Dhaka ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতারক গ্রেপ্তার

নিজের নাম বাবার নামও পাল্টে ফেলেছেন তিনি \ ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে দিয়েছেন একের পর এক মামলা

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৯:২২:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
  • / ১০৭৩ জন সংবাদটি পড়েছেন

 

 

নাম তার খান হুমায়ুন কবির। সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। চাকরি চলে যাওয়ার পর নিজের নাম, বাবার নাম, পৈতৃক ঠিকানা সব বদলে ফেলে শুরু করেন প্রতারণা। আমেরিকায় লোক পাঠানোর কথা বলে মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দিয়েও করেছেন দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের কাবিননামায়ও দিয়েছেন ভুয়া নাম ঠিকানা। নিজেকে বাঁচাতে ভুক্তভোগীদের নামে দিয়েছেন একের পর এক মামলা। অবশেষে এই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে রাজবাড়ীর ডিবি পুলিশ। সোমবার রাতে রাজবাড়ী শহরের ভবানীপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ, টিন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন ভুয়া ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়। হুমায়ুন কবির নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার জয়নগর ইউনিয়নের পাটনা ঘড়িভাঙ্গা গ্রামের মৃত শামসুল হক খানের ছেলে।

রাজবাড়ী জেলা ডিবি সূত্র জানায়, হুমায়ুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। ২০১০ সালে তার চাকরি চলে যায়। বাড়িতে তার স্ত্রী সন্তান থাকলেও সে আর বাড়ি যায়নি। সে ঢাকায় গিয়ে কৌশলে তার জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ, টিন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ বিভিন্ন ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরী করে। যেখানে তার নাম মনিরুজ্জামান, বাবার নামের জায়গায় মো. বাহেজ উদ্দিন, মাতা রোকেয়া বেগম, বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা-বাসা-৫৬১, রাস্তা-১৫, সাং- রূপনগর টিনশেড, সেকশন ০৫, থানা- রূপনগর, জেলা-ঢাকা ব্যবহার করেছেন। মূলত ওই বাসার ঠিকানাটি জনৈক মো. বাহেজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির। বাহেজ উদ্দিন তার স্ত্রী সন্তানসহ বর্তমানে অ্যমেরিকায় বসবাস করেন। হুমায়ুন তার বাসা দেখাশোনা করতেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সে ওই ঠিকানা ব্যবহার করে এ সকল ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজবাড়ী জেলার বাণিবহ এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে নানান কৌশলে সহজ সরল মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেন। আমেরিকা পাঠানোর কথা বলে তাদের কাছ থেকে তের লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। এখানেই তিনি ক্ষান্ত হননি। তার প্রথম স্ত্রীকে তালাকপ্রাপ্ত দেখিয়ে বাণিবহ এলাকায় এক তরুণিকে বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী তালাকপ্রাপ্ত নন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কাবিননামায়ও তিনি ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। তার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জন্ম সনদে জন্ম তারিখ আলাদা আলাদা।

এদিকে প্রতারণার শিকার বাণিবহ এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেন নামে এক ব্যক্তি রাজবাড়ী সদর থানায় হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করেন। এ পর্যন্ত ১১টি মামলা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে।

রাজবাড়ী ডিবি ওসি মো. মনিরুজ্জামান খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে মানুষের সাথে প্রতারণা, নিজের নাম ঠিকানা বদলে ফেলা এবং তালাক না দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালী থানায়ও মামলা রয়েছে। আসামিকে মঙ্গলবার রাজবাড়ীর আদালতে চালান করা হয়েছে।

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

প্রতারক গ্রেপ্তার

নিজের নাম বাবার নামও পাল্টে ফেলেছেন তিনি \ ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে দিয়েছেন একের পর এক মামলা

প্রকাশের সময় : ০৯:২২:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

 

 

নাম তার খান হুমায়ুন কবির। সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। চাকরি চলে যাওয়ার পর নিজের নাম, বাবার নাম, পৈতৃক ঠিকানা সব বদলে ফেলে শুরু করেন প্রতারণা। আমেরিকায় লোক পাঠানোর কথা বলে মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দিয়েও করেছেন দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের কাবিননামায়ও দিয়েছেন ভুয়া নাম ঠিকানা। নিজেকে বাঁচাতে ভুক্তভোগীদের নামে দিয়েছেন একের পর এক মামলা। অবশেষে এই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে রাজবাড়ীর ডিবি পুলিশ। সোমবার রাতে রাজবাড়ী শহরের ভবানীপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ, টিন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন ভুয়া ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়। হুমায়ুন কবির নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার জয়নগর ইউনিয়নের পাটনা ঘড়িভাঙ্গা গ্রামের মৃত শামসুল হক খানের ছেলে।

রাজবাড়ী জেলা ডিবি সূত্র জানায়, হুমায়ুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। ২০১০ সালে তার চাকরি চলে যায়। বাড়িতে তার স্ত্রী সন্তান থাকলেও সে আর বাড়ি যায়নি। সে ঢাকায় গিয়ে কৌশলে তার জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ, টিন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ বিভিন্ন ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরী করে। যেখানে তার নাম মনিরুজ্জামান, বাবার নামের জায়গায় মো. বাহেজ উদ্দিন, মাতা রোকেয়া বেগম, বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা-বাসা-৫৬১, রাস্তা-১৫, সাং- রূপনগর টিনশেড, সেকশন ০৫, থানা- রূপনগর, জেলা-ঢাকা ব্যবহার করেছেন। মূলত ওই বাসার ঠিকানাটি জনৈক মো. বাহেজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির। বাহেজ উদ্দিন তার স্ত্রী সন্তানসহ বর্তমানে অ্যমেরিকায় বসবাস করেন। হুমায়ুন তার বাসা দেখাশোনা করতেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সে ওই ঠিকানা ব্যবহার করে এ সকল ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজবাড়ী জেলার বাণিবহ এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে নানান কৌশলে সহজ সরল মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেন। আমেরিকা পাঠানোর কথা বলে তাদের কাছ থেকে তের লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। এখানেই তিনি ক্ষান্ত হননি। তার প্রথম স্ত্রীকে তালাকপ্রাপ্ত দেখিয়ে বাণিবহ এলাকায় এক তরুণিকে বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী তালাকপ্রাপ্ত নন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কাবিননামায়ও তিনি ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। তার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জন্ম সনদে জন্ম তারিখ আলাদা আলাদা।

এদিকে প্রতারণার শিকার বাণিবহ এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেন নামে এক ব্যক্তি রাজবাড়ী সদর থানায় হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করেন। এ পর্যন্ত ১১টি মামলা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে।

রাজবাড়ী ডিবি ওসি মো. মনিরুজ্জামান খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে মানুষের সাথে প্রতারণা, নিজের নাম ঠিকানা বদলে ফেলা এবং তালাক না দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালী থানায়ও মামলা রয়েছে। আসামিকে মঙ্গলবার রাজবাড়ীর আদালতে চালান করা হয়েছে।