ভাঙন আতঙ্কে এলাকাবাসী
রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর তীর রক্ষায় ৮০ মিটার এলাকার সিসি বøক ধসে পড়েছে
- প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২
- / ১১৪৪ জন সংবাদটি পড়েছেন
রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষায় সিসি বøক ধসে পড়েছে। গত দুইদিনে সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের লালগোলা এলাকায় প্রায় ৮০ মিটার এলাকার সিসি বøক পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ভাঙন এলাকায় দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে উড়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বসত ঘর। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, ভাঙন প্রতিরোধে তারা জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে।
জানা যায়, গত চারদিন আগে লালগোলা এলাকায় সিসি বøকের ৪০ মিটার এলাকা ভাঙন দেখা দিলে সেখানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনে পাউবো। শনিবার রাত থেকে আবার একই স্থানে নতুন করে ভাঙন শুরু হয় এবং ৪০ মিটার এলাকার সিসি বøক নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন এলাকা থেকে বেরি বাঁধের দূরত্ব মাত্র দেড়শ মিটার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লালগোলা এলাকার পদ্মা নদীর বøকগুলো ধসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় দেবে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত শ্রমিকরা সেখানে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করে চলেছেন। নদী দিয়ে বালুবাহী বড় বড় নৌকা, বাল্কহেড চলাচল করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাদেক আলী জানান, নদী ভাঙতে ভাঙতে বাঁধের কাছে চলে এসেছে। তারা এখন খুব আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। কখন যেন নদীতে বসতঘর সবকিছু ভেঙে নিয়ে যায়।
উড়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্র নাথ দাস জানান, ভাঙন এলাকা থেকে তার স্কুলটি দেড়শ মিটার দূরে। গত কয়েকদিন লালগোলা বাজার এলাকা থেকে নদী তীর সংলগ্ন গোরস্থান পর্যন্ত ভাঙনে নদী তীর রক্ষার বøক ধসে পড়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন সেখানে কাজ করছে। তার স্কুলসহ পুরো এলাকাটাই এখন নদী ভাঙনের ঝুঁকির মুখে।
বরাট ইউপি চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, কয়েক বছর আগে নদীতে তার বসত ঘর বিলীন হয়ে গেছে। পরে তিনি বাঁধের ওপারে নতুন করে বাড়ি করেছেন। গত তিন দিন যাবৎ তার ইউনিয়নের লালগোলা এলাকায় পদ্মা নদীর সিসি বøক ধসে পড়ছে। এতে উড়াকান্দা স্কুল, কিছু বসতঘর, ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল আমিন জানান, সিসি বøক ধসের পর আড়াইশ কেজি ওজনের ১১শ জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ করা হয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত নদীর উপর দৃষ্টি রাখছি। ১৫ দিন পর পর নদী সার্ভে করা হয়। যখন যেখানে ভাঙনের সম্ভাবনা থাকে সেখানে ভালো করে দেখেন। পদ্মা নদী খর¯্রােতা। একদিনের মাথায় অনেক চেঞ্জ হয়ে যায়। সার্ভেতে যেখানে ঝুঁকি বলে মনে হয় সেখানে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
প্রসঙ্গত, রাজবাড়ী শহর রক্ষার জন্য পদ্মা নদীর ডান তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের কাজ হয়েছে সাত কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া শহর রক্ষা প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০২১ বছরের ৩১ মে। এতে ব্যয় হয় ৩৭৬ কোটি টাকা। কাজটি সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড।