Dhaka ১১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে রাজবাড়ী জুট মিলের উৎপাদন : করোনার দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৬:০৩:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০
  • / 427

জনতার আদালত অনলাইন॥  রাজবাড়ী জুট মিল পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এখানে উন্নত মানের পাটের সুতা এবং  ডাইভার্সিফাইড প্রোডাক্ট জুট ক্লথ(চট) ও ব্যাগ উৎপাদন হয়ে থাকে।  উৎপাদিত পণ্যের পুরোটাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে করোনা ভাইরাসের এ মহামারির সময় তাদের এ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ও ব্যবসায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। তারপরও ১ মাস বন্ধ থাকার পর সরকার ঘোষিত সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুট মিলের উৎপাদন আবার শুরু হয়েছে। করোনা কালীন বিভিন্ন  সমস্যা থাকলেও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতনাদি সময়মত পরিশোধ সহ সব ধরনের সুবিধা দিয়ে আসছেন মিল কর্তৃপক্ষ।

২০০৮ সালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুরে স্থাপিত জুটমিলটি ২০০৯ সালে পাটজাত পন্য উৎপাদন শুরু করে। এর আয়তন বর্তমানে ১১ একর এর উর্র্ধ্বে এবং ধীরে ধীরে এ জুটমিলের পরিধি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। মিলের সামনের দু-পাশে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন ,ফল ও ফুলের গাছ রোপন, লেক তৈরী  এবং সুন্দর একটি দ্বিতল কাচের তৈরী মসজিদ নির্মান করা হয়েছে। এতে রাজবাড়ী জুটমিলের নান্দনিকতা বেড়েছে সেই সাথে বেড়েছে জেলার সুনামও। মসজিদটি সকল ধর্মপ্রান মুসলমানদের জন্য রয়েছে উন্মুক্ত। বর্তমানে মিলটিতে তিনটি ইউনিট রয়েছে, যেখানে উৎপাদিত হয়-ইয়ার্ণ হাই কোয়ালিটি, হেসিয়ান সেকিং ইয়ার্ণ ,হেসিয়ান সিবিসি ক্লথ,সিআরটি,সিআর এক্স ,সিআরপি,এক্স মিনিস্টার ,সিবিসি ক্লথ,ফুল ব্রাইট হেসিয়ান ক্লথ এবং ফুলব্রাইট এশিয়ান ব্যাগ ও কালার ইয়ার্ণ পাটজাত পন্য। যার পুরোটাই বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

যার পুরোটাই, ইউএস ,ইরান ,হল্যান্ড,নেদারল্যান্ড ও তার্কিসহ বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত পাট পন্য রপ্তানি করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানটিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের আগে প্রতিদিন ৭৫ থেকে ৮০ মেঃটন উপকরন উৎপাদন হলেও বর্তমানে শ্রমিক কর্মচারী সংকট ও বিশ্ব বাজারে কোভিড-১৯ সংক্রমনের কারনে চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় আগের তুলনায় উৎপাদনে ভাটা পরেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপাদন বাড়ানোর জোর প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমানে এ জুট মিলে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক ,কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছে।

শ্রমিক ও কর্মচারীরা বলেন , রাজবাড়ী জুটি মলটি করোনা ভাইরাসের কারনে ১ মাস বন্ধ ছিল। মিলটি খোলার পর এখানে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে মিলে প্রবেশ এবং সামাজিক দুরত্ব  রেখে উৎপাদন কাজ করতে হয় তাদের। স্বাস্থ্য বিধি মানার সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছে কতৃপক্ষ।  তবে করোনা ভাইরাসের কারনে নানা সমস্যা থাকলেও এ পর্যন্ত মিল কতৃপক্ষ তাদের পারিশ্রমিক বকেয়া রাখেনি। এখানে কাজ করে তারা তাদের পরিবার নিয়ে ভালো আছেন বলে জানান।

রাজবাড়ী জুটমিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মকদুম আহম্মেদ পলাশ বলেন, যেহেতু তাদের উৎপাদিত পাটজাত দ্রব্য পুরোটাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। তাই বিশ্ব করোনাকালীন এ সময়ে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছ্।ে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে থেকেও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তবে এ মিলের উৎপাদন আগের চাইতে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। সবমিলিয়ে করোনা ভাইরাসের এ অসংগতি কাটিয়ে উঠতে এবং দেশের অর্থনিতির চাকা সচল রাখতে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক দিক ঠিক রেখে ঘুরে দ্বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে এতে সরকারের আরো বেশি সহযোগীতায় প্রয়োজন বলে মনে করেন কতৃপক্ষ।

রাজবাড়ী জুটমিলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আলী আহম্মেদ বলেন, রাজবাড়ী জুট মিলস লিঃ শতভাগ রপ্তানি মুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময়ে সরকার ঘোষিত সাধারন ছুটির সময় প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন কার্যক্রম ১ মাস বন্ধ রাখা হয়েছিল। সরকারের নির্দেশনায় শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি মেনে এ মিলের উৎপাদন প্রক্রিয়া আবার শুরু করেছেন। তবে  শ্রমিক উপস্থিতি কম ও রপ্তানি চাহিদা ঘাটতির কারনে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন নেমে এসেছে আগের চাইতে প্রায় অর্ধেকে। তাদের উৎপাদিত পাটজাত পন্য ইরান ,তার্কিসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত করে শ্রমিক কর্মচারীদের কাজে নিয়োজিত করছেন প্রতিষ্ঠানটি।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে রাজবাড়ী জুট মিলের উৎপাদন : করোনার দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৬:০৩:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০

জনতার আদালত অনলাইন॥  রাজবাড়ী জুট মিল পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এখানে উন্নত মানের পাটের সুতা এবং  ডাইভার্সিফাইড প্রোডাক্ট জুট ক্লথ(চট) ও ব্যাগ উৎপাদন হয়ে থাকে।  উৎপাদিত পণ্যের পুরোটাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে করোনা ভাইরাসের এ মহামারির সময় তাদের এ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ও ব্যবসায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। তারপরও ১ মাস বন্ধ থাকার পর সরকার ঘোষিত সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুট মিলের উৎপাদন আবার শুরু হয়েছে। করোনা কালীন বিভিন্ন  সমস্যা থাকলেও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতনাদি সময়মত পরিশোধ সহ সব ধরনের সুবিধা দিয়ে আসছেন মিল কর্তৃপক্ষ।

২০০৮ সালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুরে স্থাপিত জুটমিলটি ২০০৯ সালে পাটজাত পন্য উৎপাদন শুরু করে। এর আয়তন বর্তমানে ১১ একর এর উর্র্ধ্বে এবং ধীরে ধীরে এ জুটমিলের পরিধি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। মিলের সামনের দু-পাশে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন ,ফল ও ফুলের গাছ রোপন, লেক তৈরী  এবং সুন্দর একটি দ্বিতল কাচের তৈরী মসজিদ নির্মান করা হয়েছে। এতে রাজবাড়ী জুটমিলের নান্দনিকতা বেড়েছে সেই সাথে বেড়েছে জেলার সুনামও। মসজিদটি সকল ধর্মপ্রান মুসলমানদের জন্য রয়েছে উন্মুক্ত। বর্তমানে মিলটিতে তিনটি ইউনিট রয়েছে, যেখানে উৎপাদিত হয়-ইয়ার্ণ হাই কোয়ালিটি, হেসিয়ান সেকিং ইয়ার্ণ ,হেসিয়ান সিবিসি ক্লথ,সিআরটি,সিআর এক্স ,সিআরপি,এক্স মিনিস্টার ,সিবিসি ক্লথ,ফুল ব্রাইট হেসিয়ান ক্লথ এবং ফুলব্রাইট এশিয়ান ব্যাগ ও কালার ইয়ার্ণ পাটজাত পন্য। যার পুরোটাই বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

যার পুরোটাই, ইউএস ,ইরান ,হল্যান্ড,নেদারল্যান্ড ও তার্কিসহ বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত পাট পন্য রপ্তানি করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানটিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের আগে প্রতিদিন ৭৫ থেকে ৮০ মেঃটন উপকরন উৎপাদন হলেও বর্তমানে শ্রমিক কর্মচারী সংকট ও বিশ্ব বাজারে কোভিড-১৯ সংক্রমনের কারনে চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় আগের তুলনায় উৎপাদনে ভাটা পরেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপাদন বাড়ানোর জোর প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমানে এ জুট মিলে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক ,কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছে।

শ্রমিক ও কর্মচারীরা বলেন , রাজবাড়ী জুটি মলটি করোনা ভাইরাসের কারনে ১ মাস বন্ধ ছিল। মিলটি খোলার পর এখানে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে মিলে প্রবেশ এবং সামাজিক দুরত্ব  রেখে উৎপাদন কাজ করতে হয় তাদের। স্বাস্থ্য বিধি মানার সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছে কতৃপক্ষ।  তবে করোনা ভাইরাসের কারনে নানা সমস্যা থাকলেও এ পর্যন্ত মিল কতৃপক্ষ তাদের পারিশ্রমিক বকেয়া রাখেনি। এখানে কাজ করে তারা তাদের পরিবার নিয়ে ভালো আছেন বলে জানান।

রাজবাড়ী জুটমিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মকদুম আহম্মেদ পলাশ বলেন, যেহেতু তাদের উৎপাদিত পাটজাত দ্রব্য পুরোটাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। তাই বিশ্ব করোনাকালীন এ সময়ে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছ্।ে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে থেকেও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তবে এ মিলের উৎপাদন আগের চাইতে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। সবমিলিয়ে করোনা ভাইরাসের এ অসংগতি কাটিয়ে উঠতে এবং দেশের অর্থনিতির চাকা সচল রাখতে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক দিক ঠিক রেখে ঘুরে দ্বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে এতে সরকারের আরো বেশি সহযোগীতায় প্রয়োজন বলে মনে করেন কতৃপক্ষ।

রাজবাড়ী জুটমিলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আলী আহম্মেদ বলেন, রাজবাড়ী জুট মিলস লিঃ শতভাগ রপ্তানি মুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময়ে সরকার ঘোষিত সাধারন ছুটির সময় প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন কার্যক্রম ১ মাস বন্ধ রাখা হয়েছিল। সরকারের নির্দেশনায় শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি মেনে এ মিলের উৎপাদন প্রক্রিয়া আবার শুরু করেছেন। তবে  শ্রমিক উপস্থিতি কম ও রপ্তানি চাহিদা ঘাটতির কারনে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন নেমে এসেছে আগের চাইতে প্রায় অর্ধেকে। তাদের উৎপাদিত পাটজাত পন্য ইরান ,তার্কিসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত করে শ্রমিক কর্মচারীদের কাজে নিয়োজিত করছেন প্রতিষ্ঠানটি।