Dhaka ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাল্যবিয়ে রুখে দিচ্ছেন বালিয়াকান্দি ইউএনও

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৬:০৭:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০
  • / ১৩৯৮ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন॥ বাল্যবিয়ে রুখে দিচ্ছেন বালিয়াকান্দির ইউএনও একেএম হেদায়েতুল ইসলাম। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ছুটে যাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার একটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন। অপর একটি বাল্যবিয়ে প্রথমে ঠেকালেও পরে চুপিসারে দেয়ায় বরসহ ৩ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বারমল্লিকা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তিনি এ বিয়ে বন্ধ করেন। বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একএম হেদায়েতুল ইসলাম জানান, ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে রাতেই তিনি ওই বাড়িতে অভিযান চালান। অভিযানের খবর পেয়ে বরপক্ষ পালিয়ে যায়। মেয়েটির বয়স যাচাই করে দেখা গেছে সে এখনও প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয়নি। একারণে বিয়েটি বন্ধ করে প্রাপ্তবয়ষ্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেনা অভিভাবকদের কাছ থেকে এমন মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

অপরদিকে প্রশাসনের নির্দেশনা উপক্ষো করেই চুপিসারে বাল্যবিয়ে করেছিলেন সুরুজ মন্ডল। শেষ রক্ষা হয়নি। যেতে হয়েছে কারাগারে। তার সাথে কনের ভাই  নাজমুল শেখ ও বিয়ের কাজী মো. আব্দুর রহমানও এখন কারাগারে। আর বাল্যবিয়ের সহযোগিতা করায় বাড়িওয়ালা নিজাম শেখকে গুনতে হয়েছে জরিমানা। বুধবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ডহর পাচুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বরকে এক বছর,  কনের ভাই ও কাজীকে ছয় মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়। বর সুরুজ মন্ডল একই গ্রামের জব্বার মন্ডলের ছেলে। বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম আবু দারদা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

জানা গেছে, গত ১২ জুন তারিখে বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের নাজির শেখের মেয়ের সাথে সুরুজ মন্ডলের বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। ওই সময় উপজেলা প্রশাসন জানতে পেরে কনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিয়েটি বন্ধ করে দেন। একই সাথে প্রাপ্ত বয়ষ্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটিকে বিয়ে না দিতে নির্দেশনা দিয়ে আসেন। প্রশাসনের বাধা উপক্ষো করেই গত ১৫ জুন তারিখে বহরপুর ইউনিয়নের দড়িপাড়া এলাকায় নিজাম শেখের বাড়িতে চুপিসারে বিয়ের কার্য সম্পন্ন করা হয়। বিয়ে পড়িয়েছিলেন কাজী মো. আব্দুর রহমান।

বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম আবু দারদা জানান, প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে তারা চুপিসারে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করেছে। বিষয়টি বুধবার বিকেলে আমরা জানতে পারি। এরপর সুরুজ মন্ডলের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় সুরুজ পালিয়ে গেলেও পড়ে তাকে ধরে আনা হয়। বাল্যবিয়ে  করার অপরাধে বর সুরুজ মন্ডলকে এক বছর, কনের ভাই নাজমুল শেখ ও বিয়ের কাজী আব্দুর রহমানকে ছয় মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়। একই সাথে কাজী আব্দুর রহমানের লাইসেন্স বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া বিয়েতে সহযোগিতা করায় নিজাম শেখকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, কনেকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রাপ্ত বয়ষ্ক না হওয়া পর্যন্ত স্বামীর বাড়িতে পাঠানো যাবেনাÑ অভিভাবকদের এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বাল্যবিয়ে রুখে দিচ্ছেন বালিয়াকান্দি ইউএনও

প্রকাশের সময় : ০৬:০৭:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০

জনতার আদালত অনলাইন॥ বাল্যবিয়ে রুখে দিচ্ছেন বালিয়াকান্দির ইউএনও একেএম হেদায়েতুল ইসলাম। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ছুটে যাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার একটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন। অপর একটি বাল্যবিয়ে প্রথমে ঠেকালেও পরে চুপিসারে দেয়ায় বরসহ ৩ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বারমল্লিকা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তিনি এ বিয়ে বন্ধ করেন। বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একএম হেদায়েতুল ইসলাম জানান, ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে রাতেই তিনি ওই বাড়িতে অভিযান চালান। অভিযানের খবর পেয়ে বরপক্ষ পালিয়ে যায়। মেয়েটির বয়স যাচাই করে দেখা গেছে সে এখনও প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয়নি। একারণে বিয়েটি বন্ধ করে প্রাপ্তবয়ষ্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেনা অভিভাবকদের কাছ থেকে এমন মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

অপরদিকে প্রশাসনের নির্দেশনা উপক্ষো করেই চুপিসারে বাল্যবিয়ে করেছিলেন সুরুজ মন্ডল। শেষ রক্ষা হয়নি। যেতে হয়েছে কারাগারে। তার সাথে কনের ভাই  নাজমুল শেখ ও বিয়ের কাজী মো. আব্দুর রহমানও এখন কারাগারে। আর বাল্যবিয়ের সহযোগিতা করায় বাড়িওয়ালা নিজাম শেখকে গুনতে হয়েছে জরিমানা। বুধবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ডহর পাচুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বরকে এক বছর,  কনের ভাই ও কাজীকে ছয় মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়। বর সুরুজ মন্ডল একই গ্রামের জব্বার মন্ডলের ছেলে। বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম আবু দারদা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

জানা গেছে, গত ১২ জুন তারিখে বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের নাজির শেখের মেয়ের সাথে সুরুজ মন্ডলের বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। ওই সময় উপজেলা প্রশাসন জানতে পেরে কনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিয়েটি বন্ধ করে দেন। একই সাথে প্রাপ্ত বয়ষ্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটিকে বিয়ে না দিতে নির্দেশনা দিয়ে আসেন। প্রশাসনের বাধা উপক্ষো করেই গত ১৫ জুন তারিখে বহরপুর ইউনিয়নের দড়িপাড়া এলাকায় নিজাম শেখের বাড়িতে চুপিসারে বিয়ের কার্য সম্পন্ন করা হয়। বিয়ে পড়িয়েছিলেন কাজী মো. আব্দুর রহমান।

বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম আবু দারদা জানান, প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে তারা চুপিসারে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করেছে। বিষয়টি বুধবার বিকেলে আমরা জানতে পারি। এরপর সুরুজ মন্ডলের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় সুরুজ পালিয়ে গেলেও পড়ে তাকে ধরে আনা হয়। বাল্যবিয়ে  করার অপরাধে বর সুরুজ মন্ডলকে এক বছর, কনের ভাই নাজমুল শেখ ও বিয়ের কাজী আব্দুর রহমানকে ছয় মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়। একই সাথে কাজী আব্দুর রহমানের লাইসেন্স বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া বিয়েতে সহযোগিতা করায় নিজাম শেখকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, কনেকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রাপ্ত বয়ষ্ক না হওয়া পর্যন্ত স্বামীর বাড়িতে পাঠানো যাবেনাÑ অভিভাবকদের এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।