Dhaka ০৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীর মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের একাংশ নদীতে

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • / ১২৪১ জন সংবাদটি পড়েছেন


জনতার আদালত অনলাইন ॥ গত কয়েক দিনের পদ্মার ভাঙনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বৃস্পতিবার রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান খানসহ শিক্ষা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অবশিষ্ট অংশ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিংয়ের কাজ করে চলেছে।
জানা যায়, ওই ভবনটি থেকে নদী ১৫ ফুট দূরে ছিল। বালুর বস্তা দিয়ে ঠেকানো ছিল ভবনটি। গত ২২ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই সেখান থেকে তিনটি বড় মেহগনি গাছ নদীতে চলে যায়। নদী ভাঙতে ভাঙতে বালুর বস্তাগুলোও দেবে পানিতে তলিয়ে যায়। একবারে বিদ্যালয় ভবনের দেয়ালের কাছে চলে আসে নদী। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও শিক্ষা অফিসকে জানায়। পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর থেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করে ভবনটিকে রক্ষার চেষ্টা করে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ভাঙন কবলিত ১২০ মিটার এলাকার ৬০ মিটার অংশকে জরুরী ঘোষণা করে ২৫০ কেজি ওজনের বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করা হয়। মোট ছয় হাজার তিনশটি জিও ব্যাগ ফেলতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। একাজে নিযুক্ত ঠিকাদার ফারুক আহমেদ জানান, ইতিমধ্যে সাড়ে চার হাজার বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। তবে নদীর গতিপথ বদল এবং নদী অনেক গভীর হওয়ায় ভাঙন ঠেকানো যায়নি। ভাঙন রোধে তারা এখনও ডাম্পিংয়ের কাজ করে চলেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী কৃষ্ণেন্দু বিকাশ সরকার জানান, বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার জন্য তিন মিটার গাইড ওয়াল দিয়েছিলেন। তারপরও ভবনটি বসে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে তারা রাতদিন পরিশ্রম করেছেন। তাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেদায়েতুল ইসলাম জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের পিয়নের ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিক ছুটে এসে দেখেন। ভবনটির একাংশ নদীতে দেবে গেছে। সাথে সাথে সবাইকে বিষয়টি জানান। রাত আড়াইটা পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়েই অবস্থান করেন। ভবনটিকে বিদ্যালয়ের সামনের খোলা জায়গায় সরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের অপর ভবনে কোনামতে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহ সভাপতি আনিসুর রহমান মৃধা জানান, যে করেই হোক বিদ্যালয়টি রক্ষা করতে হবে। পরিদর্শনে এসে সকলেই আশ্বাস দিয়েছেন বিদ্যালয়টি রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা ে নেয়া হবে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম জানান, পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে ডাম্পিং করার পরও বিদ্যালয়ের একাংশ ভেঙে গেছে। ভবনটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।
বিদ্যালয়ের অপর ভবন ঝুঁকির মুখে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভাঙন তীব্র হবে না এবং ভবনটি রক্ষা পাবে বলে আমরা আশাবাদী।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ীর মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের একাংশ নদীতে

প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯


জনতার আদালত অনলাইন ॥ গত কয়েক দিনের পদ্মার ভাঙনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বৃস্পতিবার রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান খানসহ শিক্ষা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অবশিষ্ট অংশ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিংয়ের কাজ করে চলেছে।
জানা যায়, ওই ভবনটি থেকে নদী ১৫ ফুট দূরে ছিল। বালুর বস্তা দিয়ে ঠেকানো ছিল ভবনটি। গত ২২ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই সেখান থেকে তিনটি বড় মেহগনি গাছ নদীতে চলে যায়। নদী ভাঙতে ভাঙতে বালুর বস্তাগুলোও দেবে পানিতে তলিয়ে যায়। একবারে বিদ্যালয় ভবনের দেয়ালের কাছে চলে আসে নদী। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও শিক্ষা অফিসকে জানায়। পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর থেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করে ভবনটিকে রক্ষার চেষ্টা করে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ভাঙন কবলিত ১২০ মিটার এলাকার ৬০ মিটার অংশকে জরুরী ঘোষণা করে ২৫০ কেজি ওজনের বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করা হয়। মোট ছয় হাজার তিনশটি জিও ব্যাগ ফেলতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। একাজে নিযুক্ত ঠিকাদার ফারুক আহমেদ জানান, ইতিমধ্যে সাড়ে চার হাজার বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। তবে নদীর গতিপথ বদল এবং নদী অনেক গভীর হওয়ায় ভাঙন ঠেকানো যায়নি। ভাঙন রোধে তারা এখনও ডাম্পিংয়ের কাজ করে চলেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী কৃষ্ণেন্দু বিকাশ সরকার জানান, বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার জন্য তিন মিটার গাইড ওয়াল দিয়েছিলেন। তারপরও ভবনটি বসে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে তারা রাতদিন পরিশ্রম করেছেন। তাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেদায়েতুল ইসলাম জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের পিয়নের ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিক ছুটে এসে দেখেন। ভবনটির একাংশ নদীতে দেবে গেছে। সাথে সাথে সবাইকে বিষয়টি জানান। রাত আড়াইটা পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়েই অবস্থান করেন। ভবনটিকে বিদ্যালয়ের সামনের খোলা জায়গায় সরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের অপর ভবনে কোনামতে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহ সভাপতি আনিসুর রহমান মৃধা জানান, যে করেই হোক বিদ্যালয়টি রক্ষা করতে হবে। পরিদর্শনে এসে সকলেই আশ্বাস দিয়েছেন বিদ্যালয়টি রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা ে নেয়া হবে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম জানান, পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে ডাম্পিং করার পরও বিদ্যালয়ের একাংশ ভেঙে গেছে। ভবনটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।
বিদ্যালয়ের অপর ভবন ঝুঁকির মুখে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভাঙন তীব্র হবে না এবং ভবনটি রক্ষা পাবে বলে আমরা আশাবাদী।