দীর্ঘ দেড় মাস পর নতুন ডিসি পাচ্ছে রাজবাড়ী
- প্রকাশের সময় : ০৭:২০:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
- / ১০৩৫ জন সংবাদটি পড়েছেন
দীর্ঘ দেড় মাস জেলা প্রশাসক পদ শূন্য থাকার পর নতুন ডিসি পাচ্ছে রাজবাড়ী। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংযুক্ত উপসচিব মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞাকে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়েছে। এদিকে দীর্ঘ দেড় মাস কাল ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে আছে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক এবং জেলার দুটি উপজেলার ইউএনও না থাকায় ভারপ্রাপ্ত দিয়েই চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে কাজ। ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সিদ্ধার্থ ভৌমিক একই সাথে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব পালন করেন। পাংশার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও পালন করছেন চারটি।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রেষণ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মামুন শিবলী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানকে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ কর্তৃপক্ষের পরিচালক পদে বদলি করা হয়। একই তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব মুহাম্মদ ইব্রাহীম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে রাজবাড়ীসহ ৩৪ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে আরপিএটিসির উপপরিচালক মনোয়ারা বেগমকে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক পদে পদায়ন করা হয়। এর একদিন পরেই ১১ সেপ্টেম্বর তারিখে মনোয়ারা বেগমের নিয়োগ বাতিল করা হলেও বহাল থাকে আবু কায়সার খানের বদলি। যেকারণে ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখে তিনি রাজবাড়ী ত্যাগ করে তার নতুন কর্মস্থলে যোগ দেন। এখন পর্যন্ত রাজবাড়ীতে জেলা প্রশাসক পদে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সিদ্ধার্থ ভৌমিক। এদিকে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক পদটি শূন্য রয়েছে। গত ১৩ জুন তারিখে এ পদে দায়িত্বে থাকা আসাদুজ্জামান রিপন বদলি হয়ে যান। ওই পদে নতুন কাউকে নিয়োগ না দেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সিদ্ধার্থ ভৌমিক। জেলা পরিষদ ও পৌরসভা ভেঙে দেওয়ার পর থেকে জেলা পরিষদ ও পৌরসভার প্রশাসক পদের দায়িত্বও তিনি পালন করছেন। একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি দায়িত্ব পালন করেন সিদ্ধার্থ ভৌমিক।
চলতি অক্টোবর মাসে জেলা প্রশাসকের সম্ভাব্য ভ্রমণ কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, তিনটি দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন, জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত সভা রয়েছে ৩৫টি, ১৫টি অফিস ও প্রকল্প পরিদর্শন, চারটি গণশুনানীর কর্মসূচি রয়েছে। এর বাইরে জেলা প্রশাসকের দাপ্তরিক কার্যক্রমতো রয়েছেই।
এদিকে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদটি শূন্য রয়েছে ২৫ আগস্ট থেকে। ইউএনও পদে থাকা কাবেরী রায় বদলি হয়ে যাওয়ার পর ৩৪ তম বিসিএস কর্মকর্তা শাহাদাত হুসাইনকে সেখানে পদায়ন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেখানে এখন পর্যন্ত যোগদান করেননি। ২৫ আগস্টের পর থেকে সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) হাসিবুল হাসান ভারপ্রাপ্ত ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও হাসিবুল হাসান বলেন, যাকে ইউএনও হিসেবে পদায়ন করা হয়েছিল তিনি এখনও যোগ দেননি। ব্যক্তিগত কারণে হয়তো তিনি (শাহাদাত হুসেইন) যোগ দেননি। দুটো দায়িত্ব পালন করতে তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কারণ, এ উপজেলায় তিনি অনেকদিন ধরেই আছেন। সবকিছু তার নখদর্পণে রয়েছে। তবে, মাঝে মধ্যে রাতেও অফিস করতে হচ্ছে।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেই এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। গত ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে ইউএনও পদে থাকা জাফর সাদিক চৌধুরী বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। বর্তমানে ইউএনও পদে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মাসুদুর রহমান রুবেল। পৌর পরিষদ ভেঙে দেওয়ায় তিনি পাংশা পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করছেন। পদাধিকার বলে উপজেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বও তাকে পালন করতে হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মাসুদুর রহমান রুবেল বলেন, একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ চারটি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতিও বর্তমানে ইউএনও। কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জতো থাকবেই। অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। চার পাঁচটি দায়িত্ব পালন নির্ভুলভাবে করতে অনেক সময় লাগে। এই সময়টাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সময়টা আমাদের জন্য কম হয়ে গেছে। জনপ্রতিনিধিদের কাজও করতে হচ্ছে। নতুন নতুন কাজ। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যেও সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়েই চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রায় প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে।
রাজবাড়ীর ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, প্রশাসনিক কার্যক্রম তিনি চালিয়ে নিচ্ছেন। এর চেয়ে বেশি মন্তব্য করাটা আমার জন্য সমীচিন নয়।