বাসায় কাজ পেতে নিজ শিশু সন্তানকে খুন!
- প্রকাশের সময় : ০৭:২৫:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭
- / ১৪৫০ জন সংবাদটি পড়েছেন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘সন্তান কোলে দেখে বাসা বাড়িতে কেউ কাজ দিতে রাজী হচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে ১১ মাস বয়সী কন্যা সন্তান চাঁদনীকে গলা টিপে হত্যা করেছি।’ রাজবাড়ী আদালতে শুক্রবার বিকেলে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে এভাবেই সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেছে আলোমতি নামের এক গৃহবধূ। সে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের শাহমীরপুর গ্রামের হাসান মন্ডলের স্ত্রী ও একই গ্রামের হাকিম মোল্লার মেয়ে।
পাংশা থানা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে হাসানের সাথে আলোমতির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে আলোমতি অন্ত¡সত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে দেয়া হয়। তবে তখন তাদের কাবিননামা করা হয়নি। আলোমতির কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ২০১৬ সালে হাবাসপুর ম্যারেজ রেজিস্টার অফিসে গিয়ে তারা কাবিনামার মাধ্যমে পুনরায় বিয়ে করে। কিছুদিন পর জীবীকার তাগিদে হাসান ঢাকায় গিয়ে একটি রং ফ্যাক্টরীতে কাজ নেয়। পরে ঢাকার কদমতলীতে একটি বাসা ভাড়া করে স্ত্রী ও সন্তানকে নিজের কাছে নিয়ে যায়। গত ১৩ মার্চ তারিখে আলোমতির সাথে হাসানের তুমুল ঝগড়া হয়। এর জের ধরে পরদিন ১৪ মার্চ তারিখে হাসান কাজে চলে যাবার পর আলোমতি তার ১১ মাস বয়সী সন্তান চাঁদনীকে কোলে নিয়ে রেগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকেই সে নিখোঁজ। স্ত্রীকে অনেক খোঁজ করে না পেয়ে ১৫ মার্চ তারিখে হাসান কদমতলী থানায় একটি জিডি করেন। এদিকে দীর্ঘ প্রায় তিন মাস পর গত ২১ জুন তারিখে আলোমতির বাবা হাকিম মোল্লা রাজবাড়ী আদালতে একটি মামলা করেন।
পাংশা থানার এসআই মোশারফ হোসেন জানান, আদালতে মামলা দায়েরের পর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পাংশা থানার উপর অর্পণ করেন। গত ২০ জুলাই তারিখে আলোমতিকে তার বাবার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। সে গত ২৯জুন তারিখে তার বাবার বাড়িতে এসেছে বলে জানায়। তাকে গ্রেফতারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সবকিছু স্বীকার করে। শুক্রবার বিকেলে আলোমতিকে রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আরিফুজ্জামানের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে সে স্বীকার করে, ১১ মাস বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ খুঁজছিল। কিন্তু সন্তান কোলে থাকায় তাকে কেউ কাজ দেয়নি। এজন্য তার নিজ সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করে ঢাকার বড়বাজার এলাকার একটি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে। এরপর জুরাইনে শাজাহান নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে কাজ নিয়েছিল। সেখানে তিন মাস কাজ করার পর বাবার বাড়ি পাংশায় ফিরে আসে।
এসআই মোশারফ আরও জানান, আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীর পর আলোমতিকে ফরিদপুর সেড কাস্টডিতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ঢাকার কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হবে।