Dhaka ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরকীয়া সন্দেহে খুন করা হয় ফল ব্যবসায়ী শাকিলকে রাজবাড়ীর আদালতে ২ আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৩৭:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৮
  • / ১৬৮২ জন সংবাদটি পড়েছেন

SAMSUNG CAMERA PICTURES

জনতার আদালত অনলাইন ॥ স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সন্দেহে ফল ব্যবসায়ী শাকিল মৃধাকে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে এনে জুসের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। গ্রেফতারকৃত দুই আসামি তাদের দোষ স্বীকার করে মঙ্গলবার বিকেলে রাজবাড়ীর আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দিয়েছে। আসামিরা হলো ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর গ্রামের আকমল শেখের ছেলে বক্কার শেখ (২৫) ও বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের অভয়নগর গ্রামের আক্কাস শেখের ছেলে শিপন শেখ (২৫)। এরা দুজনে পরস্পর আত্মীয়। নিহত শাকিল মৃধা ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর গ্রামের আবজাল মৃধার ছেলে। ঘটনার প্রায় দুই মাস পর এ হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচিত হলো। গত ২৮ আগস্ট বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের পোটরা গ্রামের একটি ধানক্ষেতের পাশ থেকে অজ্ঞাত হিসেবে শাকিল মৃধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বালিয়াকান্দি থানা সূত্র জানায়, অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে গত সোমবার বালিয়াকান্দি থেকে প্রথমে শিপনকে গ্রেফতার করার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় লাশটি শাকিল মৃধার। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন গ্রেফতার করা হয় বক্কারকে। পুলিশি জিজ্ঞাাবাদে তারা দুজনেই হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে। বুধবার রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু হাসান খায়রুল্লার আদালতে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দেয় দুই আসামি।
১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে দুই আসামি জানিয়েছে, বক্কারের স্ত্রীর সাথে শাকিল প্রায়ই গল্পগুজব করতো। একদিন শাকিলের সাথে বক্কারের স্ত্রীর আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায় বক্কার। এ থেকে বক্কারের সন্দেহ ছিল শাকিলের সাথে তার স্ত্রীর পরকীয়া চলছে। সেদিনই সে শাকিলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শাকিলকে দিয়ে একটি মোটর সাইকেল ভাড়া করায় বক্কার শেখ। তারা বোয়ালমারি থেকে রওনা হয় বালিয়াকান্দির উদ্দেশ্যে। বালিয়াকান্দি আসার পর শিপনও মোটরসাইকেলে ওঠে। তিন জন বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের ঢোলজানি মোড়ে গিয়ে একটি দোকান থেকে দুটি জুস কেনে। শাকিলের অগোচরে একটি জুসের মধ্যে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে রাখে। তারপর তারা চলে যায় পোটরা গ্রামে। সবাই মোটরসাইকেল থেকে নামার পর ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো জুসটি শাকিলকে খাওয়ায়। অন্যটি তারা দুজন খায়। শাকিল অচেতন হয়ে পড়লে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে ধানক্ষেতে নিয়ে হত্যা করে। হতার সময় শিপন শাকিলের দুই পা ধরে রাখে আর বক্কার গামছা গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে শাকিলের মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারা লাশটি ফেলে রেখে প্লাটিনা মোটর সাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ২৮ আগষ্ট সকালে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করে।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি আজমল হুদা জানান, লাশটি পাওয়ার পর পুলিশ যথারীতি ময়নাতদন্ত করে। এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে। দীর্ঘ দুই মাস পর উন্মোচিত হয় হত্যারহস্য। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

পরকীয়া সন্দেহে খুন করা হয় ফল ব্যবসায়ী শাকিলকে রাজবাড়ীর আদালতে ২ আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৭:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

জনতার আদালত অনলাইন ॥ স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সন্দেহে ফল ব্যবসায়ী শাকিল মৃধাকে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে এনে জুসের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। গ্রেফতারকৃত দুই আসামি তাদের দোষ স্বীকার করে মঙ্গলবার বিকেলে রাজবাড়ীর আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দিয়েছে। আসামিরা হলো ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর গ্রামের আকমল শেখের ছেলে বক্কার শেখ (২৫) ও বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের অভয়নগর গ্রামের আক্কাস শেখের ছেলে শিপন শেখ (২৫)। এরা দুজনে পরস্পর আত্মীয়। নিহত শাকিল মৃধা ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর গ্রামের আবজাল মৃধার ছেলে। ঘটনার প্রায় দুই মাস পর এ হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচিত হলো। গত ২৮ আগস্ট বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের পোটরা গ্রামের একটি ধানক্ষেতের পাশ থেকে অজ্ঞাত হিসেবে শাকিল মৃধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বালিয়াকান্দি থানা সূত্র জানায়, অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে গত সোমবার বালিয়াকান্দি থেকে প্রথমে শিপনকে গ্রেফতার করার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় লাশটি শাকিল মৃধার। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন গ্রেফতার করা হয় বক্কারকে। পুলিশি জিজ্ঞাাবাদে তারা দুজনেই হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে। বুধবার রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু হাসান খায়রুল্লার আদালতে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দেয় দুই আসামি।
১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে দুই আসামি জানিয়েছে, বক্কারের স্ত্রীর সাথে শাকিল প্রায়ই গল্পগুজব করতো। একদিন শাকিলের সাথে বক্কারের স্ত্রীর আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায় বক্কার। এ থেকে বক্কারের সন্দেহ ছিল শাকিলের সাথে তার স্ত্রীর পরকীয়া চলছে। সেদিনই সে শাকিলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শাকিলকে দিয়ে একটি মোটর সাইকেল ভাড়া করায় বক্কার শেখ। তারা বোয়ালমারি থেকে রওনা হয় বালিয়াকান্দির উদ্দেশ্যে। বালিয়াকান্দি আসার পর শিপনও মোটরসাইকেলে ওঠে। তিন জন বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের ঢোলজানি মোড়ে গিয়ে একটি দোকান থেকে দুটি জুস কেনে। শাকিলের অগোচরে একটি জুসের মধ্যে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে রাখে। তারপর তারা চলে যায় পোটরা গ্রামে। সবাই মোটরসাইকেল থেকে নামার পর ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো জুসটি শাকিলকে খাওয়ায়। অন্যটি তারা দুজন খায়। শাকিল অচেতন হয়ে পড়লে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে ধানক্ষেতে নিয়ে হত্যা করে। হতার সময় শিপন শাকিলের দুই পা ধরে রাখে আর বক্কার গামছা গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে শাকিলের মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারা লাশটি ফেলে রেখে প্লাটিনা মোটর সাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ২৮ আগষ্ট সকালে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করে।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি আজমল হুদা জানান, লাশটি পাওয়ার পর পুলিশ যথারীতি ময়নাতদন্ত করে। এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে। দীর্ঘ দুই মাস পর উন্মোচিত হয় হত্যারহস্য। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।