Dhaka ০৯:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে পদ্মায় পানি বাড়ার সাথে বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক॥ শহর রক্ষা বাঁধ ঠেকাতে সাড়ে ৪ লাখ বালুর বস্তা ফেলবে পাউবো

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৩:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯
  • / ১৭২৭ জন সংবাদটি পড়েছেন


জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক। ভাঙন তীব্র হলে হুমকির মুখে পড়বে শহর রক্ষা বাঁধ। ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় সাড়ে চার লাখ বালুর বস্তা ফেলার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার সিলিমপুর থেকে উড়াকান্দা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পয়েন্টে শুরু হয়েছে ভাঙন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রমতে, সিলিমপুর স্কুলের কাছে ২৫ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে উড়াকান্দা এলাকায় তেমন কোনো ভাঙন নেই।
মঙ্গলবার বিকেলে গোদারবাজার এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অন্ততঃ ৪০টি নৌকায় জিও ব্যাগে বালু ভরে সেগুলি ফেলা হচ্ছে নদীতে। সেখানে কাজ করছে কয়েকশ শ্রমিক। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে শত শত ঘরবাড়ি, মসজিদ, বিদ্যালয়, ফসলি জমি সহ বহু স্থাপনা।
গোদারবাজার এলাকার নদী তীরবর্তী বাসিন্দা বানু আক্তার জানান, তার স্বামী নেই। এক ছেলে প্রতিবন্ধী। কোনো মতে সংসার চালান। নদী তীরেই তার বাড়ি। নদীতে ভেঙে গেলে যাওয়ার কোনো জায়গা থাকবে না। সবাইকে গাছতলায় দাঁড়াতে হবে।
একই এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম জানান, গত কয়েক বছর ধরেই তারা বলছেন নদী ভাঙন রোধের কথা। তারা সব সময় আতঙ্কে থাকেন। কখন যেন নদীতে সবকিছু গ্রাস করে নিয়ে যায়। এভাবে উৎকণ্ঠা নিয়ে বসবাস করা খুব কঠিন।
নদী ভাঙন পরিদর্শনে যাওয়া রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, ভাঙন ঠেকাতে ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচটি প্যাকেজের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্যাকেজের কাজ চলমান। বাকী দুটি দু একদিনের মধ্যে শুরু হবে। রাজবাড়ী শহর সংলগ্ন গোদারবাজার থেকে বরাট ইউনিয়নের সোনাকান্দর এলাকা পর্যন্ত প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি নৌকায় ডাম্পিং এর কাজ চলছে। প্রতিদিন চার হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তাদের টার্গেট আছে চার লাখ ৩২ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলার। এতে ভাঙন অনেকটাই রোধ হবে।
প্রসঙ্গত সাত বছর আগে ২০১২ সালে রাজবাড়ী শহর সংলগ্ন গোদারবাজার ঘাট থেকে স্লুইসগেট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙন প্রতিরোধে ৪৭ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ী শহর রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করেছিল রাজবাড়ী পানি উন্ন্য়ন বোর্ড। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়ে কাজটি শেষ হয় ২০১২ সালের জুন মাসে। এর মধ্যে গত কয়েক বছরে নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ১৩শ মিটার এলাকার সিসি ব্লক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এরপর থেকে ভাঙছে নদী। মানুষের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ীতে পদ্মায় পানি বাড়ার সাথে বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক॥ শহর রক্ষা বাঁধ ঠেকাতে সাড়ে ৪ লাখ বালুর বস্তা ফেলবে পাউবো

প্রকাশের সময় : ০৮:২৩:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯


জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক। ভাঙন তীব্র হলে হুমকির মুখে পড়বে শহর রক্ষা বাঁধ। ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় সাড়ে চার লাখ বালুর বস্তা ফেলার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার সিলিমপুর থেকে উড়াকান্দা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পয়েন্টে শুরু হয়েছে ভাঙন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রমতে, সিলিমপুর স্কুলের কাছে ২৫ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে উড়াকান্দা এলাকায় তেমন কোনো ভাঙন নেই।
মঙ্গলবার বিকেলে গোদারবাজার এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অন্ততঃ ৪০টি নৌকায় জিও ব্যাগে বালু ভরে সেগুলি ফেলা হচ্ছে নদীতে। সেখানে কাজ করছে কয়েকশ শ্রমিক। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে শত শত ঘরবাড়ি, মসজিদ, বিদ্যালয়, ফসলি জমি সহ বহু স্থাপনা।
গোদারবাজার এলাকার নদী তীরবর্তী বাসিন্দা বানু আক্তার জানান, তার স্বামী নেই। এক ছেলে প্রতিবন্ধী। কোনো মতে সংসার চালান। নদী তীরেই তার বাড়ি। নদীতে ভেঙে গেলে যাওয়ার কোনো জায়গা থাকবে না। সবাইকে গাছতলায় দাঁড়াতে হবে।
একই এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম জানান, গত কয়েক বছর ধরেই তারা বলছেন নদী ভাঙন রোধের কথা। তারা সব সময় আতঙ্কে থাকেন। কখন যেন নদীতে সবকিছু গ্রাস করে নিয়ে যায়। এভাবে উৎকণ্ঠা নিয়ে বসবাস করা খুব কঠিন।
নদী ভাঙন পরিদর্শনে যাওয়া রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, ভাঙন ঠেকাতে ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচটি প্যাকেজের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্যাকেজের কাজ চলমান। বাকী দুটি দু একদিনের মধ্যে শুরু হবে। রাজবাড়ী শহর সংলগ্ন গোদারবাজার থেকে বরাট ইউনিয়নের সোনাকান্দর এলাকা পর্যন্ত প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি নৌকায় ডাম্পিং এর কাজ চলছে। প্রতিদিন চার হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তাদের টার্গেট আছে চার লাখ ৩২ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলার। এতে ভাঙন অনেকটাই রোধ হবে।
প্রসঙ্গত সাত বছর আগে ২০১২ সালে রাজবাড়ী শহর সংলগ্ন গোদারবাজার ঘাট থেকে স্লুইসগেট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙন প্রতিরোধে ৪৭ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ী শহর রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করেছিল রাজবাড়ী পানি উন্ন্য়ন বোর্ড। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়ে কাজটি শেষ হয় ২০১২ সালের জুন মাসে। এর মধ্যে গত কয়েক বছরে নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ১৩শ মিটার এলাকার সিসি ব্লক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এরপর থেকে ভাঙছে নদী। মানুষের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।