রাজবাড়ীতে স্বামীর বেধরক পিটুনিতে হাসপাতালে বাক প্রতিবন্ধী স্ত্রী
- প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০১৯
- / ১৬৪৬ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ স্বামীর বেধরক মারধরে আহত হয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই সন্তানের জননী গৃহবধূ সাজেদা বেগম। সে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে মেছোঘাটা এলাকার লিটন মোল্লার স্ত্রী। অভিযুক্ত লিটন মোল্লা জানিয়েছেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বিরক্ত করায় কয়েকটি চড় থাপ্পড় এবং শলা দিয়ে আঘাত করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার পেইং বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে বাক প্রতিবন্ধী সাজেদা বেগম। ইশারা ইঙ্গিতে গৃহবধূ সাদেজা বেগম বোঝাতে চেষ্টা করেন, তার স্বামী প্রায়ই তাকে নির্যাতন করে। অনেক রাতে বাসায় ফেরেন। দুই তিন দিন আগে তার পিঠে, হাতে, ঘাড়ে, পায়ের উরুসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেছে। সেসব স্থানে প্রচন্ড যন্ত্রণা। যে কারণে ভালভাবে শুতে ও বসতে পারছেন না। প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে মাসে পাওয়া ২১শ টাকা টাকাও তার স্বামী নিয়ে যায়।
সাজেদার বড় বোন ছাহেলা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় তার বোনকে কারণে অকারণে লিটন মারধর করে। কয়েকদিন আগে তার বোনকে বেদম মারধর করার পর রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুরে বাবার বাড়ি চলে যায়। তার সারা শরীরে আঘাত করা হয়েছে। তার বোন কথা বলতে পারে না বলে অনেক কিছু বলতে পারছে না।
সাজেদার ভাই রাজ্জাক জানান, ১১ বছর আগে তার বাক প্রতিবন্ধী বোনকে বিয়ে দেন লিটন মোল্লার সাথে। বিয়ের পর থেকে টাকার জন্য তার বোনকে নির্যাতন করা শুরু করে তার স্বামী। এ নিয়ে অনেক সালিস বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু লিটন কোন কিছুই শোনে না। এর মধ্যে সে বিদেশে গিয়ে ফেরত আসে। বিভিন্ন সময়ে টাকার দাবি করে নির্যাতন করতে থাকে তার বোবা বোনের ওপর। লিটন মাদক সেবনও করে। পরিবারে সবার সাথে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
অভিযুক্ত লিটন মোল্লা বলেন, ঘটনা তেমন কিছু নয়। আমার স্ত্রী ছোটখাটো ঘটনাকে অনেক বড় করে ফেলে। আমিও রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। অনেক সহ্য করেছি। আমার স্ত্রীর আচার আচরণে আমি ত্যক্ত বিরক্ত। একারণে সেদিন কয়েকটি চড়থাপ্পড় মেরেছি। আর বিছানার শলা দিয়ে কয়েকটি বারি দিয়েছি। আপনার বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি আগে মাদক সেবন করতাম। কিছুদিন আগে বিদেশ গিয়ে আবার চলে এসেছি।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মানি মন্ডল জানান, বাক প্রতিবন্ধী সাজেদা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওয়ার্ডে দেওয়া দেওয়া হয়েছে। আঘাতের কারণে তার সারা শরীরে ব্যাথা প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হচ্ছে।