করোনা আক্রান্ত তপন দুপুরে বাড়ি থেকে চলে যান, বিকেলে ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা
- প্রকাশের সময় : ০৮:২১:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০
- / ৩৪৬৬ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ করোনায় আক্রান্তের খবর শুনে হতাশায় মুহ্যমান ছিলেন তপন দত্ত(৪৫)। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সদস্যরা তার বাড়ি পরিদর্শন করে আসার পর তিনি বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে চলে যান। বিকেলে ছাদ থেকে লাফিয়ে করেন আত্মহত্যা। ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী পৌর এলাকার বিনোদপুর গ্রামে। তিনি একই গ্রামের মৃত নিত্যলাল দত্তের ছেলে। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, বুধবার ঢাকা আইসিডিআর থেকে পাঠানো রিপোর্টে রাজবাড়ীর তিনজন করোনা পজিটিভ আসে। এর মধ্যে তপন দত্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল তার বাড়ি পরিদর্শন করে ফিরে আসে। ওই সময় তপন দত্ত বাড়িতেই অবস্থান করছিলো। বিকেল পাঁচটার দিকে স্বাস্থ্য বিভাগের অপর একটি দল এবং রাজবাড়ী সদর থানার পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পায়নি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধি দল ঘুরে আসার পরই সে বাড়ি থেকে চলে যায়। বিকেলে স্বাস্থ্য বিভাগের সদস্যরা দ্বিতীয় দফায় তপন দত্তের বাড়িতে গিয়ে তাকে নরা পেয়ে রাত ১০টার মধ্যে তপন দত্তকে হাজির হতে বলে যায়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ভাজনচালা মোড়ে নির্র্মাণাধীন একটি ভবনের তিন তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে তপন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তপনের লাশ একটি ভ্যানের উপরে রাখা। তার স্ত্রীর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে আকাশ। তার ১৩ বছর বয়সী অবুঝ শিশুও কাঁদছে অঝোরে। তপনের লাশের কাছে তার স্ত্রী ও শ্বশুর ছাড়া আরও কাউকেই দেখা যায়নি।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. নুরুল ইসলাম জানান, করোনায় আক্রন্ত তপন দত্ত কার কার সাথে মিশেছে। কাদের সংস্পর্শে গিয়েছে এসব জানার জন্য এবং তাদের নমুনা সংগ্রহের জন্য বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে স্বাস্থ্য বিভাগের টিম তার বাড়িতে গিয়েছিল। বিকেলে গিয়েছিল তাকে হাসপাতালে আনতে। কিন্তু তার আগেই সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
রাজবাড়ী সদর থানার এসআই আমিনুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তপন দত্তকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন তাকে বাড়ি থেকে আনতে যাবার আগেই সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে সে ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে। নিহতের লাশ বর্তমানে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে রয়েছে। পরবর্তী আ্ইনী কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।