একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক প্রদ্যুত দাস
- প্রকাশের সময় : ০৬:৫৬:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০২০
- / ১৮০৮ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রদ্যুৎ কুমার দাস নিবেদিতপ্রাণ একজন শিক্ষক হিসেবে ক্রমেই পরিচিত হয়ে উঠছেন। তার উদ্যোগ, তার অনুপ্রেরণা ছাত্রদের কাছে আদর্শ। দীর্ঘ ২৮ বছরের বেশি সময় ধরে ছাত্রদের শিক্ষাদানে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন তিনি। করোনাকালে সবকিছু যখন স্থবির তখন উদ্যোগি হয়ে চালু করেছেন অনলাইন ক্লাস। যেটি ছাত্রদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সাধুবাদ জানিয়েছেন তার সহকর্মীরাও। অনলাইন ক্লাস চালু করার এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষক বাতায়নের ওয়েবসাইটে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করে রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।
রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা প্রদ্যুৎ কুমার দাসের কর্মজীবন শুরু ১৯৯২ সালের সিলেট জেলার কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৯৬ সালে বদলি হয়ে আসেন রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। ক্রমেই ছাত্রদের প্রিয় শিক্ষক হয়ে ওঠেন তিনি। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, বিতর্কসহ সহশিক্ষা কার্যক্রমে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন তিনি। ২০১৮ সালে শিক্ষক বাতায়নের সেরা কনটেন্ট নির্মাতা নির্বাচিত হন। পরে বছর ২০১৯ সালে নির্বাচিত ডিস্ট্রিক এম্বাসেডর। দেশে করোনা দুর্যোগ শুরু হওয়ার পর তিনি নিজে উদ্যোগি হয়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে নিয়ে ২২০টি কর্মহীন পরিবারের মাঝে দুই দফা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। দীর্ঘ সময় পাঠদান বন্ধ থাকায় উদ্যোগ নেন অনলাইনে ক্লাস নেয়ার। ফেসবুকে Rajbari govt. high school online classes নামে একটি পেজ খুলে গত ৯ মে থেকে পরিচালিত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১টা পর্যন্ত পাঁচটি ক্লাস নেয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রমে বর্তমানে বিদ্যালয়ের ১৭ জন শিক্ষক যুক্ত আছেন। অনলাইন ক্লাস চালু হওয়ার পর শিক্ষক বাতায়নের ওয়েবসাইটে ক্লাসের লিংক পাঠানো হয়। যা শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষক বাতায়নে সর্বোচ্চ স্কোর করে। বর্তমানে সারা দেশের মধ্যে রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে।
প্রদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে এই পেশায় যুক্ত হয়েছি। ভালো কাজের মাধ্যমে আমার বিদ্যালয়কে এবং আমার জেলাকে পরিচিত করাতে পারলেই আমি খুশী। আর সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা। তিনি জানান, অনলাইন ক্লাস চালু করতে গিয়ে শুরুতে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। ক্লাসরুমে ছাত্রদের সামনে ক্লাস নেয়া আর ছাত্রহীন ক্লাসে ক্যামেরার সামনে ক্লাস নেয়ার মধ্যে বিস্তর তফাৎ। তবে সকলের অংশগ্রহণে এবং আন্তরিক সহযোগিতায় সে সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠেছি। এখন বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ক্লাস নেয়ার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা আক্তারও এব্যাপারে আমাকে যথেষ্ঠ সহযোগিতা করেছেন।