‘তথ্য গোপন’ মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত, তবে নেই কোনও শাস্তি
- প্রকাশের সময় : ১১:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
- / 5
‘অর্থের বিনিময়ে তথ্য গোপন’ করার মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে বিচারক তাকে কোনও শাস্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
মূলত রায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও তার ওপর কোনও রকম জেল-জরিমানার দণ্ড না থাকায় তিনি কোনও সমস্যা ছাড়াই হোয়াইট হাউসে ফিরে যেতে পারবেন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও ভয়েস অব আমেরিকা।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ট্রাম্পকে ৩৪টি গুরুতর অপরাধের অভিযোগে প্রায় দুই মাস ধরে বিচার করা হয় এবং প্রত্যেকটিতে বিচারকরা তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করেন। তবে এরপরও ভোটারদের কাছ থেকে ট্রাম্প কোনও ধরনের ক্ষতির শিকার হননি এবং তারাই ভোট দিয়ে তাকে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত করেছেন।
নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের বিচারক হুয়ান এম মার্চান ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতাকে চার বছর মেয়াদ পর্যন্ত কারাদণ্ড দিতে পারতেন। তা না করে তিনি বিতর্কিত সাংবিধানিক বিষয়গুলো এড়িয়ে কার্যত মামলাটির পরিসমাপ্তি টানেন। তবে ট্রাম্প হবেন এমন একজন প্রেসিডেন্ট যিনি অপরাধ করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত।
মার্চান বলেন, যে কোনও আসামির ক্ষেত্রে শাস্তি আরোপ করার আগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করতে হয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প যে আইনি সুরক্ষা পাবেন, “সেই বিষয়টি অন্য সব বিষয়কে ছাড়িয়ে গেছে”।
অন্যদিকে ট্রাম্প তার ফ্লোরিডার বাড়ি থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন। আদালতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তার অপরাধের বিচার ও শাস্তি “অত্যন্ত ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতা”। তিনি জোর দিয়ে দাবি করেন, তিনি কোনও অপরাধ করেননি।
ট্রাম্প বলেন, “এটি হচ্ছে রাজনৈতিক হয়রানি। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য এটা করা হয়েছিল যাতে আমি নির্বাচনে হেরে যাই এবং দেখা গেল, সেই কৌশল কাজে লাগেনি।”
ট্রাম্প এই মামলাটিকে “সরকারের অস্ত্রীকরণ” এবং “নিউইয়র্কের জন্য অস্বস্তিকর” বলেও অভিহিত করেছেন। রিপাবলিকান ট্রাম্প হচ্ছেন এমন প্রথম ব্যক্তি যিনি গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েও প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, মুখ বন্ধ রাখতে ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে নীল ছবির এক তারকাকে ঘুষ দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সেই তথ্য গোপন করায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এতে গত বছরের মে মাসে তাকে অভিযুক্তও করা হয়।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় স্টর্মি ড্যানিয়েলস অভিযোগ করেছিলেন, ২০০৬ সালে নেভাডা অঙ্গরাজ্যে একটি হোটেলে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেন ট্রাম্প। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ব্যক্তিগত আইনজীবীর মাধ্যমে ২০১৬ সালে তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষ দেন তিনি। সে সময় ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। স্টর্মিকে ঘুষ দেওয়ার তথ্যটি নিজের ব্যবসায়িক নথিতেও গোপন করেন ট্রাম্প।
তবে ট্রাম্প এসব অভিযোগ সবসময় অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, জো বাইডেন ও তার প্রশাসন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে। এমনকি দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এ মামলা তুলে নিতে বিচারকের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে তার সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করা হয়।