Dhaka ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে অসময়ের বন্যায় পানিবন্দী ৪ হাজার পরিবার ॥ বন্ধ ৮ প্রাথমিক বিদ্যালয় ॥ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:১৩:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০১৯
  • / ১৩৮০ জন সংবাদটি পড়েছেন


জনতার আদালত অনলাইন ॥ অসময়ের বন্যায় রাজবাড়ীতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় চার হাজার পরিবার। বন্ধ হয়ে গেছে আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৩৭০ হেক্টর জমির খেতের ফসল ডুবে গেছে বন্যার পানিতে। চরম দুর্ভোগে রয়েছে পানিবন্দী মানুষেরা। পদ্মার পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রমতে, বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে পদ্মার পানি এক সে.মি বাড়লেও এখনও বিপদসীমার নীচে রয়েছে। তবে পাংশার সেনগ্রামে ৯ সে.মি এবং দৌলতদিয়ার ভাগ্যকুল পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অসময়ে পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী ফসলি জমিসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে যাতায়াতের রাস্তা, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়িসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা। গবাদি পশুর খাবার সংকট দেখা দিয়েছে নিম্নাঞ্চলগুলোতে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর, গোদার বাজার, ধুঞ্চি, সিলিমপুর, বরাট ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার পানি বন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
বন্যা কবলিত মানুষেরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী হয়ে থাকলেও এখন পর্যন্তকোনো ধরনের সাহাযড্য সহযোগিতা পাননি। এছাড়া বন্যার কারণে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। বাড়ির চারিদিকে পানি ওঠায় চলাফেরাও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন তারা চলাচলের জন্য নৌকা ব্যবহার করছেন।
এদিকে বন্যার কারণে জেলার আটটি বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলো হলো রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালুখালী উপজেলার হরিণডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরিণবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৃষ্ণনগর আব্দুল কুদ্দুস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম হরিণবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া গোয়ালন্দ উপজেলায় একটি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ আছে।
রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে আটটি বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পানি কমে গেলে বিশেষ ক্লাসের মাধ্যমে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া হবে।
জেলায় বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৩৭০ হেক্টর জমির খেতের ফসল। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, কৃষকরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ফসলের চাষ করেছিল। অসময়ের বন্যায় তা নষ্ট হয়ে গেল। ধনিয়া, মরিচ, বেগুন, রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ৬৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। ইতিমধ্যে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া গোয়ালন্দে বন্যা দুর্গতদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ীতে অসময়ের বন্যায় পানিবন্দী ৪ হাজার পরিবার ॥ বন্ধ ৮ প্রাথমিক বিদ্যালয় ॥ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশের সময় : ০৭:১৩:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০১৯


জনতার আদালত অনলাইন ॥ অসময়ের বন্যায় রাজবাড়ীতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় চার হাজার পরিবার। বন্ধ হয়ে গেছে আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৩৭০ হেক্টর জমির খেতের ফসল ডুবে গেছে বন্যার পানিতে। চরম দুর্ভোগে রয়েছে পানিবন্দী মানুষেরা। পদ্মার পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রমতে, বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে পদ্মার পানি এক সে.মি বাড়লেও এখনও বিপদসীমার নীচে রয়েছে। তবে পাংশার সেনগ্রামে ৯ সে.মি এবং দৌলতদিয়ার ভাগ্যকুল পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অসময়ে পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী ফসলি জমিসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে যাতায়াতের রাস্তা, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়িসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা। গবাদি পশুর খাবার সংকট দেখা দিয়েছে নিম্নাঞ্চলগুলোতে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর, গোদার বাজার, ধুঞ্চি, সিলিমপুর, বরাট ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার পানি বন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
বন্যা কবলিত মানুষেরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী হয়ে থাকলেও এখন পর্যন্তকোনো ধরনের সাহাযড্য সহযোগিতা পাননি। এছাড়া বন্যার কারণে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। বাড়ির চারিদিকে পানি ওঠায় চলাফেরাও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন তারা চলাচলের জন্য নৌকা ব্যবহার করছেন।
এদিকে বন্যার কারণে জেলার আটটি বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলো হলো রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালুখালী উপজেলার হরিণডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরিণবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৃষ্ণনগর আব্দুল কুদ্দুস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম হরিণবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া গোয়ালন্দ উপজেলায় একটি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ আছে।
রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে আটটি বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পানি কমে গেলে বিশেষ ক্লাসের মাধ্যমে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া হবে।
জেলায় বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৩৭০ হেক্টর জমির খেতের ফসল। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, কৃষকরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ফসলের চাষ করেছিল। অসময়ের বন্যায় তা নষ্ট হয়ে গেল। ধনিয়া, মরিচ, বেগুন, রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ৬৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। ইতিমধ্যে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া গোয়ালন্দে বন্যা দুর্গতদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।