Dhaka ১১:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দফায় দফায় হামলায় চরম আতঙ্কে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও স্বজনরা ॥ জামিনে বের হয়ে এসে হুমকির অভিযোগ ॥ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন, একই দাবিতে মানববন্ধন মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৬:০২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১
  • / ১৬০৫ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ দফায় দফায়  হামলায় চরম আতঙ্কে  রয়েছেন রাজবাড়ীর পাংশা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী কোরবান চৌধুরী ও তার স্বজনরা। হামলার ঘটনায় পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারও হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নিতে দিচ্ছে চাপ। এসব ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে  জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শুক্রবার সকালে পৌরসভার কুড়াপাড়ায় তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কোরবান চৌধুরী। হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। তার অভিযোগ ৬ নং ওয়ার্ডের বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী বাদশা মন্ডল ও তার লোকেরা এ হামলা চালিয়েছে। হামলায় এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্ততঃ ১০ জন। ভাংচুরে ক্ষতি হয়েছে লক্ষাধিক টাকার সম্পদ। যারা গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন তারা এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি। একই দাবিতে মানববন্ধন করেছে  বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ পাংশা পৌরসভা শাখা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কোরবান চৌধুরীর সহোদর ভাই ও মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ পাংশা পৌরসভার শাখার সভাপতি  ই¯্রাফিল হোসেন বলেন, গত ১০ মে তারিখে পবিত্র রমজান মাসে বাদশা মন্ডল ও তার লোকেরা পিস্তল, চাপাতি, রামদা, লোহার রড, হাতুড়ি নিয়ে কোরবান চৌধুরীর কর্মী সমর্থকদের উপর বর্বর হামলা করে। এতে আওয়ামী লীগ নেতা তমছের মন্ডল, আরিফ চৌধুরী, শরিফ চৌধুরী, নাইম মন্ডল গুরুতর আহত হয়। কয়েক দফা হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত আরিফ চৌধুরীর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তাকে বীভৎস্যভাবে কোপানো হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১৯টি কোপ দেওয়া হয়েছে। মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে ৭০টি। শরীরে সেলাই দিতে হয়েছে একশটি। এরপরে হামলাকারীরা ১৫ বছর বয়সী কিশোর নাইম মন্ডলকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মাথার খুলি বের করে দেয়। তার অবস্থা খুবই খারাপ। এসব হামলার ঘটনায় বাদশা মন্ডলসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করলেও পরদিন আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসে। এরপরই দিতে থাকে হুমকি ধমকি। তারা মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। পুরো পরিবারসহ কোরবান চৌধুরীর কর্মী সমর্থকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

সংবাদ সম্মেলনে কোরবান চৌধুরী বলেন, আমি কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পাশাপাশি নৌকা প্রার্থীর পক্ষেও কাজ করেছি। বাদশা মন্ডল ছিল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে। গত ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার আগেই বাদশা মন্ডলের লোকজন তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায়। কয়েক দফায় তার বাড়ি এবং সমর্থকদের উপর হামলায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন। কখন যেন হামলা করে। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না। তিনি জানান, হামলার ঘটনায় তিনি পাংশা থানায় মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করেছিল। জামিনে ছাড়া পেয়ে তারা আবারও হুমকি ধমকি দিচ্ছে। হুমকিদাতারা বলছে, আরিফ চৌধুরীর পরিণতি ভোগ করতে হবে সবাইকে। হুমকির ঘটনায় তিনি পাংশা থানায় জিডি করেছেন। তিনি হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং তার স্বজন ও সমর্থকদের নিরাপত্তার দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক  নজরুল ইসলাম খান, সাবেক দপ্তর সম্পাদক  ফরিদুজ্জামান, ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ বিশ^াস, পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইদ্রিস মন্ডল প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে পৌর এলাকার কুড়াপাড়া সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কুড়াপাড়া এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ বিশ^াস বলেন, বাদশা মন্ডল এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। কোরবান চৌধুরীর বাসভবন, কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালানোর পর তিনি নিজের বাড়িতে নিজেই ভাংচুর করে হামলার নাটক সাজিয়েছেন। সুষ্ঠু বিচারের পাশাপাশি কাউন্সিলর পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করা উচিৎ।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

দফায় দফায় হামলায় চরম আতঙ্কে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও স্বজনরা ॥ জামিনে বের হয়ে এসে হুমকির অভিযোগ ॥ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন, একই দাবিতে মানববন্ধন মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের

প্রকাশের সময় : ০৬:০২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥ দফায় দফায়  হামলায় চরম আতঙ্কে  রয়েছেন রাজবাড়ীর পাংশা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী কোরবান চৌধুরী ও তার স্বজনরা। হামলার ঘটনায় পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারও হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নিতে দিচ্ছে চাপ। এসব ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে  জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শুক্রবার সকালে পৌরসভার কুড়াপাড়ায় তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কোরবান চৌধুরী। হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। তার অভিযোগ ৬ নং ওয়ার্ডের বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী বাদশা মন্ডল ও তার লোকেরা এ হামলা চালিয়েছে। হামলায় এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্ততঃ ১০ জন। ভাংচুরে ক্ষতি হয়েছে লক্ষাধিক টাকার সম্পদ। যারা গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন তারা এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি। একই দাবিতে মানববন্ধন করেছে  বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ পাংশা পৌরসভা শাখা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কোরবান চৌধুরীর সহোদর ভাই ও মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ পাংশা পৌরসভার শাখার সভাপতি  ই¯্রাফিল হোসেন বলেন, গত ১০ মে তারিখে পবিত্র রমজান মাসে বাদশা মন্ডল ও তার লোকেরা পিস্তল, চাপাতি, রামদা, লোহার রড, হাতুড়ি নিয়ে কোরবান চৌধুরীর কর্মী সমর্থকদের উপর বর্বর হামলা করে। এতে আওয়ামী লীগ নেতা তমছের মন্ডল, আরিফ চৌধুরী, শরিফ চৌধুরী, নাইম মন্ডল গুরুতর আহত হয়। কয়েক দফা হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত আরিফ চৌধুরীর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তাকে বীভৎস্যভাবে কোপানো হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১৯টি কোপ দেওয়া হয়েছে। মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে ৭০টি। শরীরে সেলাই দিতে হয়েছে একশটি। এরপরে হামলাকারীরা ১৫ বছর বয়সী কিশোর নাইম মন্ডলকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মাথার খুলি বের করে দেয়। তার অবস্থা খুবই খারাপ। এসব হামলার ঘটনায় বাদশা মন্ডলসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করলেও পরদিন আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসে। এরপরই দিতে থাকে হুমকি ধমকি। তারা মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। পুরো পরিবারসহ কোরবান চৌধুরীর কর্মী সমর্থকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

সংবাদ সম্মেলনে কোরবান চৌধুরী বলেন, আমি কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পাশাপাশি নৌকা প্রার্থীর পক্ষেও কাজ করেছি। বাদশা মন্ডল ছিল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে। গত ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার আগেই বাদশা মন্ডলের লোকজন তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায়। কয়েক দফায় তার বাড়ি এবং সমর্থকদের উপর হামলায় পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন। কখন যেন হামলা করে। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না। তিনি জানান, হামলার ঘটনায় তিনি পাংশা থানায় মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করেছিল। জামিনে ছাড়া পেয়ে তারা আবারও হুমকি ধমকি দিচ্ছে। হুমকিদাতারা বলছে, আরিফ চৌধুরীর পরিণতি ভোগ করতে হবে সবাইকে। হুমকির ঘটনায় তিনি পাংশা থানায় জিডি করেছেন। তিনি হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং তার স্বজন ও সমর্থকদের নিরাপত্তার দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক  নজরুল ইসলাম খান, সাবেক দপ্তর সম্পাদক  ফরিদুজ্জামান, ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ বিশ^াস, পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইদ্রিস মন্ডল প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে পৌর এলাকার কুড়াপাড়া সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কুড়াপাড়া এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ বিশ^াস বলেন, বাদশা মন্ডল এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। কোরবান চৌধুরীর বাসভবন, কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালানোর পর তিনি নিজের বাড়িতে নিজেই ভাংচুর করে হামলার নাটক সাজিয়েছেন। সুষ্ঠু বিচারের পাশাপাশি কাউন্সিলর পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করা উচিৎ।