গোয়ালন্দে ত্রাণ গ্রহিতাদের ক্ষোভ
- প্রকাশের সময় : ০৭:৩৯:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০২০
- / ১৫১১ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ ‘১৫দিন ধরে কাজ করতে পারছি না, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। এতদিন ঘরে থাকতে বলে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। এই কি তার নমুনা। মাত্র ১০ কেজি চালে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা যায়?’ এভাবে কথাগুলো বলছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সরকারী ত্রাণ গ্রহন করতে আসা কাঠ মিস্ত্রি সহিদুল ইসলাম।
তার সাথে অনেকেই গলা মিলিয়ে বলেন, ‘মাত্র ১০ কেজি চাল নিয়ে আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে যেহেতু বাঁচতে পারব না, তাই এই চাল আমরা গ্রহন করব না। খেয়ে না খেয়ে আমরা যে ভাবে বেঁচে আছি সেই ভাবেই না হয় চলুক। ঘরে চাল নেই, ডাল নেই, তরিতরকারী নেই। এ পরিস্থিতিতে শুধু দশ কেজি চাল দিয়ে আমাদের সাথে উপহাস করা হচ্ছে বলে আমরা মনে করছি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের ২শ পরিবারের জন্য ত্রাণ বিতরণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ সকল পরিবারের মধ্যে রয়েছে দর্জি, রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি ও ভিক্ষুক। মাত্র ১০ কেজি চাল বিতরণ শুরু হলে উপস্থিত ত্রাণ গ্রহীতারা বিক্ষোভ করেন।
এ প্রসঙ্গে ছোট ভাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, ‘১৫ দিনের মাথা মাত্র ২শ পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে চাল প্রদান করায় ত্রাণ গ্রহীতারা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন। অসংখ্য দুঃস্থ পরিবারের মধ্যে ২শ জনের তালিকা করতে গিয়েও আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে।’ এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের জনরোষে পড়তে হচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান, যারা ত্রাণ না নিয়ে চলে গিয়েছিল, তাদেরকে পরে বুঝিয়ে-শুনিয়ে দশ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।
গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মো. নিজাম জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারী সহায়তা অপ্রতুল। সীমিত পরিবারের মধ্যে মাত্র দশ কেজি করে চাল দিয়ে দুঃস্থদের ঘরে বসিয়ে রাখা কষ্টকর হবে। পেটে ক্ষুধা থাকলে তারা ঘরে বসে থাকতে চাইবে না। দুঃস্থ প্রতিটি পরিবারের জন্য অন্তত ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হলে হয়ত তারা বাঁচতে পারবে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু জানান, এ পর্যন্ত যে পরিমান বরাদ্দ পাওয়া গেছে তাতে ১০ কেজি’র উপরে চাল দেয়া কোন ভাবেই সম্ভব না। সবাইকে ধর্য্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহবান জানান তিনি।