বালিয়াকান্দিতে ধর্ষণ মামলা তুলে না নিলে গৃহবধূকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে মারার হুমকির অভিযোগ
- প্রকাশের সময় : ০৭:২৭:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০২০
- / ১৪২২ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে গৃহবধূকে অপহরণের পর আটকে রেখে ধর্ষণের মামলা তুলে না নিলে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর আদালতে বুধবার আরও একটি মামলা করেছেন। মামলার আসামিরা হলো বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের জঙ্গল গ্রামের প্রহ্লাদ মন্ডল, বিদ্যুৎ মন্ডল, প্রদ্যুৎ মন্ডল, গ্রাম পুলিশ সদস্য কৃষ্ণ মন্ডল ও মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার দিলীপ বিশ্বাস। আসামি পক্ষ হুমকির অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।
গৃহবধূ জানান, তার স্বামী ও সন্তান নিয়ে উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের জঙ্গল গ্রামের একটি বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। ওই গ্রামের প্রহ্লাদ মন্ডল তাকে উত্যক্ত করতো ও কুপ্রস্তাব দিত। বিষয়টি তিনি প্রহ্লাদের পরিবারকে জানানোর পর সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত ৪ মার্চ বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে প্রহ্লাদ মন্ডল দলবল নিয়ে অন্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে অপহরণের পর অচেতন করে ফেলে। এরপর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। পরে অবস্থান বদলে অন্য আরেক জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানেও চলে তার উপর নির্যাতন। তাকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়া হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে। সেখান থেকে কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব ছিলনা। দুই মাস পর একদিন তিনি কৌশলে পালিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। পালিয়ে আসার সময় বুঝতে পারেন তাকে অপহরণ করে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় গত ১৬ জুলাই তারিখে প্রহ্লাদ মন্ডলকে প্রধান করে তিনজনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর আদালতে মামলা করেছিলেন।
গত মঙ্গলবার তার বাবার সাথে আত্মীয় বাড়ি থেকে ভ্যানযোগে নিজ বাড়ি ফেরার পথে বালিয়াকান্দি উপজেলার সমসপুর নামক স্থানে পৌছালে তাদের ভ্যানের গতিরোধ করে আসামিরা ওই মামলা তুলে নিতে বলে। সে রাজী না হওয়ায় তাকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয়। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
মামলার প্রধান আসামি প্রহ্লাদ মন্ডলের সাথে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে বহুবার কল দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। একারণে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
হুমকির ঘটনায় দায়ের মামলার অপর আসামি গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণ মন্ডল মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই গৃহবধূ আমাদের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। প্রহ্লাদ মন্ডল আমার ভাতিজা। বর্তমানে সে কোথায় আছে কেউ জানেনা। প্রথম মামলা দায়েরের পর বাদী আমাদের কাছে সাত লাখ টাকার বিনিময়ে আপোষ মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা তা মেনে নেয়ায় আবার মামলা দিয়েছে। আমরা তাকে কোনো হুমকি দেইনি।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, অপহরণের পর আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে মামলাটি গত ৩ আগস্ট তারিখে থানায় রেকর্ড হয়। এ মামলার ২ নং আসামি আকাশকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অপর দুজন পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা যায়নি। মামলার তদন্তকাজ এগিয়ে চলছে। পরের মামলাটি সম্পর্কে এখনও কিছু জানেন না তিনি।