Dhaka ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মস্থলগামী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ক্রমশঃ বাড়ছে

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪৮:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০
  • / ১৩৭৬ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ ফিরতে শুরু করেছে কর্মস্থলে। গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যবিধি  না মেনে ব্যাক্তিগত গাড়ি ও বিভিন্ন উপায়ে আসা জন¯্রােত শুরু হয়েছে দৌলতদিয়া ঘাটে। কর্তৃপক্ষ ভিড় সামল দিতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকারী সকল ফেরি চালু করেছে।

জান যায়, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে দীর্ঘদিন ধরে সীমিত আকারে ফেরি সার্ভিস চালু রেখেছিল। এম্বুলেন্স ও জরুরী পন্যবাহি যানবাহন পারাপারে ২ থেকে ৫ টি ফেরি চালু রাখা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে বাড়তে থাকে ঢাকাগামী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ। গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদ্যাপন শেষে দক্ষিণাঞ্চল থেকে সড়ক পথে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরতে শুরু করে মানুষ। সময় বাড়ার সাথে সাথে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে কর্মজীবী হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ শুক্রবার দুপুর থেকে নৌরুটের সকল ফেরি চালু করে।

দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিন দেখা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা ভেঙে ভেঙে মাহেন্দ্র, অটোরিকশা, ভ্যান ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে করে দৌলতদিয়া ঘাটে আসছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে ওই সব ছোট গাড়ির চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে চার-পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। করোনা প্রতিরোধে করণীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে হাজার হাজার যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন।

সাতক্ষীরা থেকে নানা উপায়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা যাত্রী আনিসুর রহমান জানান, করোনা ভাইরাসের প্রভাব শুরুতেই পরিবার নিয়ে অনেক আগেই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আগামী রবিবার থেকে অফিস খুলবে। তাই একদিন আগেই ঢাকায় ফিরে যাচ্ছি। দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে একদিকে যেমন ৫/৬ গুণ বেশী টাকা খরচ হয়েছে। সময়ও লেগেছে অনেক। গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় গন্তব্যে পৌছানেই উদ্দেশ্য থাকে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মাথায় রাখা অসম্ভব বলে তিনি জানান।

গার্মেন্টস কর্মী নাজমা আক্তার জানান, পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করে ঢাকায় ফিরছি, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিভিন্ন যানবাহনে অনেক গাদাগাদি করে তিন-চার গুণ বেশী ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ঘাটে এসে পৌঁছেছি। করোনার ভয়ে কাজে যোগ না দিয়ে ঘরে বসে থাকলে খাব কি? ঘরে বসে থাকলে তো আর ভাত পেটে যাবে না, কাজ করেই খেতে হবে। তাই করোনা নিয়ে ভাবার সময় এখন আর নাই। অফিস দুইদিন আগে খুলেছে, এখনো অফিসে যেতে পারিনি, চাকরী আছে কি-না সন্দেহ। চাকরী না থাকলে ছেলে মেয়েদের নিয়ে পথে বসতে হবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি বলেন, যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে সাতটি ফেরি চলাচল করেছে। কিন্তু দুপুরের পর থেকে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় নৌরুটের ১৩টি ফেরিই চালু করা হয়েছে। এছাড়া দৌলতদিয়া ৬টি ফেরি ঘাটের মধ্যে ৪টি ঘাট দিয়ে যানবাহন উঠা-নামা করছে। অপর দু’টি ঘাট পানি বৃদ্ধির ফলে বন্ধ আছে। তবে এতে যানবাহন পারাপারে কোন সমস্যা হচ্ছে না।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মস্থলগামী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ক্রমশঃ বাড়ছে

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৮:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০

জনতার আদালত অনলাইন : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ ফিরতে শুরু করেছে কর্মস্থলে। গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যবিধি  না মেনে ব্যাক্তিগত গাড়ি ও বিভিন্ন উপায়ে আসা জন¯্রােত শুরু হয়েছে দৌলতদিয়া ঘাটে। কর্তৃপক্ষ ভিড় সামল দিতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকারী সকল ফেরি চালু করেছে।

জান যায়, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে দীর্ঘদিন ধরে সীমিত আকারে ফেরি সার্ভিস চালু রেখেছিল। এম্বুলেন্স ও জরুরী পন্যবাহি যানবাহন পারাপারে ২ থেকে ৫ টি ফেরি চালু রাখা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে বাড়তে থাকে ঢাকাগামী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ। গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদ্যাপন শেষে দক্ষিণাঞ্চল থেকে সড়ক পথে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরতে শুরু করে মানুষ। সময় বাড়ার সাথে সাথে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে কর্মজীবী হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ শুক্রবার দুপুর থেকে নৌরুটের সকল ফেরি চালু করে।

দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিন দেখা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা ভেঙে ভেঙে মাহেন্দ্র, অটোরিকশা, ভ্যান ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে করে দৌলতদিয়া ঘাটে আসছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে ওই সব ছোট গাড়ির চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে চার-পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। করোনা প্রতিরোধে করণীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে হাজার হাজার যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন।

সাতক্ষীরা থেকে নানা উপায়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা যাত্রী আনিসুর রহমান জানান, করোনা ভাইরাসের প্রভাব শুরুতেই পরিবার নিয়ে অনেক আগেই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আগামী রবিবার থেকে অফিস খুলবে। তাই একদিন আগেই ঢাকায় ফিরে যাচ্ছি। দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে একদিকে যেমন ৫/৬ গুণ বেশী টাকা খরচ হয়েছে। সময়ও লেগেছে অনেক। গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় গন্তব্যে পৌছানেই উদ্দেশ্য থাকে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মাথায় রাখা অসম্ভব বলে তিনি জানান।

গার্মেন্টস কর্মী নাজমা আক্তার জানান, পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করে ঢাকায় ফিরছি, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিভিন্ন যানবাহনে অনেক গাদাগাদি করে তিন-চার গুণ বেশী ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ঘাটে এসে পৌঁছেছি। করোনার ভয়ে কাজে যোগ না দিয়ে ঘরে বসে থাকলে খাব কি? ঘরে বসে থাকলে তো আর ভাত পেটে যাবে না, কাজ করেই খেতে হবে। তাই করোনা নিয়ে ভাবার সময় এখন আর নাই। অফিস দুইদিন আগে খুলেছে, এখনো অফিসে যেতে পারিনি, চাকরী আছে কি-না সন্দেহ। চাকরী না থাকলে ছেলে মেয়েদের নিয়ে পথে বসতে হবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি বলেন, যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে সাতটি ফেরি চলাচল করেছে। কিন্তু দুপুরের পর থেকে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় নৌরুটের ১৩টি ফেরিই চালু করা হয়েছে। এছাড়া দৌলতদিয়া ৬টি ফেরি ঘাটের মধ্যে ৪টি ঘাট দিয়ে যানবাহন উঠা-নামা করছে। অপর দু’টি ঘাট পানি বৃদ্ধির ফলে বন্ধ আছে। তবে এতে যানবাহন পারাপারে কোন সমস্যা হচ্ছে না।