Dhaka ০৪:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কালুখালীতে গার্মেন্টকর্মী নাজমা হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন: সংসারে ফিরে না আসায় হত্যা করে প্রাক্তন স্বামী মকিম

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৩:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ১৩১৯ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ি ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামে গার্মেন্টকর্মী নাজমা বেগম হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে কালুখালী থানার পুলিশ। সংসারে ফিরে না আসায় এবং টাকা ফেরত না দেওয়ায় দ্বিতীয় স্বামী মকিম মোল্লা তাকে হত্যা করেছে। গাজীপুর থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যার দিকে রাজবাড়ীর আদালতে মকিম ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে নাজমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। মকিম একই উপজেলার পচাকুলটিয়া গ্রামের আজিজ মোল্লার ছেলে।

কালুখালী থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, গত সোমবার সকালে মাঝবাড়ি ইউনিয়নের কাশমিয়ার বিলপাড়ে নাজমা বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। এঘটনায় ওইদিনই নিহতের ভাই ইমান আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কালুখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে নিশ্চিত হওয়া যায়, ঘটনার সাথে নাজমার দ্বিতীয় স্বামী মকিম মোল্লা জড়িত রয়েছে। মকিম মোল্লার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর বুধবার অভিযান চালিয়ে তাকে গাজীপুর জেলার বসন থানার নাওজুর এলাকা থেকে  গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি আরও জানান, মকিম মোল্লা ছিলেন নাজমার দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী বিল্লালকে তালাক দিয়ে  মকিমকে বিয়ে করেন নাজমা। নাজমার আগের সংসারে দুটি ছেলে রয়েছে। মকিমকে বিয়ে করার পর কারণে অকারণে নাজমাকে নির্যাতন করতো মকিম। একারণে বছর তিনেক আগে নাজমা আদালতের মাধ্যমে মকিমকে তালাক দেন। ওই সময় নাজমা মকিমের দেড় লাখ টাকা নিয়ে যান। তালাক হলেও তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল। মকিম নাজমার কাছে ওই দেড় লাখ টাকা চেয়েছিল। কিন্তু সে দেয়নি। নাজমাকে সংসারে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল কিন্তু রাজী হয়নি। এসব কারণে মকিম নাজমার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রোববার রাতে কালুখালী  উপজেলার সোনাপুর বাসস্ট্যান্ডে নাজমা আসার পর তাকে বাড়ি পৌছে দেওয়ার কথা বলে নির্জন বিলপাড়ে নিয়ে যায় মকিম। এরপর পরিকল্পনা অনুসারে নাজমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে সে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মাঝে দৌলতদিয়াÑপাটুরিয়া ফেরিতে পার হওয়ার সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও নাজমার মোবাইল ফোন নদীতে ফেলে দেয়। আদালতে ১৬৪ ধারা জবাবন্দীতে সে সবকিছু স্বীকার করেছে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার উপজেলার মাঝবাড়ি ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের কাশমিয়ার বিলপাড় থেকে গার্মেন্ট কর্মী নাজমা বেহমের মরদেহ উদ্ধার করে কালুখালী থানার পুলিশ।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

কালুখালীতে গার্মেন্টকর্মী নাজমা হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন: সংসারে ফিরে না আসায় হত্যা করে প্রাক্তন স্বামী মকিম

প্রকাশের সময় : ০৮:১৩:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ি ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামে গার্মেন্টকর্মী নাজমা বেগম হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে কালুখালী থানার পুলিশ। সংসারে ফিরে না আসায় এবং টাকা ফেরত না দেওয়ায় দ্বিতীয় স্বামী মকিম মোল্লা তাকে হত্যা করেছে। গাজীপুর থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যার দিকে রাজবাড়ীর আদালতে মকিম ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে নাজমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। মকিম একই উপজেলার পচাকুলটিয়া গ্রামের আজিজ মোল্লার ছেলে।

কালুখালী থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, গত সোমবার সকালে মাঝবাড়ি ইউনিয়নের কাশমিয়ার বিলপাড়ে নাজমা বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। এঘটনায় ওইদিনই নিহতের ভাই ইমান আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কালুখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে নিশ্চিত হওয়া যায়, ঘটনার সাথে নাজমার দ্বিতীয় স্বামী মকিম মোল্লা জড়িত রয়েছে। মকিম মোল্লার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর বুধবার অভিযান চালিয়ে তাকে গাজীপুর জেলার বসন থানার নাওজুর এলাকা থেকে  গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি আরও জানান, মকিম মোল্লা ছিলেন নাজমার দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী বিল্লালকে তালাক দিয়ে  মকিমকে বিয়ে করেন নাজমা। নাজমার আগের সংসারে দুটি ছেলে রয়েছে। মকিমকে বিয়ে করার পর কারণে অকারণে নাজমাকে নির্যাতন করতো মকিম। একারণে বছর তিনেক আগে নাজমা আদালতের মাধ্যমে মকিমকে তালাক দেন। ওই সময় নাজমা মকিমের দেড় লাখ টাকা নিয়ে যান। তালাক হলেও তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল। মকিম নাজমার কাছে ওই দেড় লাখ টাকা চেয়েছিল। কিন্তু সে দেয়নি। নাজমাকে সংসারে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল কিন্তু রাজী হয়নি। এসব কারণে মকিম নাজমার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল। গত ২১ ফেব্রুয়ারি রোববার রাতে কালুখালী  উপজেলার সোনাপুর বাসস্ট্যান্ডে নাজমা আসার পর তাকে বাড়ি পৌছে দেওয়ার কথা বলে নির্জন বিলপাড়ে নিয়ে যায় মকিম। এরপর পরিকল্পনা অনুসারে নাজমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে সে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মাঝে দৌলতদিয়াÑপাটুরিয়া ফেরিতে পার হওয়ার সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও নাজমার মোবাইল ফোন নদীতে ফেলে দেয়। আদালতে ১৬৪ ধারা জবাবন্দীতে সে সবকিছু স্বীকার করেছে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার উপজেলার মাঝবাড়ি ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের কাশমিয়ার বিলপাড় থেকে গার্মেন্ট কর্মী নাজমা বেহমের মরদেহ উদ্ধার করে কালুখালী থানার পুলিশ।