Dhaka ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৭টির মধ্যে চলাচল করছে ৪টি বগি নিয়ে

গোয়ালন্দ ঘাট-খুলনা রুটে চলাচলকারী নকশী কাঁথা মেইল ট্রেনে বগি সংকটে চরম ভোগান্তি যাত্রীদের

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২২
  • / ১১৩২ জন সংবাদটি পড়েছেন

গোয়ালন্দ ঘাট-খুলনা রুটে চলাচলকারী নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনে বগি সংকটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। সাতটি বগির মধ্যে চলাচল করছে চারটি বগি নিয়ে। প্রায় এক মাস যাবৎ এ সমস্যা বিরাজ করছে। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, কারখানা থেকে সময় মতো বগি সরবরাহ করতে না পারায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

রাজবাড়ী রেলওয়ে সূত্র জানায়, গোয়ালন্দ ঘাট-খুলনা রুটে চলাচলকারী নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনটি খুলনা থেকে ছেড়ে কুষ্টিয়া হয়ে প্রতিদিন রাজবাড়ী এসে পৌছানোর সময় সকাল পৌনে ১০টায়। রাজবাড়ী থেকে গোয়ালন্দ ঘাট গিয়ে আবার রাজবাড়ী ফিরে আসে দুপুর ২টায়। কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে ছেড়ে যায় খুলনা অভিমুুখে। প্রতিটি স্টেশনেই ট্রেনটি থামে। ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় ট্রেনটি অনেক জনপ্রিয়। বেসরকারি কোম্পানী মেসার্স এনএল ট্রেডিংয়ের তত্ত¡াবধানে পরিচালিত হয় ট্রেনটি। এই ট্রেনে সাতটি বগি নিয়ে চলাচল করার কথা থাকলেও বর্তমানে চলাচল করছে চারটি বগি নিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে একটি পাওয়ার কার, লাগেজ রুম এবং গার্ড রুম। প্রতিটি বগিতে সাধারণত ১০৪টি আসন থাকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মেইল ট্রেনে বগি কম থাকায় যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে নারী শিশুদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রচন্ড গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ট্রেনের ভেতরে জায়গা না পেয়ে যাত্রীরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনের সামনে বসে, ছাদে উঠে গন্তবে পৌছাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রেল কর্মকর্তা জানান, কয়েকদিন আগে তার তিনজন নিকটাত্মীয় রাজবাড়ী স্টেশন থেকে মেইল ট্রেনে গন্তব্যে যাবার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রেন আসার পর এত ভিড় ছিল যে দরজা দিয়ে উঠতে পারেনি। ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে যাওয়ায় তাদের একজনকে জানালা দিয়ে ঠেলে ওঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ট্রেনটি রাজবাড়ী স্টেশনে এলে কথা হয় নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্বরত ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, বগি কম থাকায় তাদের নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। ট্রেনে অসম্ভব রকম ভিড় হয়। টিকিট কালেক্টরদের বগির ভেতরে ভিড় ঠেলে সব যাত্রীর কাছে পৌছানো কঠিন হয়ে পড়ে। বগি বাড়ানোর জন্য তাদের কোম্পানী রেলওয়ের কাছে কয়েকবার বলেছে বলে জানান তিনি।

 ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড মুহিবুল আলম জানান, এই ট্রেনে প্রচুর যাত্রীর চাপ। আগে আটটি বগি ছিল। এখন মাত্র চারটি। ট্রেনে ভিড় বেশি হওয়ায় যাত্রীদের ওঠানামা করতে সময় লাগে। যেকারণে কোনো কোনো স্টেশনে স্টপেজ এর অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। অনেক সময় যাত্রীরা গার্ডের কক্ষে চলে আসতে চায়। মাঝে মধ্যে যাত্রীদের আক্রমণের শিকারও হতে হয় বলে জানান তিনি।

রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার তন্ময় দত্ত জানান, এই ট্রেনটি খুলনা থেকে কন্টোল করে। এর বেইজ খুলনায়। এখানে কোনো সমস্যা হলে শুধু মেরামত করা যায়।

রাজবাড়ী রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (টিএক্সআর) হুমায়ুন কবীর জানান, ট্রেনটির বেইজ খুলনায়। বগি সংকটের বিষয়টি নিয়ে তিনি খুলনার সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছেন। সেখান থেকে তাকে জানানো হয়েছে; বগির সংকট রয়েছে। অনেকগুলো বগি কারখানায় মেরামতাধীন। কিন্তু তারা সময় মতো ডেলিভারি দিতে পারছে না। লোকোবলেরও সংকট রয়েছে। একারণে কবে এর সমাধান হবে তা বলা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী অঞ্চলের ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (ডিএমই) মমতাজুল ইসলাম বলেন, কোচ এই মুহূর্তে আমাদের হাতে একটিও অবশিষ্ট নেই। আমরা চেষ্টা করছি। কারখানা থেকে কোচ পাওয়া মাত্রই আমরা পূরণ করে দেব। আমাদের গাফিলতির জন্য কোথাও কোনো কোচ শর্ট নেই। কারখানায় লোকের সংকট রয়েছে। মালামালের সংকট রয়েছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

৭টির মধ্যে চলাচল করছে ৪টি বগি নিয়ে

গোয়ালন্দ ঘাট-খুলনা রুটে চলাচলকারী নকশী কাঁথা মেইল ট্রেনে বগি সংকটে চরম ভোগান্তি যাত্রীদের

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২২

গোয়ালন্দ ঘাট-খুলনা রুটে চলাচলকারী নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনে বগি সংকটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। সাতটি বগির মধ্যে চলাচল করছে চারটি বগি নিয়ে। প্রায় এক মাস যাবৎ এ সমস্যা বিরাজ করছে। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, কারখানা থেকে সময় মতো বগি সরবরাহ করতে না পারায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

রাজবাড়ী রেলওয়ে সূত্র জানায়, গোয়ালন্দ ঘাট-খুলনা রুটে চলাচলকারী নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনটি খুলনা থেকে ছেড়ে কুষ্টিয়া হয়ে প্রতিদিন রাজবাড়ী এসে পৌছানোর সময় সকাল পৌনে ১০টায়। রাজবাড়ী থেকে গোয়ালন্দ ঘাট গিয়ে আবার রাজবাড়ী ফিরে আসে দুপুর ২টায়। কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে ছেড়ে যায় খুলনা অভিমুুখে। প্রতিটি স্টেশনেই ট্রেনটি থামে। ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় ট্রেনটি অনেক জনপ্রিয়। বেসরকারি কোম্পানী মেসার্স এনএল ট্রেডিংয়ের তত্ত¡াবধানে পরিচালিত হয় ট্রেনটি। এই ট্রেনে সাতটি বগি নিয়ে চলাচল করার কথা থাকলেও বর্তমানে চলাচল করছে চারটি বগি নিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে একটি পাওয়ার কার, লাগেজ রুম এবং গার্ড রুম। প্রতিটি বগিতে সাধারণত ১০৪টি আসন থাকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মেইল ট্রেনে বগি কম থাকায় যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে নারী শিশুদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রচন্ড গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ট্রেনের ভেতরে জায়গা না পেয়ে যাত্রীরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনের সামনে বসে, ছাদে উঠে গন্তবে পৌছাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রেল কর্মকর্তা জানান, কয়েকদিন আগে তার তিনজন নিকটাত্মীয় রাজবাড়ী স্টেশন থেকে মেইল ট্রেনে গন্তব্যে যাবার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রেন আসার পর এত ভিড় ছিল যে দরজা দিয়ে উঠতে পারেনি। ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে যাওয়ায় তাদের একজনকে জানালা দিয়ে ঠেলে ওঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ট্রেনটি রাজবাড়ী স্টেশনে এলে কথা হয় নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্বরত ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, বগি কম থাকায় তাদের নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। ট্রেনে অসম্ভব রকম ভিড় হয়। টিকিট কালেক্টরদের বগির ভেতরে ভিড় ঠেলে সব যাত্রীর কাছে পৌছানো কঠিন হয়ে পড়ে। বগি বাড়ানোর জন্য তাদের কোম্পানী রেলওয়ের কাছে কয়েকবার বলেছে বলে জানান তিনি।

 ট্রেনের দায়িত্বরত গার্ড মুহিবুল আলম জানান, এই ট্রেনে প্রচুর যাত্রীর চাপ। আগে আটটি বগি ছিল। এখন মাত্র চারটি। ট্রেনে ভিড় বেশি হওয়ায় যাত্রীদের ওঠানামা করতে সময় লাগে। যেকারণে কোনো কোনো স্টেশনে স্টপেজ এর অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। অনেক সময় যাত্রীরা গার্ডের কক্ষে চলে আসতে চায়। মাঝে মধ্যে যাত্রীদের আক্রমণের শিকারও হতে হয় বলে জানান তিনি।

রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার তন্ময় দত্ত জানান, এই ট্রেনটি খুলনা থেকে কন্টোল করে। এর বেইজ খুলনায়। এখানে কোনো সমস্যা হলে শুধু মেরামত করা যায়।

রাজবাড়ী রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (টিএক্সআর) হুমায়ুন কবীর জানান, ট্রেনটির বেইজ খুলনায়। বগি সংকটের বিষয়টি নিয়ে তিনি খুলনার সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছেন। সেখান থেকে তাকে জানানো হয়েছে; বগির সংকট রয়েছে। অনেকগুলো বগি কারখানায় মেরামতাধীন। কিন্তু তারা সময় মতো ডেলিভারি দিতে পারছে না। লোকোবলেরও সংকট রয়েছে। একারণে কবে এর সমাধান হবে তা বলা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী অঞ্চলের ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (ডিএমই) মমতাজুল ইসলাম বলেন, কোচ এই মুহূর্তে আমাদের হাতে একটিও অবশিষ্ট নেই। আমরা চেষ্টা করছি। কারখানা থেকে কোচ পাওয়া মাত্রই আমরা পূরণ করে দেব। আমাদের গাফিলতির জন্য কোথাও কোনো কোচ শর্ট নেই। কারখানায় লোকের সংকট রয়েছে। মালামালের সংকট রয়েছে।