Dhaka ০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুনি যখন নিজেই খুন!

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশের সময় : ১২:১৭:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 35

উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন লেদ সেফার মিস্ত্রি মো. শরিফ চৌধুরী। ছোট বেলা থেকেই বাউন্ডুলে। কখনো কোথাও স্থির থাকতেন না। মুখ ও হাত চলত সমানতালে।

মারামারি, হানাহানি, খুন-খারাবিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। দৈহিক গড়নে বেশ লম্বা ছিলেন বলে স্থানীয়রা ডাকতেন বিগ-শো-শরিফ বা পাটা শরিফ বলে।

২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাতে গুলি করে হত্যা করা হয় এই শরিফকে। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে পূর্ব ইসলামনগর ঈদগাহ মাঠে পড়ে ছিল তার নিথর দেহ। এ ঘটনায় মামলা এবং পরবর্তীতে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে, স্থানীয় রবিন, গোলজার ও পিচ্চি মনিরের বড় ভাই মঞ্জু খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন শরিফ। মঞ্জু খুনের প্রতিশোধ নিতেই তার ভাইয়েরা গুলি করে শরিফকে খুন করে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শরিফ রাজধানীর চকবাজার থানার পশ্চিম ইসলামবাগের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি কামরাঙ্গীরচর থানার বড়গ্রাম বড় মসজিদের পাশে সাদাফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ওয়ার্কশপ কারখানায় লেট সেফার মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। ইসলামবাগের বাসা থেকেই কাজে যেতেন। প্রতিদিনের ন্যায় ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সকালে কাজে যান। রাতে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে কামরাঙ্গীরচরের পূর্ব ইসলামনগর ঈদগাহ মাঠে কে বা কারা তাকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই হাজি মো. ফরহাদ আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িত মো. রবিউল ইসলাম রবিন ওরফে গুড্ড রবিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তিনি আদালতে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। রবিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো. আবদুল্লা ওরফে পিচ্চি মনির ও মো. হযরত আলী ওরফে ছোট হযরতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গোলজার মাতব্বরের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়। পরে গোলজার আদালতে আত্মসমার্পণ করেন। মনির ও গোলজার সহোদর। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর রবিন, মনির ও গোলজারকে অভিযুক্ত করে এবং হযরত আলীর অব্যাহতি চেয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। কিন্তু বাদী নারাজি দিলে মামলাটির তদন্ত ভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলাটি কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশের দুজন এবং পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) দুজন কর্মকর্তা তদন্ত করেন। সবশেষ তদন্ত করেন পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) পরিদর্শক আবদুল হান্নান। তিনি তার দীর্ঘ তদন্তে শরিফ খুনে জড়িত রবিন, মনির, গোলজার ও হযরত আলীকে আসামি করে ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

খুনি যখন নিজেই খুন!

প্রকাশের সময় : ১২:১৭:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন লেদ সেফার মিস্ত্রি মো. শরিফ চৌধুরী। ছোট বেলা থেকেই বাউন্ডুলে। কখনো কোথাও স্থির থাকতেন না। মুখ ও হাত চলত সমানতালে।

মারামারি, হানাহানি, খুন-খারাবিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। দৈহিক গড়নে বেশ লম্বা ছিলেন বলে স্থানীয়রা ডাকতেন বিগ-শো-শরিফ বা পাটা শরিফ বলে।

২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাতে গুলি করে হত্যা করা হয় এই শরিফকে। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে পূর্ব ইসলামনগর ঈদগাহ মাঠে পড়ে ছিল তার নিথর দেহ। এ ঘটনায় মামলা এবং পরবর্তীতে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে, স্থানীয় রবিন, গোলজার ও পিচ্চি মনিরের বড় ভাই মঞ্জু খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন শরিফ। মঞ্জু খুনের প্রতিশোধ নিতেই তার ভাইয়েরা গুলি করে শরিফকে খুন করে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শরিফ রাজধানীর চকবাজার থানার পশ্চিম ইসলামবাগের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি কামরাঙ্গীরচর থানার বড়গ্রাম বড় মসজিদের পাশে সাদাফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ওয়ার্কশপ কারখানায় লেট সেফার মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। ইসলামবাগের বাসা থেকেই কাজে যেতেন। প্রতিদিনের ন্যায় ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সকালে কাজে যান। রাতে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে কামরাঙ্গীরচরের পূর্ব ইসলামনগর ঈদগাহ মাঠে কে বা কারা তাকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই হাজি মো. ফরহাদ আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িত মো. রবিউল ইসলাম রবিন ওরফে গুড্ড রবিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তিনি আদালতে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। রবিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো. আবদুল্লা ওরফে পিচ্চি মনির ও মো. হযরত আলী ওরফে ছোট হযরতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গোলজার মাতব্বরের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়। পরে গোলজার আদালতে আত্মসমার্পণ করেন। মনির ও গোলজার সহোদর। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর রবিন, মনির ও গোলজারকে অভিযুক্ত করে এবং হযরত আলীর অব্যাহতি চেয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। কিন্তু বাদী নারাজি দিলে মামলাটির তদন্ত ভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলাটি কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশের দুজন এবং পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) দুজন কর্মকর্তা তদন্ত করেন। সবশেষ তদন্ত করেন পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) পরিদর্শক আবদুল হান্নান। তিনি তার দীর্ঘ তদন্তে শরিফ খুনে জড়িত রবিন, মনির, গোলজার ও হযরত আলীকে আসামি করে ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন