Dhaka ১০:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাধীনতা দিবসে জনশূন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ১২:১৯:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ মার্চ ২০২০
  • / ১৪০০ জন সংবাদটি পড়েছেন

 

আব্দুল্লাহ আল মারুফ, আশুলিয়া থেকে ঃ-
২৬শে মার্চ। বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে তাৎপর্যপুর্ন গৌরবোজ্জল একটি দিন। এই দিনেই বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বাঙ্গালী জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধে। এ যুদ্ধে শহীদ হওয়া বাঙ্গালীর শ্রেষ্ঠ সন্তাদের শ্রদ্ধা জানাতে এই দিনটিতে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে।

স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও কোনদিন এমনটি ঘটেনি যেদিন বাঙ্গালী জাতি স্বাধীনতা দিবসে বীরদের শ্রদ্ধার সাথে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে আসেনি এই স্মৃতিসৌধে। তবে, স্বাধীনতার ৪৯ তম বছরে আজকের এই দিনে করোনার প্রভাব পড়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ও।

সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক করোনার প্রভাব ঠেকাতে সারা দেশে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে এ বছর জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব ধরনের লোক সমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে স্বাধীনতা দিবসেও জাতীয় স্মৃতিসৌধ ছিল পুরোটাই ফাঁকা।

স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু আগের দিন রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বর্বরোচিত এক সামরিক অভিযানে মধ্য দিয়ে ঢাকা রূপ নেয় রক্তের নগরীতে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় এ দেশ।

বিশ^জুড়ে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন সহ সকল জাতীয় কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও স্বাধীনতা দিবসের সকল কর্মসূচি বাতিল করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে তাদের কর্মসূচি বাতিল করেছে। তবে এর আগে দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে ধুয়ে মুছে নতুন করে রঙ করা হয়।

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তান ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ২৫ মার্চেও কাল রাতে নিরীহ বাঙ্গালীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামীলীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক দল ও সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করে বাঙ্গালীকে নেতৃত্বশুন্য করা।

সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
এর আগে ‘অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বাংলার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসভায় এক রাজনৈতিক পেক্ষাপট বর্ণনা করে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হবার জন্য ডাক দেন। এ জনসভায় তিনি ঘোষণা দেন, “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম”। যে ভাষন শুনেও আজ বাঙ্গালীর বুকে শিহরন জাগে। আর ওই ভাষনে উদ্ভুদ্ধ হয়ে বাঙ্গালী জাতির লক্ষ লক্ষ বীর সন্তান ঝাপিয়ে পরে স্বাধীনতার যুদ্ধে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

স্বাধীনতা দিবসে জনশূন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ

প্রকাশের সময় : ১২:১৯:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ মার্চ ২০২০

 

আব্দুল্লাহ আল মারুফ, আশুলিয়া থেকে ঃ-
২৬শে মার্চ। বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে তাৎপর্যপুর্ন গৌরবোজ্জল একটি দিন। এই দিনেই বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বাঙ্গালী জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধে। এ যুদ্ধে শহীদ হওয়া বাঙ্গালীর শ্রেষ্ঠ সন্তাদের শ্রদ্ধা জানাতে এই দিনটিতে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে।

স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও কোনদিন এমনটি ঘটেনি যেদিন বাঙ্গালী জাতি স্বাধীনতা দিবসে বীরদের শ্রদ্ধার সাথে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে আসেনি এই স্মৃতিসৌধে। তবে, স্বাধীনতার ৪৯ তম বছরে আজকের এই দিনে করোনার প্রভাব পড়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ও।

সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক করোনার প্রভাব ঠেকাতে সারা দেশে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে এ বছর জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব ধরনের লোক সমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে স্বাধীনতা দিবসেও জাতীয় স্মৃতিসৌধ ছিল পুরোটাই ফাঁকা।

স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু আগের দিন রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বর্বরোচিত এক সামরিক অভিযানে মধ্য দিয়ে ঢাকা রূপ নেয় রক্তের নগরীতে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় এ দেশ।

বিশ^জুড়ে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন সহ সকল জাতীয় কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও স্বাধীনতা দিবসের সকল কর্মসূচি বাতিল করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে তাদের কর্মসূচি বাতিল করেছে। তবে এর আগে দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে ধুয়ে মুছে নতুন করে রঙ করা হয়।

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তান ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ২৫ মার্চেও কাল রাতে নিরীহ বাঙ্গালীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামীলীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক দল ও সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করে বাঙ্গালীকে নেতৃত্বশুন্য করা।

সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
এর আগে ‘অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বাংলার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসভায় এক রাজনৈতিক পেক্ষাপট বর্ণনা করে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হবার জন্য ডাক দেন। এ জনসভায় তিনি ঘোষণা দেন, “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম”। যে ভাষন শুনেও আজ বাঙ্গালীর বুকে শিহরন জাগে। আর ওই ভাষনে উদ্ভুদ্ধ হয়ে বাঙ্গালী জাতির লক্ষ লক্ষ বীর সন্তান ঝাপিয়ে পরে স্বাধীনতার যুদ্ধে।