Dhaka ১২:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওয়েব্রীজ স্কেলের যানজটে নাকাল গোয়ালন্দবাসী

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:০৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
  • / ১৩৫৮ জন সংবাদটি পড়েছেন

 

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌর এলাকার উপজেলা কোর্ট চত্ত্বর সংলগ্ন পন্য বোঝাই ট্রাক পরিমাপের জন্য স্থাপিত বিআইডব্লিউটিসি’র ওয়েব্রীজ স্কেলে সৃষ্ট যানজটে দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। এছাড়া প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রণহীন যানজটে ব্যস্ততম ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দীর্ঘ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওয়েব্রীজ স্কেলটি স্থানান্তরের জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে।

জানা যায়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভাধীন উপজেলা কোর্ট চত্ত্বর এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে স্থাপিত ডিজিটাল ওয়েব্রীজ স্কেলটি নানা ত্রুটিতে বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। বিআইডব্লিউটিসি’র স্কেলটির দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভাঙ্গাচোড়া ও স্কেলের কম্পিউটার মাঝে মধ্যেই বিকল হয়ে থাকায় ওজন স্লিপ নিতে আসা ট্রাকগুলোর মালের চালান রসিদ ওজন স্লিপ হাতে লিখে দেয়া হয়। হাতে লিখে দেয়ার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী সময় লাগে। এতকরে যানবাহনের বাড়তি চাপ কুলিয়ে উঠতে না পারায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে স্কেল এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এই যানজটের কারণে পাশেই থাকা গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেট বন্ধ হয়ে যায় এবং চলাচলরত ছোট-বড় যানবাহন ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে বাধ্য হয়। এছাড়া ব্যস্ততম ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চলাচলরত দুরপাল্লার পরিবহন গুলোও দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় যানবাহনগুলোর যাত্রী ও চালকদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্কেলটির দুই পাশের অ্যাপ্রোজ সড়কে ভাঙ্গাচোড়া ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ওজন নিতে আসা পন্য বোঝাই ট্রাকগুলোকে অনেকটা জায়গা ঘুড়ে স্কেলে উঠতে হয়। সড়কের মাঝে কাঁদা-পানিতে গর্তের গর্ভীরতা বুঝতে না পারায় চালকরা বোঝাই মালের গাড়ী নিয়ে বিপাকে পড়েন। এ সময় ট্রাকগুলো সামনে মহাসড়কের পুরাটাই ব্লক করে ফেলে। ফলে যানবাহন গুলো চলাচল বন্ধ হয়ে চরম যানজটের সৃষ্টি হয়। কোন কোন সময় মহাসড়কে স্কেল থেকে ২/৩ কিলোমিটার পার্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পড়ে। যানজটে কারণে গোয়ালন্দ রেলগেটে দূর্ঘটনার ঝুকি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢোকার একমাত্র রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এতেকরে হাসপাতালে আসা জরুরী রোগী নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

ট্রাকের ওজন স্লিপ দিতে বিলম্ব হলে মহাসড়কের অর্ধেকটা জুড়ে এক পাশে ট্রাকের লম্বা লাইন থাকে। বাকি অর্ধেটায় যানবাহন মুখো-মুখি হয়ে যাওয়া পুরো সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় বাস-ট্রাকগুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। এ সময় স্কেলের দুই পাশে ঢাকা-খুলনা গামী যানবাহনর ২/৩ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। আসন্ন ঈদে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। সে সময় এখানে ভোগান্তির মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মো. নিজাম জানান, শহরের মধ্যে অপরিকল্পিত ভাবে স্থাপিত ওয়েটস্কেলটি গোয়ালন্দবাসী কলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়েটস্কেলে সৃষ্ট যানজটে স্থানীয়দের চরম ভোগান্তির পাশাপাশি মহাসড়কেও যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এই ওয়েটস্কেলের কারণে সৃষ্ট যানজটে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। ওয়েটস্কেলটি স্থানন্তর করে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা স্থানে স্থাপনের দাবি জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যাবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রণি জানান, স্কেলের দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কে দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে। তাছাড়া কম্পিউটারে সাময়িক একটু সমস্যা হয়েছিল তা ঠিক করা হয়েছে। যানজটের বিষয়ে তিনি বলেন, গোয়ালন্দ মোড় থেকে পুলিশ একযোগে ট্রাক ছেড়ে দেয়ায় ওয়েস্কেল এলাকায় সাময়িক ভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

ওয়েব্রীজ স্কেলের যানজটে নাকাল গোয়ালন্দবাসী

প্রকাশের সময় : ০৮:০৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০

 

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌর এলাকার উপজেলা কোর্ট চত্ত্বর সংলগ্ন পন্য বোঝাই ট্রাক পরিমাপের জন্য স্থাপিত বিআইডব্লিউটিসি’র ওয়েব্রীজ স্কেলে সৃষ্ট যানজটে দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। এছাড়া প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রণহীন যানজটে ব্যস্ততম ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দীর্ঘ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওয়েব্রীজ স্কেলটি স্থানান্তরের জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে।

জানা যায়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভাধীন উপজেলা কোর্ট চত্ত্বর এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে স্থাপিত ডিজিটাল ওয়েব্রীজ স্কেলটি নানা ত্রুটিতে বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। বিআইডব্লিউটিসি’র স্কেলটির দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক ভাঙ্গাচোড়া ও স্কেলের কম্পিউটার মাঝে মধ্যেই বিকল হয়ে থাকায় ওজন স্লিপ নিতে আসা ট্রাকগুলোর মালের চালান রসিদ ওজন স্লিপ হাতে লিখে দেয়া হয়। হাতে লিখে দেয়ার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী সময় লাগে। এতকরে যানবাহনের বাড়তি চাপ কুলিয়ে উঠতে না পারায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে স্কেল এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এই যানজটের কারণে পাশেই থাকা গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেট বন্ধ হয়ে যায় এবং চলাচলরত ছোট-বড় যানবাহন ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে বাধ্য হয়। এছাড়া ব্যস্ততম ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চলাচলরত দুরপাল্লার পরিবহন গুলোও দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় যানবাহনগুলোর যাত্রী ও চালকদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্কেলটির দুই পাশের অ্যাপ্রোজ সড়কে ভাঙ্গাচোড়া ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ওজন নিতে আসা পন্য বোঝাই ট্রাকগুলোকে অনেকটা জায়গা ঘুড়ে স্কেলে উঠতে হয়। সড়কের মাঝে কাঁদা-পানিতে গর্তের গর্ভীরতা বুঝতে না পারায় চালকরা বোঝাই মালের গাড়ী নিয়ে বিপাকে পড়েন। এ সময় ট্রাকগুলো সামনে মহাসড়কের পুরাটাই ব্লক করে ফেলে। ফলে যানবাহন গুলো চলাচল বন্ধ হয়ে চরম যানজটের সৃষ্টি হয়। কোন কোন সময় মহাসড়কে স্কেল থেকে ২/৩ কিলোমিটার পার্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পড়ে। যানজটে কারণে গোয়ালন্দ রেলগেটে দূর্ঘটনার ঝুকি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢোকার একমাত্র রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এতেকরে হাসপাতালে আসা জরুরী রোগী নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

ট্রাকের ওজন স্লিপ দিতে বিলম্ব হলে মহাসড়কের অর্ধেকটা জুড়ে এক পাশে ট্রাকের লম্বা লাইন থাকে। বাকি অর্ধেটায় যানবাহন মুখো-মুখি হয়ে যাওয়া পুরো সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় বাস-ট্রাকগুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। এ সময় স্কেলের দুই পাশে ঢাকা-খুলনা গামী যানবাহনর ২/৩ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। আসন্ন ঈদে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। সে সময় এখানে ভোগান্তির মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মো. নিজাম জানান, শহরের মধ্যে অপরিকল্পিত ভাবে স্থাপিত ওয়েটস্কেলটি গোয়ালন্দবাসী কলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়েটস্কেলে সৃষ্ট যানজটে স্থানীয়দের চরম ভোগান্তির পাশাপাশি মহাসড়কেও যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এই ওয়েটস্কেলের কারণে সৃষ্ট যানজটে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। ওয়েটস্কেলটি স্থানন্তর করে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা স্থানে স্থাপনের দাবি জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যাবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রণি জানান, স্কেলের দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কে দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে। তাছাড়া কম্পিউটারে সাময়িক একটু সমস্যা হয়েছিল তা ঠিক করা হয়েছে। যানজটের বিষয়ে তিনি বলেন, গোয়ালন্দ মোড় থেকে পুলিশ একযোগে ট্রাক ছেড়ে দেয়ায় ওয়েস্কেল এলাকায় সাময়িক ভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়।