Dhaka 3:03 pm, Sunday, 2 April 2023

বকেয়ার দায়ে জ¦ালানী তেল সরবরাহ বন্ধ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ৭ দিন ধরে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস নেই ॥ রোগী স্থানান্তরে চরম ভোগান্তি

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : 08:35:16 pm, Wednesday, 8 February 2017
  • / 1526 জন সংবাদটি পড়েছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বকেয়ার দায়ে ফিলিং স্টেশন থেকে জ¦ালানী তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় গত সাত দিন ধরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের দুটি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পাচ্ছে না রোগীরা। ফলে রোগী স্থানান্তরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
রাজবাড়ী জেলায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের বাস। যাদের বেশির ভাগই দরিদ্র। এসব মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল। হৃদরোগে আক্রান্ত, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণসহ নানান জটিল রোগী, দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত রোগীকে প্রতিনিয়তই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর অথবা ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। সদর হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স এর ভাড়া কম হওয়ায় দরিদ্র  রোগীদের অনেক সুবিধা হতো। এ্যাম্বুলেন্স না থাকায় রোগী বা তার স্বজনদের অধিক অর্থ ব্যয়ে মাইক্রো অথবা মাহেন্দ্র পরিবহন ভাড়া করে অন্য হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের দুটি এ্যম্বুলেন্সের জন্য জ¦ালানী তেল সরবরাহ করতো রাজবাড়ী ফিলিং স্টেশন। বর্তমানে ফিলিং স্টেশনটি জ¦ালানী তেল বাবদ ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৭৬৮ টাকা বকেয়া পাবে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের কাছে। বকেয়া টাকা ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করতে ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ চিঠি দেয় রাজব্ড়াী সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সেই সঙ্গে টাকা পাওয়া না গেলে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল। ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে টাকা দিতে না পারায় ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। হাসপাতালের সূত্র মতে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন গড়ে স্থানান্তর করতে হয় অন্ততঃ ১২ জন রোগীকে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। দিনের বেলায় রোগীর স্বজনরা হয়তো কোনোভাবে মাইক্রোবাস, অথবা মাহেন্দ্র পরিবহন ভাড়া করে গন্তব্যে যায়। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় রাতের বেলায়। ওই সময় পরিবহন পাওয়া খুবই দুরূহ হয়ে পড়ে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুশীল কুমার রায় বলেন, রাজবাড়ী ফিলিং স্টেশন থেকে চিঠি আসার পর বিষয়টি তিনি রাজবাড়ীর সিভিল সার্জনকে জানান। সিভিল সার্জন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিদিনই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরছেন। তবে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। খুব শীগগীরই বরাদ্দ পাওয়া যেতে পারে। আরএমও বলেন, এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ থাকায় রোগী স্থানান্তরে প্রতিদিন তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত পরশু (রোববার) একজন মুক্তিযোদ্ধাকে জরুরী ভিত্তিতে রেফার্ড করার দরকার হয়ে পড়ে। এ্যাম্বুলেন্স না থাকায় অনেক কষ্টে একটি পরিবহন ভাড়া করে পাঠানো হয়।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. রহিম বকস বলেন, প্রতিদিনই আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। গত ৫ ফেব্রুয়ারি এবং মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে আমি বিষয়টি তুলে ধরেছি। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) বরাবর চিঠি দিতে বলেছেন। আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বকেয়ার দায়ে জ¦ালানী তেল সরবরাহ বন্ধ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ৭ দিন ধরে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস নেই ॥ রোগী স্থানান্তরে চরম ভোগান্তি

প্রকাশের সময় : 08:35:16 pm, Wednesday, 8 February 2017

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বকেয়ার দায়ে ফিলিং স্টেশন থেকে জ¦ালানী তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় গত সাত দিন ধরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের দুটি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পাচ্ছে না রোগীরা। ফলে রোগী স্থানান্তরে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
রাজবাড়ী জেলায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের বাস। যাদের বেশির ভাগই দরিদ্র। এসব মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল। হৃদরোগে আক্রান্ত, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণসহ নানান জটিল রোগী, দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত রোগীকে প্রতিনিয়তই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর অথবা ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। সদর হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স এর ভাড়া কম হওয়ায় দরিদ্র  রোগীদের অনেক সুবিধা হতো। এ্যাম্বুলেন্স না থাকায় রোগী বা তার স্বজনদের অধিক অর্থ ব্যয়ে মাইক্রো অথবা মাহেন্দ্র পরিবহন ভাড়া করে অন্য হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের দুটি এ্যম্বুলেন্সের জন্য জ¦ালানী তেল সরবরাহ করতো রাজবাড়ী ফিলিং স্টেশন। বর্তমানে ফিলিং স্টেশনটি জ¦ালানী তেল বাবদ ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৭৬৮ টাকা বকেয়া পাবে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের কাছে। বকেয়া টাকা ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করতে ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ চিঠি দেয় রাজব্ড়াী সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সেই সঙ্গে টাকা পাওয়া না গেলে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল। ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে টাকা দিতে না পারায় ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। হাসপাতালের সূত্র মতে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন গড়ে স্থানান্তর করতে হয় অন্ততঃ ১২ জন রোগীকে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। দিনের বেলায় রোগীর স্বজনরা হয়তো কোনোভাবে মাইক্রোবাস, অথবা মাহেন্দ্র পরিবহন ভাড়া করে গন্তব্যে যায়। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় রাতের বেলায়। ওই সময় পরিবহন পাওয়া খুবই দুরূহ হয়ে পড়ে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুশীল কুমার রায় বলেন, রাজবাড়ী ফিলিং স্টেশন থেকে চিঠি আসার পর বিষয়টি তিনি রাজবাড়ীর সিভিল সার্জনকে জানান। সিভিল সার্জন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিদিনই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরছেন। তবে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। খুব শীগগীরই বরাদ্দ পাওয়া যেতে পারে। আরএমও বলেন, এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ থাকায় রোগী স্থানান্তরে প্রতিদিন তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত পরশু (রোববার) একজন মুক্তিযোদ্ধাকে জরুরী ভিত্তিতে রেফার্ড করার দরকার হয়ে পড়ে। এ্যাম্বুলেন্স না থাকায় অনেক কষ্টে একটি পরিবহন ভাড়া করে পাঠানো হয়।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. রহিম বকস বলেন, প্রতিদিনই আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। গত ৫ ফেব্রুয়ারি এবং মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে আমি বিষয়টি তুলে ধরেছি। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) বরাবর চিঠি দিতে বলেছেন। আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।