Dhaka ১০:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়ালন্দে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতার সাংবাদিক সম্মেলন

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৩৫:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১
  • / ১২২২ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদ্য নির্বাচিত রাজবাড়ী জেলা পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ ইউনুস মোল্লার বিরুদ্ধে রেহেনা আক্তার রানী (৩৫) নামের এক নারীকে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত নারীর স্বামী গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুর আলম মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি করেন।

সোমবার বিকেল ৫ টার দিকে স্থানীয় রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঘটনাটি ঘটে। তবে ইউনুস মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নুর আলমের বাড়ি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন কুমড়াকান্দি গ্রামে। ইউনুস মোল্লা ওই স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

ঘটনার প্রতিবাদ ও ন্যায় বিচারের দাবিতে নুর আলম মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। এর আগে সোমবার রাতেই তিনি গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেখানে ইউনুস মোল্লা (৫২) ছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মান কাজের ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদকে (৫৫) অভিযুক্ত করা হয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ নুর আলম বলেন, তার বাড়ির সাথে রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মান কাজ শুরুর আগে প্রশাসন তার বাড়িতে যাওয়া আসার জন্য ৬ ফুট প্রস্থের জায়গা রেখে কাজ করার কথা বলেছিল। কিন্তু স্কুল কমিটির সভাপতি ইউনুস মোল্লা ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদকে দিয়ে আমার বাড়িতে যাওয়া আসার জন্য ৬ ফুট জায়গা না রেখেই নির্মান কাজ শুরু করেন।

সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে আমি তাদের কাছে এ বিষয়ে  জিজ্ঞেস করলে তাদের সাথে আমার তর্কবিতর্ক হয়। এ সময় আমার স্ত্রী এগিয়ে আসলে বিবাদীদ্বয় আমাদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় আমার স্ত্রী গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে ১নং বিবাদী মোঃ ইউনুস মোল্লা ইট দিয়ে তার বাম পায়ের আঙ্গুলে ও পিঠে আঘাত করে থেতলে দেয়। এতে সে রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় ইউনুস মোল্লা আমার স্ত্রীকে টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি করে।

পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের সহায়তায় আমি আমার স্ত্রীকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করি। আমি এ ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করছি এবং ইউনুস মোল্লাকে তার দলীয় পদ হতে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। সাংবাদিক সম্মেলনে নুর আলমের বাবা-মা ও দুই সন্তান উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনুস মোল্লা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নুর আলম দলীয় প্রভাব খাটিয়ে  স্কুলের ভবন নির্মান কাজের ঠিকাদারের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না পেয়ে সে কাজ বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে আমি সেখানে গেলে তারা আমাকে উল্টো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আলমের বৌ নিজেই হোঁচট খেয়ে পড়ে সামান্য আহত হয়। এ ঘটনাকে সে ভিন্নখাতে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদ উপনির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আলম আমার প্রতিপক্ষ গ্রুপের ইন্ধনে এ সকল করছে। সে দলীয় ক্ষমতার অপব্যাবহার করে সরকারি জায়গায় বাড়ি করে বসবাস করছে। আবার চাঁদা না পেয়ে সরকারি কাজ বন্ধ করে দেয়। এর আগে তারা স্কুলের দুটি গাছ কেটে নেয়। আমি তার বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবির বলেন, প্রাথমিক ভাবে নুর আলমের দেয়া একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

গোয়ালন্দে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতার সাংবাদিক সম্মেলন

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৫:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদ্য নির্বাচিত রাজবাড়ী জেলা পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ ইউনুস মোল্লার বিরুদ্ধে রেহেনা আক্তার রানী (৩৫) নামের এক নারীকে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত নারীর স্বামী গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নুর আলম মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি করেন।

সোমবার বিকেল ৫ টার দিকে স্থানীয় রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঘটনাটি ঘটে। তবে ইউনুস মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নুর আলমের বাড়ি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন কুমড়াকান্দি গ্রামে। ইউনুস মোল্লা ওই স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

ঘটনার প্রতিবাদ ও ন্যায় বিচারের দাবিতে নুর আলম মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। এর আগে সোমবার রাতেই তিনি গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেখানে ইউনুস মোল্লা (৫২) ছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মান কাজের ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদকে (৫৫) অভিযুক্ত করা হয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ নুর আলম বলেন, তার বাড়ির সাথে রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মান কাজ শুরুর আগে প্রশাসন তার বাড়িতে যাওয়া আসার জন্য ৬ ফুট প্রস্থের জায়গা রেখে কাজ করার কথা বলেছিল। কিন্তু স্কুল কমিটির সভাপতি ইউনুস মোল্লা ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদকে দিয়ে আমার বাড়িতে যাওয়া আসার জন্য ৬ ফুট জায়গা না রেখেই নির্মান কাজ শুরু করেন।

সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে আমি তাদের কাছে এ বিষয়ে  জিজ্ঞেস করলে তাদের সাথে আমার তর্কবিতর্ক হয়। এ সময় আমার স্ত্রী এগিয়ে আসলে বিবাদীদ্বয় আমাদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় আমার স্ত্রী গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে ১নং বিবাদী মোঃ ইউনুস মোল্লা ইট দিয়ে তার বাম পায়ের আঙ্গুলে ও পিঠে আঘাত করে থেতলে দেয়। এতে সে রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় ইউনুস মোল্লা আমার স্ত্রীকে টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি করে।

পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের সহায়তায় আমি আমার স্ত্রীকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করি। আমি এ ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করছি এবং ইউনুস মোল্লাকে তার দলীয় পদ হতে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। সাংবাদিক সম্মেলনে নুর আলমের বাবা-মা ও দুই সন্তান উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনুস মোল্লা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নুর আলম দলীয় প্রভাব খাটিয়ে  স্কুলের ভবন নির্মান কাজের ঠিকাদারের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না পেয়ে সে কাজ বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে আমি সেখানে গেলে তারা আমাকে উল্টো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আলমের বৌ নিজেই হোঁচট খেয়ে পড়ে সামান্য আহত হয়। এ ঘটনাকে সে ভিন্নখাতে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদ উপনির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আলম আমার প্রতিপক্ষ গ্রুপের ইন্ধনে এ সকল করছে। সে দলীয় ক্ষমতার অপব্যাবহার করে সরকারি জায়গায় বাড়ি করে বসবাস করছে। আবার চাঁদা না পেয়ে সরকারি কাজ বন্ধ করে দেয়। এর আগে তারা স্কুলের দুটি গাছ কেটে নেয়। আমি তার বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবির বলেন, প্রাথমিক ভাবে নুর আলমের দেয়া একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।