Dhaka ০২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে ভাশুর ননদ জা মিলে পেটালেন নারী ইউপি সদস্যকে

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০২:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০১৯
  • / ২৫১৩ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পুকুর থেকে মাছ ধরার পর অভিযোগ করার কারণে ভাশুর নাজমুল বাশার, ননদ গুলশন আরা, জা নীলিমা মিলে নারী ইউপি সদস্য নারগিস রেহেনাকে পিটিয়ে জখম করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের চর খানাখানাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নারগিস রেহেনা খানখানাপুর ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য। তার স্বামীর নাম মৃত আলী হায়দার স্বপন।
জানা গেছে, তার স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি নারী ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলেও নাবালক তিনটি সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বুধবার সকালে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় মহিলা ওয়ার্ডের সার্জারী বিভাগে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে আছেন নারী ইউপি সদস্য রেহেনা নারগসি। ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি। ভালভাবে কথাও বলতে পারছিলেন না। কাতর কণ্ঠে তিনি জানান, ২০১৫ সালে তার স্বামী মারা যান। এরপর ভাশুর নাজমুল বাশার তার শ্বশুরের সব সম্পত্তি একাই ভোগদখল করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে বিচার সালিশ হলেও কারও রায় মানেননি তার ভাশুর। গত বুধবার তার ভাশুর আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা পুকুর থেকে মাছ ধরেন। গত মঙ্গলবার তিনি আদালতে গিয়ে বিষয়টি জানান। আদালত থেকে কাগজ নিয়ে তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় জমা দেন। বিকেলে রাজবাড়ী সদর থানা থেকে দুজন পুলিশ গিয়ে তার ভাশুরকে আদালতের নির্দেশ মেনে চলার জন্য বলে চলে আসেন। তখনই তিনি পুলিশ দুজনকে বলেছিলেন; আপনারা চলে যাবার পর আমার উপর হামলা হতে পারে। পুলিশ চলে যাবার পর তার ভাশুর ভাংচুর শুরু করে। পরে তার ভাশুর, ননদ এবং জা তাকে ইট ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। রাত সাড়ে সাতটার দিকে তার ভাইকে মোবাইলে ফোন করে ডেকে এনে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।
খানখানাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লাল এ প্রসঙ্গে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা কিছুই করতে পারছি না। নারগিস রেহেনার ভাশুর নাজমুল বাশার ওদের সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করতে দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন চালাচ্ছে। আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু কিছুই করতে পারিনি।
তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, আপনারা একটা কিছু করেন। যাতে অসহায় নারী তার নাবালক তিন সন্তান নিয়ে বাঁচতে পারে।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর দুজন পুলিশ সেখানে পাঠানো হয়েছিল। পরে নারী ইউপি সদস্যকে মারধর করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত নাজমুল বাশারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনারা স্পটে এসে তদন্ত করেন। আমি কোনো মারধর করি নাই। বউদের সাথে মারামারি হয়েছে। সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, এগুলো কোর্ট দেখবে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ীতে ভাশুর ননদ জা মিলে পেটালেন নারী ইউপি সদস্যকে

প্রকাশের সময় : ০২:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০১৯

জনতার আদালত অনলাইন ॥ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পুকুর থেকে মাছ ধরার পর অভিযোগ করার কারণে ভাশুর নাজমুল বাশার, ননদ গুলশন আরা, জা নীলিমা মিলে নারী ইউপি সদস্য নারগিস রেহেনাকে পিটিয়ে জখম করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের চর খানাখানাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নারগিস রেহেনা খানখানাপুর ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য। তার স্বামীর নাম মৃত আলী হায়দার স্বপন।
জানা গেছে, তার স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি নারী ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলেও নাবালক তিনটি সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বুধবার সকালে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় মহিলা ওয়ার্ডের সার্জারী বিভাগে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে আছেন নারী ইউপি সদস্য রেহেনা নারগসি। ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি। ভালভাবে কথাও বলতে পারছিলেন না। কাতর কণ্ঠে তিনি জানান, ২০১৫ সালে তার স্বামী মারা যান। এরপর ভাশুর নাজমুল বাশার তার শ্বশুরের সব সম্পত্তি একাই ভোগদখল করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে বিচার সালিশ হলেও কারও রায় মানেননি তার ভাশুর। গত বুধবার তার ভাশুর আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা পুকুর থেকে মাছ ধরেন। গত মঙ্গলবার তিনি আদালতে গিয়ে বিষয়টি জানান। আদালত থেকে কাগজ নিয়ে তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় জমা দেন। বিকেলে রাজবাড়ী সদর থানা থেকে দুজন পুলিশ গিয়ে তার ভাশুরকে আদালতের নির্দেশ মেনে চলার জন্য বলে চলে আসেন। তখনই তিনি পুলিশ দুজনকে বলেছিলেন; আপনারা চলে যাবার পর আমার উপর হামলা হতে পারে। পুলিশ চলে যাবার পর তার ভাশুর ভাংচুর শুরু করে। পরে তার ভাশুর, ননদ এবং জা তাকে ইট ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। রাত সাড়ে সাতটার দিকে তার ভাইকে মোবাইলে ফোন করে ডেকে এনে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।
খানখানাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লাল এ প্রসঙ্গে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা কিছুই করতে পারছি না। নারগিস রেহেনার ভাশুর নাজমুল বাশার ওদের সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করতে দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন চালাচ্ছে। আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু কিছুই করতে পারিনি।
তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, আপনারা একটা কিছু করেন। যাতে অসহায় নারী তার নাবালক তিন সন্তান নিয়ে বাঁচতে পারে।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর দুজন পুলিশ সেখানে পাঠানো হয়েছিল। পরে নারী ইউপি সদস্যকে মারধর করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত নাজমুল বাশারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনারা স্পটে এসে তদন্ত করেন। আমি কোনো মারধর করি নাই। বউদের সাথে মারামারি হয়েছে। সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, এগুলো কোর্ট দেখবে।