Dhaka ১২:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের মৃত্যুবার্ষিকী পালন

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:২২:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১
  • / ১২১২ জন সংবাদটি পড়েছেন

রবিউল হাসান রাজিবঃ ফরিদপুরে পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের ৪৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ১৪ই মার্চ ২০২১ রবিবার সকালে পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের ৪৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ও জসিম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সকাল ৮ টায় জেলা প্রশাসন, জসীম ফাউন্ডেশন, পুলিশ সুপার, আনসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহরের গোবিন্দপুরে কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে কবির বাড়ির আঙ্গিনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।

প্রধান অতিথি বলেন, কবি জসিম উদ্দীন বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য তার সাহিত্য ও কবিতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরেছেন। গ্রাম-বাংলার সেই রূপ সৌন্দর্য অনুধাবন করতে হলে জানতে হবে পল্লী কবি জসীম উদ্দীনকে, পড়তে হবে তার কবিতা ও গ্রন্থাবলী। যিনি গাছের পাশে, নদীর পাড়ে মাটিতে বসে মাটির সাথে মিশে গিয়ে কবিতা, গল্প লিখতেন। পল্লী কবিকে স্মরণ রাখতে কবিকে নিয়ে সারা বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে জসীম ফাউন্ডেশনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক এ সময় জানান, আগামী মে মাসে ঈদের পর জসীম পল্লী মেলা আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে মেলার আয়োজন করা হবে। তবে এবারের মেলাটি ভিন্ন ভাবে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। মেলাটি যেন পল্লী কবি জসীমউদ্দীনকে স্মরণ করিয়ে দেয় সে জন্য মেলা চলাকালীন নিয়মিত কবির জীবনী নিয়ে আলোচনা, কবির রচয়িতা বিভিন্ন গান, কবিতা, গল্প ইত্যাদি উপস্থাপন এর ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া এই জনপদে আরও যে সকল কবি, লেখক বা সাহিত্যিক রয়েছে তাদের নিয়েও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের চিন্তা রয়েছে জেলা প্রশাসনের।

আবু সুফিয়ান চৌধুরী কুশল এর পরিচালনায় সভায় আরো ছিলেন- ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম মোল্লা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তসলিমা আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম রেজা, কবির পুত্র জামাল আনোয়ার, প্রফেসর এম এ সামাদ, সরাকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোশাররফ আলী, ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো, সহযোগী অধ্যাপক রেজভী জামান, জেলা মহিলা লীগের সদস্য সচিব আইভি মাসুদ, অম্বিকাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চৌধুরী বারী প্রমুখ।

১৯০৩ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরতলীর কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন পল্লীকবি জসীম উদ্দীন। কবির পিতার নাম আনছারউদ্দীন, মাতার নাম আমেনা খাতুন। তিনি ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

কবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে। সেখানে প্রাথমিক শেষ করে তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯২১ সালে এসএসসি, ১৯২৪ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে এমএ পাস করেন।

পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ১৯৬১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি। তিন বাল্যজীবন থেকেই কাব্য চর্চা করতেন। তিনি ১৯৭৬ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার, ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট উপাধি, ১৯৭৬ সালে ২১শে পদকে ভূষিত হন।

১৯৩৯ সালে তিনি মমতাজ বেগমকে বিয়ে করেন। তার চার ছেলে কামাল আনোয়ার, জামাল আনোয়ার, ফিরোজ আনোয়ার ও খুরশীদ আনোয়ার এবং দুই মেয়ে হাসনা জসিম উদ্দীন মওদুদ ও আসমা এলাহী।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের মৃত্যুবার্ষিকী পালন

প্রকাশের সময় : ০৭:২২:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১

রবিউল হাসান রাজিবঃ ফরিদপুরে পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের ৪৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ১৪ই মার্চ ২০২১ রবিবার সকালে পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের ৪৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ও জসিম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সকাল ৮ টায় জেলা প্রশাসন, জসীম ফাউন্ডেশন, পুলিশ সুপার, আনসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহরের গোবিন্দপুরে কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে কবির বাড়ির আঙ্গিনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।

প্রধান অতিথি বলেন, কবি জসিম উদ্দীন বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য তার সাহিত্য ও কবিতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরেছেন। গ্রাম-বাংলার সেই রূপ সৌন্দর্য অনুধাবন করতে হলে জানতে হবে পল্লী কবি জসীম উদ্দীনকে, পড়তে হবে তার কবিতা ও গ্রন্থাবলী। যিনি গাছের পাশে, নদীর পাড়ে মাটিতে বসে মাটির সাথে মিশে গিয়ে কবিতা, গল্প লিখতেন। পল্লী কবিকে স্মরণ রাখতে কবিকে নিয়ে সারা বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে জসীম ফাউন্ডেশনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক এ সময় জানান, আগামী মে মাসে ঈদের পর জসীম পল্লী মেলা আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে মেলার আয়োজন করা হবে। তবে এবারের মেলাটি ভিন্ন ভাবে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। মেলাটি যেন পল্লী কবি জসীমউদ্দীনকে স্মরণ করিয়ে দেয় সে জন্য মেলা চলাকালীন নিয়মিত কবির জীবনী নিয়ে আলোচনা, কবির রচয়িতা বিভিন্ন গান, কবিতা, গল্প ইত্যাদি উপস্থাপন এর ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া এই জনপদে আরও যে সকল কবি, লেখক বা সাহিত্যিক রয়েছে তাদের নিয়েও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের চিন্তা রয়েছে জেলা প্রশাসনের।

আবু সুফিয়ান চৌধুরী কুশল এর পরিচালনায় সভায় আরো ছিলেন- ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম মোল্লা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তসলিমা আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম রেজা, কবির পুত্র জামাল আনোয়ার, প্রফেসর এম এ সামাদ, সরাকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোশাররফ আলী, ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো, সহযোগী অধ্যাপক রেজভী জামান, জেলা মহিলা লীগের সদস্য সচিব আইভি মাসুদ, অম্বিকাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চৌধুরী বারী প্রমুখ।

১৯০৩ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরতলীর কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন পল্লীকবি জসীম উদ্দীন। কবির পিতার নাম আনছারউদ্দীন, মাতার নাম আমেনা খাতুন। তিনি ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

কবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে। সেখানে প্রাথমিক শেষ করে তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯২১ সালে এসএসসি, ১৯২৪ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে এমএ পাস করেন।

পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ১৯৬১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি। তিন বাল্যজীবন থেকেই কাব্য চর্চা করতেন। তিনি ১৯৭৬ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার, ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট উপাধি, ১৯৭৬ সালে ২১শে পদকে ভূষিত হন।

১৯৩৯ সালে তিনি মমতাজ বেগমকে বিয়ে করেন। তার চার ছেলে কামাল আনোয়ার, জামাল আনোয়ার, ফিরোজ আনোয়ার ও খুরশীদ আনোয়ার এবং দুই মেয়ে হাসনা জসিম উদ্দীন মওদুদ ও আসমা এলাহী।