জিআরপি থানায় হামলায় আহত ওসিসহ ৪ পুলিশ সদস্য
রাজবাড়ীতে বিএনপি-পুুলিশ সংঘর্ষ \ আহত ২০ \ আটক ১৫
- প্রকাশের সময় : ০৯:৩৩:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১১৪২ জন সংবাদটি পড়েছেন
রাজবাড়ীতে জেলা বিএনপির খৈয়ম গ্রæপের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মিছিল বের হলে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের পান্না চত্ত¡র এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বিএনপির অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে ১৫ জনকে। পুলিশের দাবি তাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। এ ঘটনার সূত্র ধরে রাজবাড়ী রেল স্টেশনে জিআরপি থানায় হামলা হয়েছে। এতে জিআরপি থানার ওসি সোমনাথ বসুসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের দুই পুলিশ সদস্যকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা বিএনপি (খৈয়ম গ্রæপ), জেলা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্র্শী সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মহিলা কলেজের পেছনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক সাংসদ আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের বাসভবন থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের পান্না চত্ত¡র ঘুরে ফেরার সময় পেছনের দিকে থাকা নেতাকর্মীদের সাথে হঠাৎই পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরাা পুলিশকে ধাওয়া দেয়। পরে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে বিএনপির অন্ততঃ ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিএনপির ১৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করে।
এদিকে এ ঘটনার পর কালুখালী, পাংশা থেকে আসা নেতাকর্মীরা মেইল ট্রেনের জন্য রাজবাড়ী রেলস্টেশনে অপেক্ষমান ছিল। ওই সময় তারা জিআরপি থানার পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে রাজবাড়ী জিআরপি থানার ওসি সোমনাথ বসু জানান, রেল স্টেশনে টিকিটবিহীন যাত্রীদের চেক করার সময় বিএনপির লোকজন তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। ওরা সংখ্যায় অনেক বেশি থাকায় তাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি। হামলায় তিনিসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তার চোখে আঘাত লেগেছে। অন্য তিনজন হলেন এসআই বিধান চন্দ্র, বকশি আনন্দ কুমার ও কনস্টেবল শারমীন আক্তার। এদের মধ্যে বিধান ও শারমীন বর্দমানে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক সাংসদ আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, আমি পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি পালন করবো। আমাদের শোভাযাত্রার বেঁধে দেওয়া স্থান পান্না চত্ত¡র ঘুরে আসার সময় পেছনের দিকে পুলিশ কী কারণে গুলি বর্ষণ করলো আমি বুঝতে পারলাম না। আমাদের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত শান্ত ছিল। আমরা মিছিলের অগ্রভাগে ছিলাম। মিছিলটা যখন শেষ পর্যায়ে তখন এ ঘটনা ঘটে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মত একটি দিবসে এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনকারী রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, বিএনপির মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তাদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি ছিল। মিছিল যখন শেষের দিকে তখন এই লাঠি দিয়ে উস্কানীমূলকভাবে পুলিশ সদস্যদের আঘাত করলে এ ঘটনা ঘটে।
রাজবাাড়ীর পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, শান্তি শৃঙ্খলার সাথে বিএনপিকে সমাবেশ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা নির্দেশনা অমান্য করে পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। যেকারণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়েছে। ১৫ জনকে আটক করে তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জিআরপি থানায় যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। জানমালের নিরাপত্তায় ব্যঘাত ঘটানো কিছুতেই বরদাস্ত করা হবেনা। সব ঘটনারই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহŸায়ক লিয়াকত ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ গ্রæপ শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করেছে। দুপুর ১২টায় জেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে বাজার প্রদক্ষিণ করে একই জায়গায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।