যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা চেয়েও পাননি মোদি
- প্রকাশের সময় : ১২:০৩:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
- / 11
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে একটি পডকাস্ট তৈরি করেছেন জেরোধার সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিখিল কামাথ। যেখানে মোদি তার বিভিন্ন বিষয় জানিয়েছেন। তার আমলে ভারত যে কতটা এগিয়ে গেছে, সেই বিষয়টি কথা ও আচরণে বারবার সামনে নিয়ে এসেছেন তিনি। ভারত সম্পর্কে বিশ্বের ধারণা কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তা বলতে গিয়ে তাকে যুক্তরাষ্ট্র যে ৯ বছর ভিসা দেয়নি সে বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন তিনি।
তখন তিনি বলেছিলেন, এমন দিন আসবে যখন ভারতীয় ভিসার জন্য বিশ্ববাসী লাইন দিয়ে দাঁড়াবে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সম্প্রচারিত ওই পডকাস্টে তিনি বহু বিষয়ে কথা বলেছেন। একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র যে তাকে ভিসা দেয়নি, সে বিষয়টিও সামনে নিয়ে আসেন।
২০০২ সালে গুজরাটে দাঙ্গা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ২০০৫ সালে মোদির ভিসা বাতিল করে দেয়।
দীর্ঘ ৯ বছর তাকে আর ভিসা দেয়নি আমেরিকা।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০২ সালে গুজরাটের ওই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অনেক মানুষ নিহত হন। গুজরাটের দাঙ্গার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, এই দাঙ্গা ঠেকাতে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
সে অভিযোগে ২০০৫ সালে মোদির ভিসা বাতিল করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। গুজরাটের দাঙ্গায় সায় দেওয়ার অভিযোগ মোদির রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে মারাত্মকভাবে কালিমালিপ্ত করে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র তাকে আর ৯ বছর ভিসা দেয়নি।
তবে ২০১৪ সালে ভারতের নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে মোদি ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিলে ভিসা না দেওয়ার অবস্থান থেকে সরে আসে মার্কিন সরকার।
ভারতের সরকারপ্রধান হিসেবে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের এ-ওয়ান ভিসা দেওয়া হয়।
শুক্রবার মোদি বলেন, আমি যখন একটি রাজ্যের প্রধান ছিলাম, আমেরিকা আমাকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। সেদিন আমি একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। যেখানে আমি বলেছিলাম, একদিন বিশ্ববাসী ভারতীয় ভিসার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, আমি এই কথা ২০০৫ সালে বলেছিলাম। এখন ২০২৫ সাল। আমি দেখতে পাচ্ছি যে এখন ভারতের সময় এসেছে…। আমি প্রকাশ্যে বলতাম যে আপনি (প্রবাসী ভারতীয়রা) যদি ফিরে না আসেন, তাহলে আফসোস করবেন। কারণ বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেয়নি বিষয়টি স্বীকার করলেও ঠিক কী কারণে ভিসা দেয়নি সে বিষয়ে মুখ খোলেননি মোদি। তিনি বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হই। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় ছিলাম। সেই সময় ট্রেনে আগুন লাগার খবর পাই, মৃত্যুর খবর পাই। সঙ্গে সঙ্গে গোধরা গিয়েছিলাম আমি। সেখানে যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্যের সম্মুখীন হই। সব অনুভূতিই ছিল ভেতরে, কিন্তু যে পদে অধিষ্ঠিত ছিলাম, তার গুরুত্ব বিবেচনা করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছিল।
তিনি বলেন, গোধরা যাওয়ার পর দেখি সামনে তখন যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্য, মৃতদেহ ছড়িয়ে। কিন্তু স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দমন করতে হয়েছিল, সরিয়ে রাখতে হয়েছিল ব্যক্তিগত আবেগ। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গুজরাটে পাঁচটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল। পরে হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যাই। ভেতরে অসম্ভব অস্থিরতা ছিল, উৎকণ্ঠায় ছিলাম। আমার অন্যরকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল সে সময়।