Dhaka ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়ালন্দে শহীদ মিনারের বেদি সঙ্কুচিত

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৩৬:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • / ১৬০৭ জন সংবাদটি পড়েছেন


জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি ঐতিহ্যবাহী মুক্তিযোদ্ধা ফকির মহিউদ্দিন আনছার ক্লাব চত্বরে অবস্থিত। শহীদ মিনারটি প্রতিষ্ঠিত হয় কয়েক দশক আগে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি বছর মহান শহীদ দিবস, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সকল শহীদ স্মরণে সেখানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছে উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। পাশাপাশি বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে ওই শহীদ মিনারে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে পথনাটক, কবিতা আবৃত্তি উৎসবসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখান থেকে নতুন প্রজন্মসহ এলাকার সাধারণ মানুষের মনে মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতণার আলো ছড়িয়ে আসছে। এমন অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ বেদি ভেঙ্গে উপজেলার কেন্দ্রীয় ওই শহীদ মিনারটি সংকুচিত করার অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাঁতুড়ি-শাবল চালিয়ে মিনারের বেদি ভাঙ্গার দ্রুত কাজ করছেন কয়েক জন শ্রমিক। এ সময় সেখানে উপস্থিত রাজমিস্ত্রি শামীম মোল্লা জানান, কাজের নির্দেশনা অনুযায়ী এই শহীদ মিনারে কোন বেদি থাকবে না। তাই বেদিটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তবে, বেদির পরিবর্তে শুধু সিঁড়ি থাকবে। পাশাপাশি মিনারের গায়ে টাইলস্ লাগানো হবে। কাজটি করছে রাজবাড়ী জেলা পরিষদ। তিনি আরো বলেন, ‘জেলা পরিষদের এই কাজটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন গোয়ালন্দ পৌরসভার প্যানেল মেয়র কোমল কুমার সাহা। তার নির্দেশনায় আমরা কাজটি শুরু করছি।’ এদিকে শহীদ মিনারের বেদি ভাঙার খবর জেনে সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মীসহ এলাকার সচেতন অনেকেই সেখানে ছুটে আসেন। এ সময় নিজ চোখে শহীদ মিনারের বেদি ভাঙতে দেখে তারা ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেন। উপস্থিত একজন মুক্তিযোদ্ধা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শহীদ মিনার আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক। সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য সম্প্রসারণ না করে কোন কারণে এবং কেন বেদি ভেঙ্গে উপজেলার কেন্দ্রীয় এই শহীদ মিনারটি সঙ্কুচিত করা হচ্ছে তা আমরা কেউ জানি না।’ স্কুল, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্রদের স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘একজ’ এর আহ্বায়ক সুজন সারওয়ার বলেন, ‘প্রতি বছর ২২ ফেব্রুয়ারি আমরা ভাষা শহীদ স্মরণে এই শহীদ মিনারে আবৃত্তি উৎসব আয়োজন করে থাকি। কিন্তু বেদি ভেঙ্গে শহীদ মিনারটি সংকুচিত করলে আমাদের বার্ষিক আবৃত্তি উৎসব আয়োজন অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।’ গোয়ালন্দ উপজেলার কেন্দ্রীয় ওই শহীদ মিনার সংকুচিত করার কাজ রুখতে এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ মুক্তচিন্তার সকলকে এগিয়ে আসা খুব জরুরী বলে তিনি জানান।
গোয়ালন্দ পৌরসভার প্যানেল মেয়র কোমল কুমার সাহা বলেন, ‘একজন ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজটি করছে রাজবাড়ী জেলা পরিষদ। আমি শুধু ওই কাজের দেখাশোনা করছি।’

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

গোয়ালন্দে শহীদ মিনারের বেদি সঙ্কুচিত

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৬:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯


জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি ঐতিহ্যবাহী মুক্তিযোদ্ধা ফকির মহিউদ্দিন আনছার ক্লাব চত্বরে অবস্থিত। শহীদ মিনারটি প্রতিষ্ঠিত হয় কয়েক দশক আগে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি বছর মহান শহীদ দিবস, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সকল শহীদ স্মরণে সেখানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছে উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। পাশাপাশি বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে ওই শহীদ মিনারে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে পথনাটক, কবিতা আবৃত্তি উৎসবসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখান থেকে নতুন প্রজন্মসহ এলাকার সাধারণ মানুষের মনে মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতণার আলো ছড়িয়ে আসছে। এমন অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ বেদি ভেঙ্গে উপজেলার কেন্দ্রীয় ওই শহীদ মিনারটি সংকুচিত করার অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাঁতুড়ি-শাবল চালিয়ে মিনারের বেদি ভাঙ্গার দ্রুত কাজ করছেন কয়েক জন শ্রমিক। এ সময় সেখানে উপস্থিত রাজমিস্ত্রি শামীম মোল্লা জানান, কাজের নির্দেশনা অনুযায়ী এই শহীদ মিনারে কোন বেদি থাকবে না। তাই বেদিটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তবে, বেদির পরিবর্তে শুধু সিঁড়ি থাকবে। পাশাপাশি মিনারের গায়ে টাইলস্ লাগানো হবে। কাজটি করছে রাজবাড়ী জেলা পরিষদ। তিনি আরো বলেন, ‘জেলা পরিষদের এই কাজটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন গোয়ালন্দ পৌরসভার প্যানেল মেয়র কোমল কুমার সাহা। তার নির্দেশনায় আমরা কাজটি শুরু করছি।’ এদিকে শহীদ মিনারের বেদি ভাঙার খবর জেনে সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মীসহ এলাকার সচেতন অনেকেই সেখানে ছুটে আসেন। এ সময় নিজ চোখে শহীদ মিনারের বেদি ভাঙতে দেখে তারা ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেন। উপস্থিত একজন মুক্তিযোদ্ধা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শহীদ মিনার আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক। সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য সম্প্রসারণ না করে কোন কারণে এবং কেন বেদি ভেঙ্গে উপজেলার কেন্দ্রীয় এই শহীদ মিনারটি সঙ্কুচিত করা হচ্ছে তা আমরা কেউ জানি না।’ স্কুল, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্রদের স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘একজ’ এর আহ্বায়ক সুজন সারওয়ার বলেন, ‘প্রতি বছর ২২ ফেব্রুয়ারি আমরা ভাষা শহীদ স্মরণে এই শহীদ মিনারে আবৃত্তি উৎসব আয়োজন করে থাকি। কিন্তু বেদি ভেঙ্গে শহীদ মিনারটি সংকুচিত করলে আমাদের বার্ষিক আবৃত্তি উৎসব আয়োজন অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।’ গোয়ালন্দ উপজেলার কেন্দ্রীয় ওই শহীদ মিনার সংকুচিত করার কাজ রুখতে এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ মুক্তচিন্তার সকলকে এগিয়ে আসা খুব জরুরী বলে তিনি জানান।
গোয়ালন্দ পৌরসভার প্যানেল মেয়র কোমল কুমার সাহা বলেন, ‘একজন ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজটি করছে রাজবাড়ী জেলা পরিষদ। আমি শুধু ওই কাজের দেখাশোনা করছি।’