অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে প্রথম অবস্থানে রাজবাড়ী জেলা
- প্রকাশের সময় : ০৮:২৭:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ১৫৬০ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে দেশের মধ্যে প্রথম অবস্থানে রাজবাড়ী জেলা। দেশের অনেক বড় জেলাকে অতিক্রম করে রাজবাড়ী জেলার জন্য এ অর্জন নেহায়েৎ কম নয় বলেই মনে করছেন অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমের সাথে জড়িতরা। অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমের ব্যাপ্তি আরও বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের কর্মকর্তা অভিজিৎ সাহা।
দেশের অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে নিয়মিত মনিটরিং করা শিক্ষক বাতায়নের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী গত ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজবাড়ী জেলায় অনলাইন ক্লাস হয়েছে মোট পাঁচ হাজার ৫৫৬টি। তিন হাজার ৭৭০টি ক্লাস নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ফেনী জেলা। তৃতীয় অবস্থানে লালমনিরহাট জেলায় মোট ক্লঅস হয়েছে তিন হাজার ৪৯৮টি।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। স্থবির হয়ে পড়ে শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠদান। রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক প্রদ্যুৎ কুমার দাস উদ্যোগি হয়ে ৯ মে থেকে চালু করেন অনলাইন ক্লাস। বর্তমানে জেলার বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পাঠদান করা হচ্ছে। তবে সকল শিক্ষার্থীই যাতে ক্লাসগুলো দেখার সুযোগ পায় এজন্য রাজবাড়ী কেবল নেটওয়ার্কে ক্লাসগুলো প্রচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনলাইন ক্লাসগুলো প্রতিদিন কেবল নেটওয়ার্কে প্রচারিত হচ্ছে।
অনলাইন ক্লাস শুরুর অন্যতম উদ্যোক্তা রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ও জেলা অ্যম্বাসেডার প্রদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, রাজবাড়ী জেলা অনলাইন ক্লাস নেওয়ার সংখ্যার দিক থেকে সারা দেশের মধ্যে প্রথম হয়েছে। ছোট্ট রাজবাড়ী জেলার জন্য এ অর্জন অনেক বড় প্রাপ্তি। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আমাদেরকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছেন। তাদের আন্তরিকতা, উৎসাহ, জেলা অ্যাম্বাসেডরদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকদের প্রচেষ্টা, জেলা শিক্ষা অফিসার এবং পাঁচ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সমন্বিত কার্যক্রমের ফসল এটি। এ ক্ষেত্রে রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্লাসগুলো একটি বড় ভূমিকা রেখেছে।
রাজবাড়ী জেলা শিক্ষা অফিসার সামসুন্নাহার বেগম জানান, করোনা কালীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অনেক ব্যাঘাত ঘটেছে। একারণে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনলাইন ক্লাসে রাজবাড়ী জেলা সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। সারাদেশের অনলাইন ক্লাসগুলো এটুআই কাউন্ট করে। শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই এই ফল অর্জিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম এসিস্ট্যান্ট অভিজিৎ সাহা বলেন, শিক্ষকদের ওয়েবপোর্টাল শিক্ষক বাতায়নে শিক্ষকরা যে তথ্য দেন তার উপর ভিত্তি করে সংখ্যা বিবেচনায় রাজবাড়ী জেলা বর্তমানে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। এটা অবশ্যই রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন, জেলা শিক্ষা অফিস এবং জেলা অ্যাম্বাসেডরদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। শুরু থেকেই তাদের উদ্যম এবং গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই রাজবাড়ী এ অবস্থানে পৌছেছে। রাজবাড়ীর বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে আমরা ভালো একটি চিত্র দেখতে পাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে সরকার থেকে নির্দেশনা রয়েছে, জুম এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের সাথে যুক্ত করার। বার্ষিক পরীক্ষা কোন পদ্ধতিতে কীভাবে নেয়া যায় তারও পরিকল্পনা চলছে। সরকার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বিষয়টি জানানো হবে। এছাড়া শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। শিক্ষকদের কোন কোন প্রশিক্ষণ জরুরী তা নিয়ে এটুআইয়ের পাশাপাশি মাউশি পরিকল্পনা করছে। সামনে অনলাইন ক্লাসের ব্যাপ্তি আরও বাড়বে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে রাজবাড়ী সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এতে আমরা ভীষণ খুশী। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল এটি। যার যার জায়গা থেকে তাদের দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করায় এ ফল অর্জিত হয়েছে। এখন আমরা মান এর উপর জোর দিচ্ছি। সেই সাথে মডেল টেস্ট নেয়া যায় কীনা তারও চিন্তা ভাবনা চলছে।