নতুন তালিকায় আছে তৃণমূল জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও বাংলাদেশ বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক দল
আসছে আরও ১৩ দল
- প্রকাশের সময় : ১১:৪৬:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / 22
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ১৩টি নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে। সংশ্লিষ্ট শাখা এ-সংক্রান্ত ফাইল নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করেছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন আলোচনা চলছে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ ও ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ তথা এ দুই প্ল্যাটফরমের নেতাদের উদ্যোগে ভিন্ন কোনো নামে রাজনৈতিক দল গঠন নিয়েও। ৩১ ডিসেম্বর ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশ শেষ করেই তারা এখন রাজনৈতিক দল গোছানোর কাজে মনোযোগ দিয়েছে। সূত্র জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে তারুণ্যনির্ভর এ নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে পারে।
সংশ্লিষ্টসূত্র জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছে ১৩টি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে ‘ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ (ন্যাপ বাংলাদেশ)’ নামের দলের নিবন্ধন আবেদন করেছেন নেয়াজ আহমদ খান। একই সঙ্গে ন্যাপ বাংলাদেশ অংশ বাদ দিয়ে শুধু ‘ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ’ নামেও আরেকটি নিবন্ধন আবেদন করেছেন নেয়াজ আহমদ খান।
এদিকে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি)’ নামে দলের নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছেন প্রকৌশলী আবু তৈয়ব আনসারী। ‘সমতা পার্টি’ নামে দলের নিবন্ধন আবেদন করেছেন হানিফ বাংলাদেশী। ‘বাংলাদেশ জাতীয় ভূমিহীন আন্দোলন’ নামে দলের নিবন্ধন আবেদন করেছেন মো. আলাল হোসেন খন্দকার। একই নামে তথা ‘বাংলাদেশ জাতীয় ভূমিহীন আন্দোলন’ (প্রস্তাবিত) নামে আরও একটি দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন মো. আবু তাহের খন্দকার। ‘বাংলাদেশ বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক দল’ নামে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছেন লায়ন নূর ইসলাম। ‘ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ (এনসিবি)’ দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন মো. ছাবের আহাম্মদ (কাজী ছাব্বীর)। মুহাম্মদ মুজ্জামেল হক ‘বাংলাদেশ মুসলিম পার্র্টি’ নামে দলের নিবন্ধন আবেদন করেছেন। ‘তৃণমূল জাতীয় পার্টি’র নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছেন এ এ এম শামীম। ‘বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি’র আবেদন করেছেন কে এম আবু হানিফ হৃদয়। প্রকৌশলী মো. ইনামুল হক আবেদন করেছেন ‘সর্বজন বিপ্লবী দল’-এর নিবন্ধন পেতে। ‘মৌলিক বাংলা’ নামে দলের নিবন্ধনের আবেদন করেছেন ছাদেক আহমেদ (সজীব)। এদিকে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ছয় মাস আগেই নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সুযোগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন আবেদন আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি দেবে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী সংস্কার কার্যক্রম শুরু হলেই নতুন দলের নিবন্ধন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে নতুন নির্বাচন কমিশনের। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নিয়ে সংস্কার কমিশনের কাছে অনেক প্রস্তাব এসেছে। অনেকেই দলের নিবন্ধন কার্যক্রম সহজ করার প্রস্তাব দিয়েছে। বিশেষ করে বিগত সময়ের মতো কিংস পার্টি যাতে নিবন্ধন তালিকায় না থাকে সে বিষয়েও প্রস্তাব এসেছে। আবার অনেক রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনের বাতিলও চেয়েছে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দলীয় কর্মীদের সংখ্যা, তালিকা থাকাটাও জরুরি বলে মনে করছেন অনেক রাজনীতি-বিশ্লেষক।
রাজনৈতিক দল নিবন্ধন কার্যক্রমে কী ধরনের সংস্কার আসছে সে বিষয়ে এর আগে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘নিবন্ধনের জন্য আরপিওতে কিছু বিধিবিধান রয়েছে। আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করেছি। নিবন্ধনের বিধিবিধান যাতে রাজনৈতিক দলের জন্য বোঝা না হয় সে বিষয়টি দেখছি। আমরা যে ধরনের রাষ্ট্র চাই; দল নিবন্ধনের কার্যক্রম যেন সেই রাষ্ট্রের জন্য সহায়ক হয় সে বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব থাকবে।’ চলতি বছরে নতুন দল নিবন্ধন নিয়ে কাজ শুরু করতে পারে নির্বাচন কমিশন। তবে ভোটের অন্তত ছয় মাস আগে নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা। এদিকে নিবন্ধন পাওয়ার আগেই দলগুলো বিভিন্ন জোটে যাওয়ার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে নতুন দলগুলো বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনাও করছে। এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে নতুন দলের নিবন্ধন আবেদন চায় ইসি। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর ৮১টি দলের আবেদন বাদ পড়ে। ২০২৩ সালের আগস্টে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। এদিকে সর্বশেষ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন দলটির প্রতীক হচ্ছে ‘মাথাল’। এ নিয়ে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৮। নবম সংসদ নির্বাচনে দলের নিবন্ধনপ্রথা চালুর পর ৩৯টি দল নিবন্ধন পায়। এরপর দশম সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দলের নিবন্ধন দেওয়া হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে কোনো দল নিবন্ধন পায়নি। দ্বাদশ সংসদের আগে নিবন্ধ পায় দুটি দল। ইসির বাছাই প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন না পেলেও আদালতের আদেশে নিবন্ধন অব্যাহত রয়েছে। তবে নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় বেশ কয়েকটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন