রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের একাংশের সংবাদ সম্মেলন ॥ স্বেচ্ছাচারিতা অগণতান্ত্রিক ও অগঠনতান্ত্রিক উপায়ে আওয়ামী লীগের ইউনিট কমিটিগুলো গঠনের অভিযোগ ॥ এমপিকে ঢুকতে বাধা
- প্রকাশের সময় : ০৮:৩২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯
- / ৩২১১ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ অগণতান্ত্রিক, স্বেচ্ছাচারিতা এবং গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ একতরফাভাবে রাজবাড়ীতে আওয়ামী লীগের ইউনিট কমিটিগুলো গঠনের প্রতিবাদে শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের ব্যানারে স্থানীয় একটি চাইনিজ রেস্তোরায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার মুখে একদল উশৃঙ্খল যুবক সাংসদ কাজী কেরামত আলীকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি কাজী কেরামত আলী।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মহম্মদ আলী চৌধুরী, সহ সভাপতি আকবর আলী মর্জি, হেদায়েত আলী সোহরাব, যুগ্ম সম্পাদক অ্যড. রফিকুল ইসলাম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মহসিন উদ্দিন বতু, কোষাধ্যক্ষ আজগর আলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এসএম নওয়াব আলী, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমজাদ হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হোসেন শিকদার, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম পিয়ালসহ আওয়ামী লীগ ও স যোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে সাংসদ কাজী কেরামত আলী বলেন, কাউন্সিলের দিন তারিখ, কাউন্সিলর, ডেলিগেটস তালিকা তৈরী না করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুল হাকিম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে জামাত, বিএনপি , ফ্রিডম পার্টি ও অন্যান্য দল থেকে আগত হাইব্রীডদের নিয়ে নেতা নির্বাচন করছেন। যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। যেসব নেতাকর্মী এর প্রতিবাদ করেছেন তারা সংগঠন থেকে বহিষ্কার ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব জটিলতার কারণে এবং অগঠনতান্ত্রিক কার্যকলাপের বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে অবগত করা হলে তিনি রাজবাড়ী জেলার সর্বস্তরের সম্মেলন জাতীয় কাউন্সিলের আগে না করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুল হাকিম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে দেখা করলে উভয়পক্ষকে সমঝোতা করে জেলা আওয়ামী লীগের মিটিং ডেকে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ঠিক করে কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা দেয়ার নির্দেশনা দেন। সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে তাদের ইচ্ছেমতো কাউন্সিলর তালিকা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করেছেন। কাউন্সিলর তালিকায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের কাউন্সিলর করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি বাচ্চু রাজাকারকে রাজবাড়ীতে লুকিয়ে রেখে ভারতের বর্ডার পার করার দায়িত্বে নিয়োজিত রমজান আলী খানকে পুনরায় সদর উপজেলার সভাপতি করার প্রক্রিয়াকেও আমরা তীব্র নিন্দা করি। গত ২ নভেম্বর তারিখে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের মিটিংয়ে গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারা উপেক্ষা করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সামছুল ইসলাম, গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম মন্ডলকে দল থেকে অব্যাহতি প্রদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে একদল উশৃঙ্খল যুবক আমাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছিল। সংবাদ সম্মেলন বানচাল করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। আমরা ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছি। উশঙ্খল যুবকদের তালিকা করে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে দেবেন ও বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সকল কাউন্সিল উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা কেউ জানেই না। মাত্র এক দিনের নোটিশে কাউন্সিলের নামে পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ফকীর আব্দুল জব্বার বলেন, এই মুহূর্তে গোয়ালন্দে পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমি গোয়ালন্দের সন্তান। গোয়ালন্দে আমি ছাত্রলীগ, যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছি। অথচ আমাকে এ সম্মেলনের কথা বলা হয়নি। সংগঠন কারও ব্যক্তিগত নয়। এটা সবার জন্য। মঞ্চের দিকে নির্দেশ করে বলেন, এই কাতারে যারা আছেন তাদের কাউকে সম্মেলনের কথা জানানো হয়নি। এমপি কাজী কেরামত আলীকে সংবাদ সম্মেলনে আসতে বাধা দেয়ার তিনি তীব্র নিন্দা জানান।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক আকবর আলী মর্জি বলেন, তারা কেন্দ্রীয় নির্দেশও উপেক্ষা করেছে। সবার সাথে বসে সমঝোতা করে কাউন্সিলের কথা বলা হলেও তারা সেটা করেনি। যারা অতীতে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করেছে তারাই আজ আওয়ামী লীগের বড় নেতা। এটা খুব দুঃখজনক। আজ যারা সাংসদ কাজী কেরামত আলীকে অপমান করার চেষ্টা করেছে তাদের সংগঠন করার কোনো অধিকার নেই।