রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সাসটেইনেবল জার্নালিজম’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- প্রকাশের সময় : ০৮:১২:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
- / 6
টেকসই সাংবাদিকতার বিকাশ ও সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ‘সাসটেইনেবল জার্নালিজম: জার্নি টুওয়ার্ডস দ্য ফিউচার’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডয়েচে ভেলে একাডেমির সহযোগিতায় SOUTH ASIA CENTER FOR MEDIA IN DEVELOPMENT (SACMID) এবং রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ১২৩ নম্বর কক্ষে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বিভিন্ন বক্তার মাধ্যমে এ কর্মশালায় উঠে আসে সাংবাদিকতার ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা। SACMID-এর উপ-পরিচালক সৈয়দ কামরুল হাসান কর্মশালার মূল দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, “বর্তমান গণমাধ্যমের চাহিদা এবং প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাংবাদিকদের দক্ষতা বাড়ানো অপরিহার্য। সরকার এককভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে পারছে না, তাই কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করছে। এই কর্মশালাগুলো শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।”
ওয়ার্কশপে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাতিল সিরাজ বলেন, “আমাদের কারিকুলাম এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেখানে সমকালীন চাহিদার সঙ্গে শিক্ষার্থীরা প্রাকটিক্যাল জ্ঞানও অর্জন করছে। এটি সাসটেইনেবল জার্নালিজমের লক্ষ্য পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।”
এ সময় আরও দিকনির্দেশনা দেন কর্মশালার অন্যতম সমন্বয়কারী ও বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোমা দেব শিক্ষার্থীদের মাটির কাছাকাছি কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “আমরা ফিল্ডওয়ার্কভিত্তিক শিক্ষার ওপর জোর দিচ্ছি, যা শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে জড়তা কাটাতে সহায়তা করছে। শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের সংকট ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা।”
সংলাপে আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মশিহুর রহমান। তিনি বলেন, “সাসটেইনেবল জার্নালিজমের জন্য আমাদের কোয়ালিটি জার্নালিস্ট প্রয়োজন। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যুগোপযোগী ও সৃজনশীল কারিকুলাম তৈরি করতে হবে এবং তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।”
বর্তমান সময় মিডিয়ার সমালোচনা করে সমাপনী বক্তব্যে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, “সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে প্রযুক্তিগত ও মালিকানার পরিবর্তন। অনেক মিডিয়া হাউজের মালিকপক্ষ তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে গণমাধ্যম ব্যবহার করছে, যা গুণগত সাংবাদিকতার বড় বাধা। মালিকানার সদিচ্ছা ছাড়া ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন যেমন কঠিন, তেমনই কোয়ালিটি জার্নালিজমও প্রায় অসম্ভব।”
তিনি আরও জানান, “রাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের সবচেয়ে আধুনিক সাংবাদিকতা বিভাগে পরিণত হতে যাচ্ছে। বিভাগের রেডিও স্টেশন ও সিনেমা এডিটিং স্টুডিও ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়েছে। জুন মাসের মধ্যেই অত্যাধুনিক মিডিয়া ল্যাব এবং টিভি স্টেশন চালু হবে, যা শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
কর্মশালায় অংশ নেওয়া প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এ আয়োজনকে যুগোপযোগী এবং শিক্ষণীয় বলে অভিহিত করেন। কর্মশালার সঞ্চালক সহযোগী অধ্যাপক সোমা দেব এবং উপস্থিত ছিলেন বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। কর্মশালা শিক্ষার্থীদের কাছে সাসটেইনেবল জার্নালিজমের গুরুত্ব এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা তুলে ধরে।