Dhaka ০৪:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কামাল লোহানী স্মরণে রাজবাড়ী শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০
  • / ১৪১৭ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ও সুপিরিচিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ভাষা সৈনিক কামাল লোহানী স্মরণে শুক্রবার রাজবাড়ী রেলওয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়।  পরে দাঁড়িয়ে পালন করা হয় এক মিনিট নীরবতা। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান চৌধুরী বাবলা, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংবাদিক সৌমিত্র শীল, সাংস্কৃতিক কর্মী ও আবৃত্তি শিল্পী আহনাফ হাসান রবীন, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাওছার আহমেদ রিপন প্রমুখ।  গত ২০ জুন শনিবার করোনায় আক্রান্ত  হয়ে মারা যান কামাল লোহানী।

 কামাল লোহানী ১৯৩৪ সালে  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়  জন্মগ্রহণ করেন। বায়ান্ন সালে পাবনা জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন । সে সময়েই ভাষা আন্দোলনে জড়িত হবার মধ্য দিয়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। পরে কয়েক দফা জেল খেটেছেন এবং একই সাথে কারাগারে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দিন আহমেদের মতো নেতাদেরও সাথেও। এক পর্যায়ে জড়িত হন বামপন্থী ধারার রাজনীতিতে।

জীবনের শুরু থেকেই কামাল লোহানী ছিলেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেশ সক্রিয় । ষাটের দশকের শুরুতে পাকিস্তান সরকারের রবীন্দ্রনাথ বিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলো। ১৯৬২ সালে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। এরপর পাঁচ বছরের মাথায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি, যাতে সক্রিয় ছিলেন আলতাফ মাহমুদ সহ আরও অনেকে প্রথিতযশা শিল্পী। ষাটের দশকের শেষ দিকে যোগ দেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপে এবং সক্রিয় হন আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনে। ওই সময় পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনে শিল্পীদের সংগঠিত করার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে যোগ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। সে সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ বেতারের পরিচালকের দায়িত্ব পান। ” ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ও গণতন্ত্রের জন্যও কামাল লোহানী ভূমিকা রেখেছিলেন।

 রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বাইরে কামাল লোহানীর দীর্ঘ পেশাগত জীবন ছিলো সাংবাদিকতায়। কাজ করেছেন  দৈনিক আজাদসহ অনেকগুলো সংবাদপত্রে। কাজের পাশাপাশি নেতৃত্ব দিয়েছে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোতেও। “ব্যক্তিগত জীবনে সৎ একজন মানুষ। দেশপ্রেমের পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণ। সাংবাদিকতা করেছেন কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা তিনি সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন।  সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে একুশে পদক পান কামাল লোহানী।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

কামাল লোহানী স্মরণে রাজবাড়ী শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০

জনতার আদালত অনলাইন : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ও সুপিরিচিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ভাষা সৈনিক কামাল লোহানী স্মরণে শুক্রবার রাজবাড়ী রেলওয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়।  পরে দাঁড়িয়ে পালন করা হয় এক মিনিট নীরবতা। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান চৌধুরী বাবলা, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংবাদিক সৌমিত্র শীল, সাংস্কৃতিক কর্মী ও আবৃত্তি শিল্পী আহনাফ হাসান রবীন, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাওছার আহমেদ রিপন প্রমুখ।  গত ২০ জুন শনিবার করোনায় আক্রান্ত  হয়ে মারা যান কামাল লোহানী।

 কামাল লোহানী ১৯৩৪ সালে  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়  জন্মগ্রহণ করেন। বায়ান্ন সালে পাবনা জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন । সে সময়েই ভাষা আন্দোলনে জড়িত হবার মধ্য দিয়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। পরে কয়েক দফা জেল খেটেছেন এবং একই সাথে কারাগারে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দিন আহমেদের মতো নেতাদেরও সাথেও। এক পর্যায়ে জড়িত হন বামপন্থী ধারার রাজনীতিতে।

জীবনের শুরু থেকেই কামাল লোহানী ছিলেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেশ সক্রিয় । ষাটের দশকের শুরুতে পাকিস্তান সরকারের রবীন্দ্রনাথ বিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলো। ১৯৬২ সালে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। এরপর পাঁচ বছরের মাথায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি, যাতে সক্রিয় ছিলেন আলতাফ মাহমুদ সহ আরও অনেকে প্রথিতযশা শিল্পী। ষাটের দশকের শেষ দিকে যোগ দেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপে এবং সক্রিয় হন আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনে। ওই সময় পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনে শিল্পীদের সংগঠিত করার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে যোগ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। সে সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ বেতারের পরিচালকের দায়িত্ব পান। ” ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ও গণতন্ত্রের জন্যও কামাল লোহানী ভূমিকা রেখেছিলেন।

 রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বাইরে কামাল লোহানীর দীর্ঘ পেশাগত জীবন ছিলো সাংবাদিকতায়। কাজ করেছেন  দৈনিক আজাদসহ অনেকগুলো সংবাদপত্রে। কাজের পাশাপাশি নেতৃত্ব দিয়েছে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোতেও। “ব্যক্তিগত জীবনে সৎ একজন মানুষ। দেশপ্রেমের পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণ। সাংবাদিকতা করেছেন কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা তিনি সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন।  সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে একুশে পদক পান কামাল লোহানী।