Dhaka ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার

পাংশায় বৃদ্ধাকে মাথায় হাতুড়ির আঘাতে হত্যার পর স্বর্ণালংকার ছিনতাই

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৩৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১০৪৮ জন সংবাদটি পড়েছেন

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের প্রেমটিয়া গ্রামে আশালতা দাস (৭০) নামে এক বৃদ্ধাকে মাথায় হাতুড়ির আঘাতে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তার নিজ ঘরের বারান্দা থেকে বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আশালতা দাস একই গ্রামের মৃত সন্তোষ দাসের স্ত্রী। বাড়িতে  তিনি একাই থাকতেন। এঘটনায় পুলিশ বিশ^জিৎ বিশ^াস নামে প্রতিবেশি এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। সে একই গ্রামের সুজিৎ বিশ^াসের ছেলে। তার কাছ থেকে লুট করা গহনা ও হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিশ^জিৎ পেশায় একজন ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আশালতা দাসের দুই মেয়ে। দুই মেয়েকেই বিয়ে দিয়েছেন। পাংশা শহরে তারা নিজ নিজ শ^শুরবাড়িতে থাকেন। আশালতা দাস তার জমির কিছু অংশ দান করেছেন স্কুল ও হাটবাজার প্রতিষ্ঠার জন্য। তার জমিজমা দেখাশোনার জন্য একজন লোক রাখা ছিল। বাড়িতে আশালতা একাই থাকতেন। তার কোনো শত্রæ ছিল না। মঙ্গলবার সকালে বারান্দায় নিহতের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

সরিষা ইউপি চেয়ারম্যান আজমল আল বাহার জানান, আশালতা দাস খুবই সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। তার পূর্ব পুুরুষ জমিদার ছিলেন। এলাকায় জায়গা জমি টাকা পয়সাও দান করেছেন। এলাকার সবাই তাকে সম্মান করতো। কারো সাথে কোনো ধরনের বিবাদ ছিল না। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। মেয়েরো তাকে নিয়ে যেতে চাইলেও তিনি যেতেন না। ওই বাড়িতে থাকতেই তিনি পছন্দ করতেন। ধারণা করা হচ্ছে কোনো মাদকাসক্ত যুবক চুরি করার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে গিয়েছিল। তিনি দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করেছে। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। তিনি হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।

 পাংশা মডেল থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, ঘটনার মাত্র পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তার কাছ থেকে স্বর্ণের কানের দুল, হাতের বালা এবং হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। ওসি জানান, ঘটনা ঘটনার পর তারা প্রাথমিকভাবে দুইজনকে সন্দেহ করেন। সন্দিগ্ধদের একজনকে এলাকায় দেখা না যাওয়ায় তাদের সোর্সদের মাধ্যমে কৌশলে নিয়ে আসেন। পুলিশি জিজ্ঞসাবাদের এক পর্যায়ে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। মূলত বিদেশ যাওয়ার জন্য অনেক টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সে হতাশ ছিল। হতাশা থেকেই চুরির পথ বেছে নেয়। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আশালতা দাস নামে ওই বৃদ্ধা ঘুম থেকে উঠে ঘরের বাইরে বের হতেই তাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে মাথার ঘিলু বের হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার

পাংশায় বৃদ্ধাকে মাথায় হাতুড়ির আঘাতে হত্যার পর স্বর্ণালংকার ছিনতাই

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের প্রেমটিয়া গ্রামে আশালতা দাস (৭০) নামে এক বৃদ্ধাকে মাথায় হাতুড়ির আঘাতে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তার নিজ ঘরের বারান্দা থেকে বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আশালতা দাস একই গ্রামের মৃত সন্তোষ দাসের স্ত্রী। বাড়িতে  তিনি একাই থাকতেন। এঘটনায় পুলিশ বিশ^জিৎ বিশ^াস নামে প্রতিবেশি এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। সে একই গ্রামের সুজিৎ বিশ^াসের ছেলে। তার কাছ থেকে লুট করা গহনা ও হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিশ^জিৎ পেশায় একজন ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আশালতা দাসের দুই মেয়ে। দুই মেয়েকেই বিয়ে দিয়েছেন। পাংশা শহরে তারা নিজ নিজ শ^শুরবাড়িতে থাকেন। আশালতা দাস তার জমির কিছু অংশ দান করেছেন স্কুল ও হাটবাজার প্রতিষ্ঠার জন্য। তার জমিজমা দেখাশোনার জন্য একজন লোক রাখা ছিল। বাড়িতে আশালতা একাই থাকতেন। তার কোনো শত্রæ ছিল না। মঙ্গলবার সকালে বারান্দায় নিহতের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

সরিষা ইউপি চেয়ারম্যান আজমল আল বাহার জানান, আশালতা দাস খুবই সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। তার পূর্ব পুুরুষ জমিদার ছিলেন। এলাকায় জায়গা জমি টাকা পয়সাও দান করেছেন। এলাকার সবাই তাকে সম্মান করতো। কারো সাথে কোনো ধরনের বিবাদ ছিল না। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। মেয়েরো তাকে নিয়ে যেতে চাইলেও তিনি যেতেন না। ওই বাড়িতে থাকতেই তিনি পছন্দ করতেন। ধারণা করা হচ্ছে কোনো মাদকাসক্ত যুবক চুরি করার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে গিয়েছিল। তিনি দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করেছে। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। তিনি হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।

 পাংশা মডেল থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, ঘটনার মাত্র পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তার কাছ থেকে স্বর্ণের কানের দুল, হাতের বালা এবং হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। ওসি জানান, ঘটনা ঘটনার পর তারা প্রাথমিকভাবে দুইজনকে সন্দেহ করেন। সন্দিগ্ধদের একজনকে এলাকায় দেখা না যাওয়ায় তাদের সোর্সদের মাধ্যমে কৌশলে নিয়ে আসেন। পুলিশি জিজ্ঞসাবাদের এক পর্যায়ে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। মূলত বিদেশ যাওয়ার জন্য অনেক টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সে হতাশ ছিল। হতাশা থেকেই চুরির পথ বেছে নেয়। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আশালতা দাস নামে ওই বৃদ্ধা ঘুম থেকে উঠে ঘরের বাইরে বের হতেই তাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে মাথার ঘিলু বের হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।