Dhaka ০২:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মজজিদের টাকা আত্মসাতের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে মোবাইলে হুমকির অভিযোগ

গোয়ালন্দ প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৪২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১০৬১ জন সংবাদটি পড়েছেন

গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল মোল্লার বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের সংবাদ প্রকাশ করায় পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দৈনিক কালবেলা গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিনিধি রাকিবুজ্জামান রাকিবকে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ফোনে বলা হয় জামাল মোল্লার বিরুদ্ধে কেন সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।সংবাদ উঠিয়ে না দিলে বড় ধরনের বিপদ হবে।

জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর কালবেলা পত্রিকার অনলাইনে গোয়ালন্দে ইউ,পি সদস্যর বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শিরোনামে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া  ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের বিরুদ্ধে মসজিদের নামে সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উপজেলার দৌলতদিয়া  ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জামাল মোল্লা এই মসজিদ কমিটির সভাপতি।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত বলেন, মসজিদের একাউন্ট সভাপতির নামে। তিনি কাজের সময় দুই লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয়েছে যে মসজিদে অনুদান হিসেবে ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা এসেছে। বাকি টাকার হিসাব সভাপতি দিচ্ছে না।

মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আব্দুর রহিম বাবু বলেন, আমরা ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা পাওয়ার কথা শুনেছি। তবে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল মোল্লা আমাদেরকে ২ লক্ষ টাকার হিসাব মসজিদে দিয়েছে বাকী টাকার কথা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল ও সদস্য জামাল মোল্লা বলেছেন টাকা নয় মেম্বারদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য জামাল মোল্লা বলেন, মসজিদ উন্নয়ন বাবদ ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। দুই লক্ষ টাকা মসজিদের উন্নয়ন বাবদ খরচ করলেও বাকি টাকা তার কাছে ছিল। কিন্তু তার বাড়িতে ডাকাতি হলে ওই টাকা সহ ডাকাতরা নিয়ে গেছে। পুলিশ কয়েকজন আসামিকে আটক করেছে বাকী আসামি আটক হলে এবং সেখান থেকে টাকা পেলে তিনি টাকা ফেরত দিবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতদিয়াইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল বলেন, এটা উপজেলা ইউএনও স্যারের মাধ্যমে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে টাকা গেছে তারাই খরচ করেছে। এর বেশি আমি কিছু জানি না।

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাইদ মন্ডল বলেন, টিআর প্রকল্পের ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা দেওয়ার পর আমরা সেখানে গিয়ে ইমাম সাহেব সহ মসজিদ কমিটির সবাইকে অবহিত করেছি। তাছাড়া টাকা দেওয়া হয়েছিল মসজিদের ছাদ ও মেঝে নির্মানের জন্য সেটা নির্মান করা হয়েছে। আমরা আমাদের কাজ বুঝে পেয়েছি এটা অনেক টাকার কাজ আমরা এই প্রকল্প থেকে অল্প কিছু দিয়েছি মাত্র। তবে সে মসজিদ কমিটিকে সম্পূর্ণ টাকা বুঝে দিচ্ছে না এই বিষয়টি আমরা শুনেছি।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র কালবেলাকে বলেন, মসজিদ উন্নয়নের টাকা নয় ছয় করার কোন সূযোগ নেই। আমি পিআইওর সাথে কথা বলে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

গত মঙ্গলবার রাত ১০ টায় রাকিবুজ্জামান রাকিব কে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ওই রাতেই কালবেলা প্রতিনিধি আমাকে ফোন দিয়ে  জানিয়েছে।  যে নাম্বার টি ব্যবহার করেছে। সেই মোবাইল নাম্বারটি আমাদের গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের কারো নয়। এটি প্রতারক চক্রের কাজ। ৩০ অক্টোবর গোয়ালন্দ ঘাট থানা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্ত অনুযায়ী দ্রুত আইন গত ব্যাবস্থা নেয় হবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, বিষয়টি আমরা আমলে নিয়েছি। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

মজজিদের টাকা আত্মসাতের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে মোবাইলে হুমকির অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০৫:৪২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল মোল্লার বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের সংবাদ প্রকাশ করায় পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দৈনিক কালবেলা গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিনিধি রাকিবুজ্জামান রাকিবকে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ফোনে বলা হয় জামাল মোল্লার বিরুদ্ধে কেন সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।সংবাদ উঠিয়ে না দিলে বড় ধরনের বিপদ হবে।

জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর কালবেলা পত্রিকার অনলাইনে গোয়ালন্দে ইউ,পি সদস্যর বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শিরোনামে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া  ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের বিরুদ্ধে মসজিদের নামে সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উপজেলার দৌলতদিয়া  ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জামাল মোল্লা এই মসজিদ কমিটির সভাপতি।

মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত বলেন, মসজিদের একাউন্ট সভাপতির নামে। তিনি কাজের সময় দুই লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয়েছে যে মসজিদে অনুদান হিসেবে ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা এসেছে। বাকি টাকার হিসাব সভাপতি দিচ্ছে না।

মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আব্দুর রহিম বাবু বলেন, আমরা ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা পাওয়ার কথা শুনেছি। তবে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল মোল্লা আমাদেরকে ২ লক্ষ টাকার হিসাব মসজিদে দিয়েছে বাকী টাকার কথা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল ও সদস্য জামাল মোল্লা বলেছেন টাকা নয় মেম্বারদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য জামাল মোল্লা বলেন, মসজিদ উন্নয়ন বাবদ ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। দুই লক্ষ টাকা মসজিদের উন্নয়ন বাবদ খরচ করলেও বাকি টাকা তার কাছে ছিল। কিন্তু তার বাড়িতে ডাকাতি হলে ওই টাকা সহ ডাকাতরা নিয়ে গেছে। পুলিশ কয়েকজন আসামিকে আটক করেছে বাকী আসামি আটক হলে এবং সেখান থেকে টাকা পেলে তিনি টাকা ফেরত দিবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতদিয়াইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল বলেন, এটা উপজেলা ইউএনও স্যারের মাধ্যমে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে টাকা গেছে তারাই খরচ করেছে। এর বেশি আমি কিছু জানি না।

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাইদ মন্ডল বলেন, টিআর প্রকল্পের ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা দেওয়ার পর আমরা সেখানে গিয়ে ইমাম সাহেব সহ মসজিদ কমিটির সবাইকে অবহিত করেছি। তাছাড়া টাকা দেওয়া হয়েছিল মসজিদের ছাদ ও মেঝে নির্মানের জন্য সেটা নির্মান করা হয়েছে। আমরা আমাদের কাজ বুঝে পেয়েছি এটা অনেক টাকার কাজ আমরা এই প্রকল্প থেকে অল্প কিছু দিয়েছি মাত্র। তবে সে মসজিদ কমিটিকে সম্পূর্ণ টাকা বুঝে দিচ্ছে না এই বিষয়টি আমরা শুনেছি।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র কালবেলাকে বলেন, মসজিদ উন্নয়নের টাকা নয় ছয় করার কোন সূযোগ নেই। আমি পিআইওর সাথে কথা বলে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

গত মঙ্গলবার রাত ১০ টায় রাকিবুজ্জামান রাকিব কে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ওই রাতেই কালবেলা প্রতিনিধি আমাকে ফোন দিয়ে  জানিয়েছে।  যে নাম্বার টি ব্যবহার করেছে। সেই মোবাইল নাম্বারটি আমাদের গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের কারো নয়। এটি প্রতারক চক্রের কাজ। ৩০ অক্টোবর গোয়ালন্দ ঘাট থানা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্ত অনুযায়ী দ্রুত আইন গত ব্যাবস্থা নেয় হবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, বিষয়টি আমরা আমলে নিয়েছি। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।