Dhaka ১০:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা ভাইরাসে আক্রমণের চেয়ে চাকরিটাই বড়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পাড়ি গার্মেন্টস কর্মীদের

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৫৫:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০২০
  • / ১৪৫৪ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে চলছে লকডাউন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে সরকারের। গার্মেন্ট কর্মীদের কাছে জীবনের চেয়ে চাকরিটাই বোধ হয় বড়। তাই ঝুঁকি নিয়েই ফেরিতে করে নদী পার হয় তারা।
সরকারি ছুটির পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে সব ধরণের গণপরিবহন চলাচল। কিন্তু উল্টো চিত্র দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে। এখানে শনিবার দুপুরের পর থেকে কর্মমূখী মানুষের ঢল নামে। করোনা আতঙ্ক মাথায় নিয়েই সবাই ছুটছেন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারি ছুটি বাড়িয়ে ৪ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত করা হলেও গার্মেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কারখানার শ্রমিকের জন্য ছুটি বাড়েনি। এ জন্য ৫ তারিখ রবিবার কর্মস্থলে যোগ দিতে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ করোনা আতঙ্ক নিয়েই কর্মস্থলে ছুটছেন। তাছাড়া নি¤œ আয়ের এ সকল মানুষের বাড়ীতে বসে থেকে চলারও উপায় নেই। তাইতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কর্মের উদ্দেশ্যে বেড়িয়েছেন বলে কেউ কেউ জানান।
গোয়ালন্দ পৌর এলাকার এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া খাতুন জানান, তিনি নারায়ণঞ্জ একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষনা করার পরপর তিনি বাড়ীতে চলে আসেন। এখন গার্মেন্টস থেকে জানিয়ে দিয়েছেন ৫ তারিখ কাজে যোগ না দিলে চাকরী থাকবে না। তাইতো সন্তানের বাঁধা ও করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই আমাকে অনেক ধকল শিকার করে নারায়ণগঞ্জ যেতে হচ্ছে।
ফরিদপুরের মধুখালী থেকে আসা গার্মেন্টস কর্মী রিনা খাতুন, স্মৃতি আক্তার, সুইটি আক্তার, বুলবুল হোসেন, মোস্তফাসহ অনেকেই জানান, আমরা বড়ই অভাগা। তাইতো সরকার ছুটি বাড়ালেও আমাদের বাড়েনি। সময় মতো কাজে যোগ না দিলে চাকরী বাঁচানো কঠিন। তাইতো জীবনের মায়া ত্যাগ করে মহাসড়কে নানা ধকল সহ্য করে অটোরিক্সা যোগে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত এসেছি। ওপার (পাটুরিয়া ঘাট) থেকে কিভাবে ঢাকা পর্যন্ত পৌছাবো তা জানা নেই।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রণি জানান, সরকারী আদেশে সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌপথে শুধুমাত্র পন্যদ্রব্য পারাপারের জন্য সীমিত আকারে ফেরি চলাচল চালু রাখা হয়েছে। যানবাহন কমে যাওয়ায় এ নৌরুটের ১৬টি ফেরির মধ্যে ১১টি বসিয়ে রেখে আমরা মাত্র ৫টি ফেরি চালু রেখেছি। কিন্তু শনিবার দুপুর থেকে মানুষের চাপে আমরা ঠিকমত পন্যবাহী যানবাহন পারাপার করতে পারছি না। প্রতিটি ফেরিতেই মানুষের উপচে পড়া ভীড়। এরা সকলেই বিভিন্ন গার্মেন্টস ও অন্যান্য ছোট-খাটো কারখানা ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মী। করোনা ঝুঁকি থাকলেও ফেরিতে এদের এভাবে পারাপার ঠেকানো আসলে সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

করোনা ভাইরাসে আক্রমণের চেয়ে চাকরিটাই বড়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পাড়ি গার্মেন্টস কর্মীদের

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৫:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০২০

জনতার আদালত অনলাইন ॥ করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে চলছে লকডাউন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে সরকারের। গার্মেন্ট কর্মীদের কাছে জীবনের চেয়ে চাকরিটাই বোধ হয় বড়। তাই ঝুঁকি নিয়েই ফেরিতে করে নদী পার হয় তারা।
সরকারি ছুটির পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে সব ধরণের গণপরিবহন চলাচল। কিন্তু উল্টো চিত্র দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে। এখানে শনিবার দুপুরের পর থেকে কর্মমূখী মানুষের ঢল নামে। করোনা আতঙ্ক মাথায় নিয়েই সবাই ছুটছেন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারি ছুটি বাড়িয়ে ৪ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত করা হলেও গার্মেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কারখানার শ্রমিকের জন্য ছুটি বাড়েনি। এ জন্য ৫ তারিখ রবিবার কর্মস্থলে যোগ দিতে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ করোনা আতঙ্ক নিয়েই কর্মস্থলে ছুটছেন। তাছাড়া নি¤œ আয়ের এ সকল মানুষের বাড়ীতে বসে থেকে চলারও উপায় নেই। তাইতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কর্মের উদ্দেশ্যে বেড়িয়েছেন বলে কেউ কেউ জানান।
গোয়ালন্দ পৌর এলাকার এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া খাতুন জানান, তিনি নারায়ণঞ্জ একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষনা করার পরপর তিনি বাড়ীতে চলে আসেন। এখন গার্মেন্টস থেকে জানিয়ে দিয়েছেন ৫ তারিখ কাজে যোগ না দিলে চাকরী থাকবে না। তাইতো সন্তানের বাঁধা ও করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই আমাকে অনেক ধকল শিকার করে নারায়ণগঞ্জ যেতে হচ্ছে।
ফরিদপুরের মধুখালী থেকে আসা গার্মেন্টস কর্মী রিনা খাতুন, স্মৃতি আক্তার, সুইটি আক্তার, বুলবুল হোসেন, মোস্তফাসহ অনেকেই জানান, আমরা বড়ই অভাগা। তাইতো সরকার ছুটি বাড়ালেও আমাদের বাড়েনি। সময় মতো কাজে যোগ না দিলে চাকরী বাঁচানো কঠিন। তাইতো জীবনের মায়া ত্যাগ করে মহাসড়কে নানা ধকল সহ্য করে অটোরিক্সা যোগে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত এসেছি। ওপার (পাটুরিয়া ঘাট) থেকে কিভাবে ঢাকা পর্যন্ত পৌছাবো তা জানা নেই।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রণি জানান, সরকারী আদেশে সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌপথে শুধুমাত্র পন্যদ্রব্য পারাপারের জন্য সীমিত আকারে ফেরি চলাচল চালু রাখা হয়েছে। যানবাহন কমে যাওয়ায় এ নৌরুটের ১৬টি ফেরির মধ্যে ১১টি বসিয়ে রেখে আমরা মাত্র ৫টি ফেরি চালু রেখেছি। কিন্তু শনিবার দুপুর থেকে মানুষের চাপে আমরা ঠিকমত পন্যবাহী যানবাহন পারাপার করতে পারছি না। প্রতিটি ফেরিতেই মানুষের উপচে পড়া ভীড়। এরা সকলেই বিভিন্ন গার্মেন্টস ও অন্যান্য ছোট-খাটো কারখানা ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মী। করোনা ঝুঁকি থাকলেও ফেরিতে এদের এভাবে পারাপার ঠেকানো আসলে সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।