একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি
আবার বন্ধ রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে বাস চলাচল \ ভোগান্তি যাত্রীদের
- প্রকাশের সময় : ০৯:০৩:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ অক্টোবর ২০২৩
- / ১১৪৫ জন সংবাদটি পড়েছেন
একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সাথে দ্ব›েদ্বর জের ধরে রাজবাড়ী থেকে ঢাকা রুটে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ঢাকাগামী যাত্রীরা। গত ১৬ জুন থেকে এ পর্যন্ত তিনবার ঘটলো একই ঘটনা। এ দায় কার তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে? রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রæপ বলছে, রাজবাড়ীর উপর দিয়ে দুটির বেশি বাস চালানোর কথা থাকলেও তারা বেশি ট্রিপ চালাচ্ছে। গোল্ডেন লাইন কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের সিদ্ধান্তানুযায়ী বাস চালাচ্ছিলেন।
জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রæপের লোকেরা রাজবাড়ীর মুরগীর ফার্ম এলাকায় গোল্ডেন লাইনের দুটি বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে খালি বাস ঢাকা ফেরত পাঠায়। এর জের ধরে ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনালে রোববার সন্ধ্যায় গোল্ডেন লাইন পরিবহনের শ্রমিকেরা রাজবাড়ীর সকল বাস কাউন্টার বন্ধ করে দেয়। সেই সাথে তারা ঘোষণা দেয়, রাজবাড়ীর কোন বাস ঢাকায় আসবে না আবার ঢাকা থেকেও কোন বাস রাজবাড়ী যাবে না। যেকারণে সোমবার সকাল থেকে রাজবাড়ীর সাথে ঢাকার সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ থাকার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। রাজবাড়ী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে কোনো বাস চলাচল করেনা। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া হয়ে ঢাকার গাবতলী যায় রাজবাড়ীর বাস। ঢাকাগামী যাত্রীদের তিন দফা ভেঙে পৌছাতে হচ্ছে গন্তব্যে।
জানতে চাইলে রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রæপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক লিটন বলেন, বেশ কয়েকবার তারা ঢাকার বাস মালিকদের সাথে বসেছেন, আলাপ আলোচনা করেছেন। আগে দিগন্ত নিয়ে ঝামেলা ছিল। পড়ে যুক্ত হয় গোল্ডেন লাইন। তারা আমাদের কাছে দুই ট্রিপ চেয়েছিল। তাতে রাজী হয়েছি। রোববার হুট করে তারা (গোল্ডেন লাইন কর্তৃপক্ষ) গাবতলীতে রাজবাড়ীর কাউন্টারে গিয়ে বলেছে, গোল্ডেন লাইন চার ট্রিপের বেশি চলবে। রাজবাড়ী থেকে বাস ঠেকালে তোমরা কাউন্টার খুলবে না। আমরাও যাবোনা, তোমরাও এসো না। রাজবাড়ীতে গোল্ডেন লাইনের বাস চলাচলে বাধা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান, রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে ১০১টি ট্রিপ রাজবাড়ীর উপর দিয়ে যাতায়াত করে। এর মধ্যে রাজবাড়ীর গাড়ি আছে মাত্র ৫৩টি। বাকীগুলো রাজবাড়ীর বাইরের। এ অবস্থা চলতে থাকলে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে। আমরা বাস চালাতে চাই। কিন্তু আমাদের কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়ায় চালাতে পারছি না। অতি দ্রæত এর সমাধান না হলে তারা পরিবহন ধর্মঘটসহ বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন।
এ বিষয়ে গোল্ডেন লাইনের ম্যানেজার রেজাউল করিম বাচ্চু বলেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশন এবং ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়, গোল্ডেন লাইনের দুটি গাড়ি গাবতলী থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া হয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে রাজবাড়ী হয়ে। ওই গাড়ি দুটি বিকেলে গাবতর্লীর উদ্দেশ্যে ফিরে আসবে একই রুট দিয়ে। আবার কুষ্টিয়া থেকে গাবতলীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দুটি গাড়ি বিকেলে একই রুট ব্যবহার করে কুষ্টিয়া ফিরে যাবে। সিদ্ধান্তানুুযায়ী গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে তারা বাস চালানো শুরু করেন। দুটি গাড়ি ঠিকভাবে চলাচল করলেও তৃতীয় গাড়িটিকে তারা আটকে দেয়। স্টাফদের গালিগালাজ করে যাত্রীদের নামিয়ে খালি বাস ঢাকা পাঠায়। পরের দিনও একই ঘটনা ঘটায়। তাদের মালিক বিষয়টি জানার পর রাজবাড়ীর উপর দিয়ে বাস চালাতে নিষেধ করেন। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে ঢাকার বাস মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতৃবৃন্দ গাবতলীতে রাজবাড়ীর বাস কাউন্টারগুলোর ম্যানেজারদের ডেকে সাফ জানিয়ে দেন, রাজবাড়ীর উপর দিয়ে গোল্ডেন লাইনের চারটি বাস চলবে। এতে বাধা দিলে তারা নিজেরাই যেন সব কাউন্টার বন্ধ করে দেয়। সে অনুযায়ী রোববার আবার বাস চালানো শুরু করি। রোববার বিকেলে রাজবাড়ীর বাস মালিক গ্রæপ কর্তৃপক্ষ বাস থামিয়ে শ্রমিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে ও খালি বাস ফেরত পাঠায়। তিনি জানান, তারা নিয়ম মাফিক রুট পারমিট নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। রাজবাড়ী থেকে কোনো যাত্রীও তুলছেন না। তাহলে কোথায় তাদের সমস্যা।
গত ১৬ জুন তারিখে একইভাবে রাজবাড়ীতে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাস চলাচলে বাধা দিলে ঢাকার গাবতলী থেকে রাজবাড়ীর কাউন্টারগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার জের ধরে দুদিন রাজবাড়ীী-ঢাকা রুটে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ ছিল। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়।
এছাড়া গত ১৭ জুন তারিখে রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রæপের লোকেরা শ্যামলী পরিবহনের বাস চলাচলে বাধা দিলে একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় একদিন বাস চলাচল বন্ধ থাকার পর রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়।
বারংবার একই ঘটনা ঘটায় এর দায় কার তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে?