Dhaka ১১:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আসামি আরিফের স্বীকারোক্তী: গালিগালাজ অসহ্য পর্যায়ে চলে যাওয়ায় হত্যা করা হয়

বালিয়াকান্দিতে সালমা হত্যার রহস্য উদঘাটন

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৩৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১০৩৮ জন সংবাদটি পড়েছেন

 রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে স্বামী পরিত্যক্ত সালমা আক্তার হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যায় অভিযুক্ত আরিফকে ঢাকা জেলার সাভার থানার গেন্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে বালিয়াকান্দির গোবিন্দপুর গ্রামের আলাউদ্দিন শেখের ছেলে। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার শামিমা পারভীন জানান, গত ১ নভেম্বর তারিখে গোবিন্দপুর গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে সালমা আক্তারের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সৈয়দ আলী মন্ডল বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর রাজবাড়ীর ডিবি পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে জানতে পারেন আরিফ শেখ এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। গত শুক্রবার তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আরিফের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর ঢাকার সাভার এলাকার গেন্ডা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ সালমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। আরিফ পুলিশকে জানায়, সালমার আচার-আচরণ ছিল উগ্র স্বভাবের। সালমার বাড়ির সীমানায় থাকা রাস্তা দিয়ে কেউ চলাচল করলে তাকে বকাবকি করত। টিউবওয়েল থেকে পানি নিতে গেলেও খারাপ ব্যবহার করত। এসব কারণে আরিফের পরিবারে সবসময়ই অশান্তি লেগে থাকত। ঘটনার দিন সালমার বাড়ির সীমানা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সালমা তাকে গালি দেয়। পাল্টাপাল্টি গালিগালাজের এক পর্যায়ে সে (আরিফ) সালমার গলা চেপে ধরে অজ্ঞান করে। পরে সালমার গলায় থাকা ওড়না দিয়ে শ^াসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করতে লেবু গাছের সাথে পেঁচিয়ে দেয়। গ্রেপ্তার আরিফ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সালমা হত্যাকান্ড ঘটার পর পুলিশ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরু করে। স্বামী পরিত্যক্ত হওয়ায় মামলা মোকর্দমার কারণে হত্যা হয়েছে, নাকি সালমার সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে এসব বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছিল। কিন্তু কোনভাবেই ক্লু পাওয়া যায়নি। হঠাৎ তারা জানতে পারেন ওই এলাকায় আরিফ নামে একজন দীর্ঘদিন ধরে নেই। বিষয়টি তারা আমলে নেন। ওই আরিফের স্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে জানান ঘটনার একদিন আগে সে বাড়ি থেকে চলে গেছে। কিন্তু পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে হত্যাকান্ডের দিনও সে এলাকায় ছিল। হত্যার পর থেকে সে এলাকায় নেই। তাদের সন্দেহ আরও ঘনীভ‚ত হয়। অবশেষে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আরিফের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

 প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মাঝে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব, ডিআইও-১ বিপ্লব দত্ত চৌধুরী, রাজবাড়ীর ডিবি ওসি মো. মফিজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

আসামি আরিফের স্বীকারোক্তী: গালিগালাজ অসহ্য পর্যায়ে চলে যাওয়ায় হত্যা করা হয়

বালিয়াকান্দিতে সালমা হত্যার রহস্য উদঘাটন

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

 রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে স্বামী পরিত্যক্ত সালমা আক্তার হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যায় অভিযুক্ত আরিফকে ঢাকা জেলার সাভার থানার গেন্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে বালিয়াকান্দির গোবিন্দপুর গ্রামের আলাউদ্দিন শেখের ছেলে। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার শামিমা পারভীন জানান, গত ১ নভেম্বর তারিখে গোবিন্দপুর গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে সালমা আক্তারের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সৈয়দ আলী মন্ডল বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর রাজবাড়ীর ডিবি পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে জানতে পারেন আরিফ শেখ এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। গত শুক্রবার তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আরিফের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর ঢাকার সাভার এলাকার গেন্ডা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ সালমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। আরিফ পুলিশকে জানায়, সালমার আচার-আচরণ ছিল উগ্র স্বভাবের। সালমার বাড়ির সীমানায় থাকা রাস্তা দিয়ে কেউ চলাচল করলে তাকে বকাবকি করত। টিউবওয়েল থেকে পানি নিতে গেলেও খারাপ ব্যবহার করত। এসব কারণে আরিফের পরিবারে সবসময়ই অশান্তি লেগে থাকত। ঘটনার দিন সালমার বাড়ির সীমানা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় সালমা তাকে গালি দেয়। পাল্টাপাল্টি গালিগালাজের এক পর্যায়ে সে (আরিফ) সালমার গলা চেপে ধরে অজ্ঞান করে। পরে সালমার গলায় থাকা ওড়না দিয়ে শ^াসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করতে লেবু গাছের সাথে পেঁচিয়ে দেয়। গ্রেপ্তার আরিফ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সালমা হত্যাকান্ড ঘটার পর পুলিশ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরু করে। স্বামী পরিত্যক্ত হওয়ায় মামলা মোকর্দমার কারণে হত্যা হয়েছে, নাকি সালমার সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে এসব বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছিল। কিন্তু কোনভাবেই ক্লু পাওয়া যায়নি। হঠাৎ তারা জানতে পারেন ওই এলাকায় আরিফ নামে একজন দীর্ঘদিন ধরে নেই। বিষয়টি তারা আমলে নেন। ওই আরিফের স্ত্রীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে জানান ঘটনার একদিন আগে সে বাড়ি থেকে চলে গেছে। কিন্তু পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে হত্যাকান্ডের দিনও সে এলাকায় ছিল। হত্যার পর থেকে সে এলাকায় নেই। তাদের সন্দেহ আরও ঘনীভ‚ত হয়। অবশেষে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আরিফের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

 প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মাঝে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব, ডিআইও-১ বিপ্লব দত্ত চৌধুরী, রাজবাড়ীর ডিবি ওসি মো. মফিজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।