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ভোটাররা গিয়ে প্রাক্টিক্যালি ভোট দেওয়া শিখে আসবে।

রাজবাড়ী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের জানানোর জন্য মাইকিং শুরু হবে দুই একদিনের মধ্যে। এছাড়া  প্রজেক্টরের মাধ্যমে ভোটদান পদ্ধতি দেখানো হবে বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে হাট বাজার সহ জনবহুল জায়গাগুলো বেছে নেওয়া হবে। আশা করি কোনো সমস্যা হবেনা।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ী পৌরসভা নির্বাচন: ইভিএম নিয়ে প্রার্থী ভোটারদের উদ্বেগের পাশাপাশি আছে কৌতুহলও

প্রকাশের সময় : ০৭:২০:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

 জনতার আদালত অনলাইন ॥ চতুর্থ ধাপে রাজবাড়ী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে ভোট নিয়ে প্রার্থী ভোটারদের উদ্বেগ যেমন আছে তেমন কৌতুহলেরও শেষ নেই। প্রার্থীরা বলছেন, ভোটারদের ভোটদান পদ্ধতি হাতে কলমে শেখানো দরকার। তা নাহলে কিছু ভোটারের ভোট পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নাও যেতে পারে। তবে কয়েক প্রার্থী নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে ইভিএম সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, উদ্বেগের কিছু নেই। এবিষয়ে ভোটারদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে শিগগিরই।

১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়ী পৌরসভা ‘ক’ শ্রেণির অধিভুক্ত। নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভার মোট ভোটার ৪৫ হাজার ২০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যাই বেশি।  পৌরসভার নাগরিকদের বেশিরভাগই খেটে খাওয়া মানুষ। জেলায় শিক্ষিতের হার ৫২.৩ ভাগ। ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে সবাই এতদিন ব্যালটেই সীল মেরে ভোট দিয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিটা তাদের কাছে একেবারেই অচেনা। এই পদ্ধতিতে ভোট দিতে গিয়ে তারা বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে বয়ষ্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা একটু বেশিই হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের ভোটার ফারুক উদ্দিন বলেন, পৌরসভার ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। মানুষ ভোট দিতে গিয়ে হিমশিম খাবে। আর এমনটি হলে পোলিং এজেন্টরা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। ভোটারের পছন্দমত জায়গায় ভোট নাও পড়তে পারে। তবে ইভিএম একটি নতুন প্রযুক্তি। মানুষ নতুন একটি যন্ত্রের সাথে পরিচিত হবে। বিষয়টি নিয়ে ভোটারদের নিশ্চয় কৌতুহলও রয়েছে।

৯ নং ওয়ার্ডের ভোটার ফয়েজুল হক বলেন, ইভিএম সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। আমরা না হয় একটু জেনে বুঝে ভোট দিতে পারব। কিন্তু অনেক বয়ষ্ক ভোটার আছেন যারা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়বেন। তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিতও হতে পারেন। ইভিএম নিয়ে আগে থোকেই প্রচার প্রচারণা দরকার। মানুষকে বোঝানো দরকার।

রাজবাড়ী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর নির্মল চক্রবর্তী শেখর বলেন, ইভিএম নিয়ে আমি ভোটাদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে ইভিএম বিষয়টিই বোঝেনা। এই ভোটদান পদ্ধতি নিয়ে সরকার আগে থেকে প্রচার করলে ভালো হতো। তবে যতটুকু বুঝেছি নির্বাচন কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। যেহেতু ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হবে। এজন্য ভোটারদের সচেতন করার কাজে নিজেই নেমে পড়েছি। প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি মানুষকে ইভিএমে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করছি।  দুই একদিনের মধ্যে ইভিএম কাগজে এঁকে কীভাবে ভোট দিতে হয় তা নিজেই শেখাবো। এছাড়া ভোটাররা যাতে সঠিক জায়গায় তাদের ভোটটি দিতে পারে এজন্য কলেজ পড়–য়া ছাত্রদের কয়েকটি ব্যাচ করে বাড়ি বাড়ি পাঠানোর কথাও ভাবছি।

৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ মজনু বলেন, বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। মানুষ সঠিক জায়গায় ভোটটি দিতে পারবে কীনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এজন্য ভোটারদের প্রশিক্ষণ দরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এধরণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলোনা।

রাজবাড়ী পৌরসভার সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন সাহা জানান, ইভিএম নিয়ে প্রচার প্রচারণা খুব শীগগীরই শুরু হবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (নির্বাচনের দুদিন আগে) প্রতিটি কেন্দ্রে মক ভোট অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ভোটাররা গিয়ে প্রাক্টিক্যালি ভোট দেওয়া শিখে আসবে।

রাজবাড়ী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের জানানোর জন্য মাইকিং শুরু হবে দুই একদিনের মধ্যে। এছাড়া  প্রজেক্টরের মাধ্যমে ভোটদান পদ্ধতি দেখানো হবে বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে হাট বাজার সহ জনবহুল জায়গাগুলো বেছে নেওয়া হবে। আশা করি কোনো সমস্যা হবেনা।