Dhaka ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
 নিখোঁজ কিশোর উদ্ধার

ফুটবল প্রেমে ঘর ছাড়ে আলামিন

গোয়ালন্দ প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০৮:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২
  • / ১২০৪ জন সংবাদটি পড়েছেন

ফুটবল খেলার প্রতি অসম্ভব ভালোলাগা থেকে ফুটবল প্রেমে আসক্ত হয়ে ঘর ছাড়ে কিশোর আলামিন। টানা ৫দিন নিখোঁজ থাকা অবস্থায় একটি প্রতারক চক্র পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করায় এ বিষয়ে চরম উদ্বিঘœতার সৃষ্টি হয়। অবশেষে গত রোববার বিকেলে রাজবাড়ী শহরের কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। আলামিন গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দুদুখান পাড়া গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে ও স্থানীয় দুদুখানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

আলামিন গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণে অংশ নিতে এসে আর বাড়িতে ফিরে যায়নি। আলামিন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার স্কুলের একজন শিক্ষক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। সেখানে আলামিনের মায়ের মোবাইল নম্বর উল্লেখ ছিল। বিষয়টি চোখে পড়ে একটি প্রতারক চক্রের। গত শুক্রবার বিকেলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা তার মায়ের ফোনে কল করে। অপহরণকারী পরিচয়ে ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। বিষয়টি গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশকে জানায় আলামিনের মা নার্গিস বেগম। এরপর আলামিনকে উদ্ধার করতে মাঠে নামে পুলিশ। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে রাজবাড়ী শহরের কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর আলামিন জানায়, ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমি ঘর ছাড়ি। আমি দেশ সেরা গোলকিপার হতে চাই। কিন্তু আমার বাবা-মা খেলার ব্যাপারে অনেক সময় বাঁধা দিত। তাই বাড়ি থেকে বের হয়ে আমি রাজবাড়ীতে চলে যাই। রাজবাড়ীতে আমি স্টেডিয়ামে ফুটবল প্র্যাকটিস শুরু করি, আর রাতে রেলস্টেশনে ঘুমাই। সেখানে এক ব্যক্তি তাকে খাবারও দিত।

আলামিনের মা নার্গিস বেগম জানান, আলামিনের ফুটবল খেলার প্রতি অসম্ভব ঝোক। স্কুল থেকে এসে খেয়ে-না খেয়েই খেলার মাঠে চলে যায়। তাই মাঝে মধ্যে একটু শাসন করতাম। এর জন্য আলামিন এমন কাজ করবে ভাবতে পারিনি। তিনি আরো জানান, দ্রæত মুক্তিপণ না না দিলে ছেলের লাশ ফেরত দেওয়া হবে বললেও কোন মায়ের মাথা কি ঠিক থাকে?

আলামিনের বাবা নুরুল ইসলাম জানান, আমার ছেলেটার পড়াশুনার চেয়ে ফুটবল খেলার প্রতি বেশী ঝোক। গোয়ালন্দসহ অনেক দুরে দুরে খেলতে চলে যায়। ফেরেও দেরি করে। এতে ওর লেখাপড়ার ক্ষতি হয়। তাই তাকে শুধু পাশের জামতলা মাঠেই খেলার অনুমিত দিয়েছিলাম। তারপরও সে গোয়ালন্দ, রাজবাড়ীতে খেলতে চলে যেত।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেখে একটি প্রতারক চক্র নিখোঁজ আলামিনের পরিবারের কাছ থেকে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে। নিখোঁজ আলামিনকে ফুটবল খেলার মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও প্রতারক চক্রকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

 নিখোঁজ কিশোর উদ্ধার

ফুটবল প্রেমে ঘর ছাড়ে আলামিন

প্রকাশের সময় : ০৯:০৮:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২

ফুটবল খেলার প্রতি অসম্ভব ভালোলাগা থেকে ফুটবল প্রেমে আসক্ত হয়ে ঘর ছাড়ে কিশোর আলামিন। টানা ৫দিন নিখোঁজ থাকা অবস্থায় একটি প্রতারক চক্র পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করায় এ বিষয়ে চরম উদ্বিঘœতার সৃষ্টি হয়। অবশেষে গত রোববার বিকেলে রাজবাড়ী শহরের কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। আলামিন গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দুদুখান পাড়া গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে ও স্থানীয় দুদুখানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

আলামিন গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণে অংশ নিতে এসে আর বাড়িতে ফিরে যায়নি। আলামিন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার স্কুলের একজন শিক্ষক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। সেখানে আলামিনের মায়ের মোবাইল নম্বর উল্লেখ ছিল। বিষয়টি চোখে পড়ে একটি প্রতারক চক্রের। গত শুক্রবার বিকেলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা তার মায়ের ফোনে কল করে। অপহরণকারী পরিচয়ে ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। বিষয়টি গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশকে জানায় আলামিনের মা নার্গিস বেগম। এরপর আলামিনকে উদ্ধার করতে মাঠে নামে পুলিশ। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে রাজবাড়ী শহরের কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর আলামিন জানায়, ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমি ঘর ছাড়ি। আমি দেশ সেরা গোলকিপার হতে চাই। কিন্তু আমার বাবা-মা খেলার ব্যাপারে অনেক সময় বাঁধা দিত। তাই বাড়ি থেকে বের হয়ে আমি রাজবাড়ীতে চলে যাই। রাজবাড়ীতে আমি স্টেডিয়ামে ফুটবল প্র্যাকটিস শুরু করি, আর রাতে রেলস্টেশনে ঘুমাই। সেখানে এক ব্যক্তি তাকে খাবারও দিত।

আলামিনের মা নার্গিস বেগম জানান, আলামিনের ফুটবল খেলার প্রতি অসম্ভব ঝোক। স্কুল থেকে এসে খেয়ে-না খেয়েই খেলার মাঠে চলে যায়। তাই মাঝে মধ্যে একটু শাসন করতাম। এর জন্য আলামিন এমন কাজ করবে ভাবতে পারিনি। তিনি আরো জানান, দ্রæত মুক্তিপণ না না দিলে ছেলের লাশ ফেরত দেওয়া হবে বললেও কোন মায়ের মাথা কি ঠিক থাকে?

আলামিনের বাবা নুরুল ইসলাম জানান, আমার ছেলেটার পড়াশুনার চেয়ে ফুটবল খেলার প্রতি বেশী ঝোক। গোয়ালন্দসহ অনেক দুরে দুরে খেলতে চলে যায়। ফেরেও দেরি করে। এতে ওর লেখাপড়ার ক্ষতি হয়। তাই তাকে শুধু পাশের জামতলা মাঠেই খেলার অনুমিত দিয়েছিলাম। তারপরও সে গোয়ালন্দ, রাজবাড়ীতে খেলতে চলে যেত।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেখে একটি প্রতারক চক্র নিখোঁজ আলামিনের পরিবারের কাছ থেকে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে। নিখোঁজ আলামিনকে ফুটবল খেলার মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও প্রতারক চক্রকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।