Dhaka ০৫:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৌলতদিয়ায় পদ্মা পারের অপেক্ষায় সহস্রাধিক ট্রাক

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০
  • / ১২৯৬ জন সংবাদটি পড়েছেন

 

জনতার আদালত অনলাইন ॥ পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্রোত। তীব্র স্রোতের বিপরীতে ফেরিগুলোর প্রতিটি ট্রিপে দ্বিগুন সময় লাগছে। এতেকরে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে সৃষ্টি হয়েছে নদী পার হতে আসা যানবাহনের দীর্ঘ সারি। প্রতিটি পন্যবাহি ট্রাককে ফেরির নাগাল পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন।

পানি বৃদ্ধির ফলে ফেরিঘাটগুলো এখন তলিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাটে থাকা ছয়টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ঘাট গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত চলাচলের উপযোগি হয়নি। বাকি ৩, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট সমান সমান পানি দেখা যাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে হয়তো দুই এক দিনের মধ্যেই তলিয়ে যাবে সচল থাকা ৪ টি ঘাট।

পানি বৃদ্ধির ফলে নদীতে তৈরি হওয়া প্রবল ¯্রােতের বিপরীতে চলতে গিয়ে ১৬ টি ফেরির মধ্যে বিকল হয়েছে ৩ টি। বাকি ১৩ টি ফেরি দিয়ে চলছে এই নৌরুটের পারাপার। এছাড়াও প্রবল ¯্রােতের কারনে ৩০ মিনিটের এই নৌপথ পারি দিতে সময় লাগছে একঘন্টাও বেশি। যে কারনে ঘাট এলাকায় তৈরি হচ্ছে পন্যবাহি ট্রাকের দীর্ঘ সিরিয়াল। এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় অন্তত তিন শত ট্রাক আটকে আছে। এছাড়াও ঘাট থেকে ১২ কিলোমিটার দুরে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার কামালদিয়া পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত অন্তত ৭ শত ট্রাক ও গোয়ালন্দ মোড় থেকে ফরিদপুর সড়কের নীম তলা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পর্যন্ত আরো দুই শত পন্যবাহি ট্রাক পারের অপেক্ষায় আটকে আছে।

গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে থাকা ট্রাকের চালক মজনু সরদার জানান, ঘাটে এসে বিপদে পড়তে হয় মাঝে মধ্যেই। এটা কোন নতুন বিষয় নয়? শীতে কুয়াশায় ফেরি বন্ধ আবার বর্ষায় ¯্রােতে ফেরি নষ্ট হয়। এ ব্যাপারে তেমন কোন উদ্যোগ নেই ফেরি কর্তৃপক্ষের। যে কারনে ভোগান্তি শেষ হয় না।

অপর এক ট্রাকের চালক নুর ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে আছি। কখন ফেরির নাগাল পাবো বলা মুশকিল। এদিকে ট্রাকের মালিক ও ট্রাকে থাকা মালামালের ব্যাবসায়ী বার বার ফোনে রাগারাগি করছে। তাছাড়া এমন একটি এলাকায় আটকে আছি যেখানে খাবারের কোন হোটেল নেই। প্রসাব পায়খানারও কোন ব্যাবস্থা নেই। ২০ টাকা রিক্সা ভারা দিয়ে খাবার খেতে যেতে হচ্ছে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় কর্তব্য পালনরত অবস্থায় রাজবাড়ীর ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর মাসুদুর রহমান মৃধা বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যাতে কোন জটলা তৈরি না হয় সেজন্য গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ট্রাকগুলোকে সাড়িবদ্ধভাবে রাখা হচ্ছে। বিআইডব্লিটিসি কর্তৃপক্ষ ঘাট থেকে যেকয়টি যানবাহনের চাহিদা দিচ্ছে সেভাবেই পাঠানো হচ্ছে।

এ ব্যপারে বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যাবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, প্রবল ¯্রােতে ফেরিগুলোকে নদী পার হতে সময় লাগছে বেশি। যে কারনে কমেছে ফেরির ট্রিপ সংখ্যাও। তাই অগ্রাধীকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে কাচামাল বহনকারী ট্রাক। তিনি আরো বলেন, এই নৌরুটে ১৬ টি ফেরির মধ্যে ১৩ টি ফেরি চলাচল করছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

দৌলতদিয়ায় পদ্মা পারের অপেক্ষায় সহস্রাধিক ট্রাক

প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০

 

জনতার আদালত অনলাইন ॥ পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্রোত। তীব্র স্রোতের বিপরীতে ফেরিগুলোর প্রতিটি ট্রিপে দ্বিগুন সময় লাগছে। এতেকরে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে সৃষ্টি হয়েছে নদী পার হতে আসা যানবাহনের দীর্ঘ সারি। প্রতিটি পন্যবাহি ট্রাককে ফেরির নাগাল পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন।

পানি বৃদ্ধির ফলে ফেরিঘাটগুলো এখন তলিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাটে থাকা ছয়টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ঘাট গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত চলাচলের উপযোগি হয়নি। বাকি ৩, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট সমান সমান পানি দেখা যাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে হয়তো দুই এক দিনের মধ্যেই তলিয়ে যাবে সচল থাকা ৪ টি ঘাট।

পানি বৃদ্ধির ফলে নদীতে তৈরি হওয়া প্রবল ¯্রােতের বিপরীতে চলতে গিয়ে ১৬ টি ফেরির মধ্যে বিকল হয়েছে ৩ টি। বাকি ১৩ টি ফেরি দিয়ে চলছে এই নৌরুটের পারাপার। এছাড়াও প্রবল ¯্রােতের কারনে ৩০ মিনিটের এই নৌপথ পারি দিতে সময় লাগছে একঘন্টাও বেশি। যে কারনে ঘাট এলাকায় তৈরি হচ্ছে পন্যবাহি ট্রাকের দীর্ঘ সিরিয়াল। এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় অন্তত তিন শত ট্রাক আটকে আছে। এছাড়াও ঘাট থেকে ১২ কিলোমিটার দুরে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার কামালদিয়া পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত অন্তত ৭ শত ট্রাক ও গোয়ালন্দ মোড় থেকে ফরিদপুর সড়কের নীম তলা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পর্যন্ত আরো দুই শত পন্যবাহি ট্রাক পারের অপেক্ষায় আটকে আছে।

গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে থাকা ট্রাকের চালক মজনু সরদার জানান, ঘাটে এসে বিপদে পড়তে হয় মাঝে মধ্যেই। এটা কোন নতুন বিষয় নয়? শীতে কুয়াশায় ফেরি বন্ধ আবার বর্ষায় ¯্রােতে ফেরি নষ্ট হয়। এ ব্যাপারে তেমন কোন উদ্যোগ নেই ফেরি কর্তৃপক্ষের। যে কারনে ভোগান্তি শেষ হয় না।

অপর এক ট্রাকের চালক নুর ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে আছি। কখন ফেরির নাগাল পাবো বলা মুশকিল। এদিকে ট্রাকের মালিক ও ট্রাকে থাকা মালামালের ব্যাবসায়ী বার বার ফোনে রাগারাগি করছে। তাছাড়া এমন একটি এলাকায় আটকে আছি যেখানে খাবারের কোন হোটেল নেই। প্রসাব পায়খানারও কোন ব্যাবস্থা নেই। ২০ টাকা রিক্সা ভারা দিয়ে খাবার খেতে যেতে হচ্ছে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় কর্তব্য পালনরত অবস্থায় রাজবাড়ীর ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর মাসুদুর রহমান মৃধা বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যাতে কোন জটলা তৈরি না হয় সেজন্য গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ট্রাকগুলোকে সাড়িবদ্ধভাবে রাখা হচ্ছে। বিআইডব্লিটিসি কর্তৃপক্ষ ঘাট থেকে যেকয়টি যানবাহনের চাহিদা দিচ্ছে সেভাবেই পাঠানো হচ্ছে।

এ ব্যপারে বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যাবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, প্রবল ¯্রােতে ফেরিগুলোকে নদী পার হতে সময় লাগছে বেশি। যে কারনে কমেছে ফেরির ট্রিপ সংখ্যাও। তাই অগ্রাধীকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে কাচামাল বহনকারী ট্রাক। তিনি আরো বলেন, এই নৌরুটে ১৬ টি ফেরির মধ্যে ১৩ টি ফেরি চলাচল করছে।