Dhaka ১১:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মার দশ মিনিটের তান্ডবে নিঃস্ব ৫ পরিবার

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৯:২৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১
  • / 236

জনতার আদালত অনলাইন ॥ গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় হঠাৎ করে পদ্মা ফের রুদ্রমূর্তি ধারন করেছে। মঙ্গলবার মাত্র ১০ মিনিটের তান্ডবে পদ্মাপাড়ের অন্তত ৫টি বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা চোখের নিমিশে পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। এসময় দ্রুততার সাথে আরো ৩৭টি পরিবারের বসতঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের অব্যবস্থাপনার কারণে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে একদিনে ৪২টি পরিবার গৃহহীন হয়ে অসহায় হয়ে পড়লো। পদ্মা পারের আরও শত শত স্থাপনা ও বাড়িঘর হুমকির মধ্যে রয়েছে। লঞ্চঘাটের এলাকায় কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হলেও সবচেয়ে ভাঙনপ্রবণ মজিদশেখের পাড়া এলাকায় কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন না করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে তাদের অভিমত।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মজিদ শেখের পাড়ায় ভাঙনের কারণে নদীপাড়ের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি সরানোর কাজে ব্যস্ত। কেউ ঘরের খুঁটি খুলছেন, কেউবা অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন ঘরের চাল। ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার গুলোর স্বজনরা তাদের ঘর সরাতে সাহায্য করছেন। চোখের সামনে একটু একটু করে পদ্মার হিংস্র থাবায় একে একে গ্রাস করছে বসতভিটা। দীর্ঘদিনেও স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবারের ভাঙনে পদ্মার অন্তত ১৫০ মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

দৌলতদিয়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ রহমান মন্ডল জানান, দ্রুত নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী ববস্থা গ্রহন না করা হলে আগামীতে আর দৌলতদিয়া ইউনিয়নের অস্তিত্ব থাকবে না। চরম দুশ্চিন্তা আর হতাশায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এ এলাকার মানুষ।

এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফা মুন্সী জানান, নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ে ধরনা দিয়ে আসছি। দুঃভাগ্য আমার এলাকার জনগণের জন্য আমি তেমন কিছুই করতে পারছি না। চোখের সামনে সচ্ছল পরিবারগুলো অসহায় হয়ে পড়ছে। তিনি আরো বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এই এলাকায় নদী শাসনের কাজ না করা হলে মানচিত্র থেকে হয়ত খুব তারাতারিই দৌলতদিয়ার নাম মুছে যাবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজিজুল হক খান মামুন বলেন, হঠাৎ করে পদ্মায় নদীর দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ ৪২টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভাঙনের খবর পেয়ে প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরবর্তীতে তাদের ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে তিনি জানান।

ভাঙন পরিদর্শনে এসে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগম বলেন, হঠাৎ করে লঞ্চঘাট ও ১নং ফেরিঘাট এলাকার মাঝামাঝি তীব্র ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন রোধে জরুরী ভিত্তিতে কাজ করা দরকার। এখানে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যপারে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব মহাদ্বয়ের সাথে এবং বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবো।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

পদ্মার দশ মিনিটের তান্ডবে নিঃস্ব ৫ পরিবার

প্রকাশের সময় : ০৯:২৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥ গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় হঠাৎ করে পদ্মা ফের রুদ্রমূর্তি ধারন করেছে। মঙ্গলবার মাত্র ১০ মিনিটের তান্ডবে পদ্মাপাড়ের অন্তত ৫টি বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা চোখের নিমিশে পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। এসময় দ্রুততার সাথে আরো ৩৭টি পরিবারের বসতঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের অব্যবস্থাপনার কারণে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে একদিনে ৪২টি পরিবার গৃহহীন হয়ে অসহায় হয়ে পড়লো। পদ্মা পারের আরও শত শত স্থাপনা ও বাড়িঘর হুমকির মধ্যে রয়েছে। লঞ্চঘাটের এলাকায় কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হলেও সবচেয়ে ভাঙনপ্রবণ মজিদশেখের পাড়া এলাকায় কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন না করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে তাদের অভিমত।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মজিদ শেখের পাড়ায় ভাঙনের কারণে নদীপাড়ের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি সরানোর কাজে ব্যস্ত। কেউ ঘরের খুঁটি খুলছেন, কেউবা অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন ঘরের চাল। ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার গুলোর স্বজনরা তাদের ঘর সরাতে সাহায্য করছেন। চোখের সামনে একটু একটু করে পদ্মার হিংস্র থাবায় একে একে গ্রাস করছে বসতভিটা। দীর্ঘদিনেও স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবারের ভাঙনে পদ্মার অন্তত ১৫০ মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

দৌলতদিয়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ রহমান মন্ডল জানান, দ্রুত নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী ববস্থা গ্রহন না করা হলে আগামীতে আর দৌলতদিয়া ইউনিয়নের অস্তিত্ব থাকবে না। চরম দুশ্চিন্তা আর হতাশায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এ এলাকার মানুষ।

এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফা মুন্সী জানান, নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ে ধরনা দিয়ে আসছি। দুঃভাগ্য আমার এলাকার জনগণের জন্য আমি তেমন কিছুই করতে পারছি না। চোখের সামনে সচ্ছল পরিবারগুলো অসহায় হয়ে পড়ছে। তিনি আরো বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এই এলাকায় নদী শাসনের কাজ না করা হলে মানচিত্র থেকে হয়ত খুব তারাতারিই দৌলতদিয়ার নাম মুছে যাবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজিজুল হক খান মামুন বলেন, হঠাৎ করে পদ্মায় নদীর দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ ৪২টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভাঙনের খবর পেয়ে প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরবর্তীতে তাদের ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে তিনি জানান।

ভাঙন পরিদর্শনে এসে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগম বলেন, হঠাৎ করে লঞ্চঘাট ও ১নং ফেরিঘাট এলাকার মাঝামাঝি তীব্র ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন রোধে জরুরী ভিত্তিতে কাজ করা দরকার। এখানে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যপারে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব মহাদ্বয়ের সাথে এবং বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবো।