গাছ কাটতে লাগবে অনুমতি, কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
- প্রকাশের সময় : ০৭:৫৩:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
- / 35
সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪-এর অধীনে রোপণকৃত গাছ কাটা যাবে না। আর শহর ও মহাসড়কে লাগানো গাছ কাটতে নিতে হবে অনুমতি। তাই ওই অনুমতি দেওয়ার জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী সাত দিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
এইচআরপিবির প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আদালত রায়ে বলেছেন, দেশে দিন দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় অধিক সংখ্যক গাছ সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। ব্যাপকভাবে গাছ কর্তন করা হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। যা আমাদের বেঁচে থাকার অধিকারকে খর্ব করবে। পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য যে পরিমাণ গাছ বাংলাদেশে থাকা দরকার সে পরিমাণ গাছ নেই। তাই গাছগুলোকে রক্ষা করা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।
রায় পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে গাছ কাটার অনুমতি নেওয়ার জন্য পরিবেশবাদী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সাত দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার ইস্যু করে জেলা প্রশাসক, জেলা পরিবেশ কর্মকর্তা, সরকারি কলেজের অধ্যাপক, সমাজকর্মী, পরিবেশবিদ ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা সিভিল সার্জনকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। যারা জেলা পর্যায়ের গাছ কাটার অনুমতি প্রদান করবেন।
রায়ে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সচিবকে আগামী সাত দিনের মধ্যে সকল জেলা প্রশাসকদের প্রতি সার্কুলার ইস্যু করে উপজেলা পর্যায়ে গাছ কাটার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা, এসি ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যারা উপজেলা পর্যায়ের গাছ কাটার বিষয়ে অনুমতি প্রদান করবে।
এ ছাড়া রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪-এর অধীনে রোপণকৃত গাছ কাটা যাবে না, বরং গাছের সমমূল্যে টাকা রোপণকারীকে প্রদান করতে হবে। তাই সামাজিক বনায়ন বিধিমালায় পরিবর্তন আনায়নেরও নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে রায়ে।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, মূলত ঢাকাসহ সব জেলা, উপজেলা শহর, মহাসড়কের পাশের গাছ, সামাজিক বনায়নের গাছ কাটতে অনুমতি নিতে হবে। তবে গ্রামাঞ্চলে ব্যক্তিগত গাছ কাটতে অনুমতি নেওয়া লাগবে না।
এর আগে সারা দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, পরিবেশ দূষণ বন্ধ করে মানুষের জীবন ও সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) গত বছর রিট করে। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৭ মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এইচআরপিবির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনবীবী মনজিল মোরসেদ। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মন্ডল ও সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।