শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলাকালীন নৌকায় ভোট চাইলেন দুই শিক্ষক!
- প্রকাশের সময় : ০৫:৫২:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ১১২৩ জন সংবাদটি পড়েছেন
রাজবাড়ী-২ আসন এলাকার কালুখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন কারিকুলাম বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলাকালীন নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন দুজন শিক্ষক। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কালুখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন কারিকুলাম প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপজেলার ৪০টি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ৩৭৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকা অংশগ্রহণ করছেন। বৃহস্পতিবার ছিল কর্মশালার পঞ্চম দিন। কর্মশালা চলাকালীন প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে জমায়েত করা হয়। বিদ্যালয়ের বারান্দায় দাঁড়িয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বক্তৃতা করেন পাংশা-কালুখালী শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি ও আখরজানি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকলেছুর রহমান এবং মাছপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফুরা বেগম। সফুরা বেগম রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য।
এসংক্রান্ত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সফুরা বেগম শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলছেন, আপনারা শিক্ষক। আপনারা জাতি গড়ার কারিগর। তার বক্তৃতা চলাকালীন কয়েকজন শিক্ষক কোলাহল করলে সফুরা বেগম তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এরাতো মানুষই না। আমি জিল্লু ভাই (সাংসদ জিল্লুল হাকিম) এর কাছে বিষয়টি বলব।’ এরপর আবার বক্তৃতা শুরু করে বলেন, আপনাদের দ্বারা পাড়া প্রতিবেশি বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে বলবেন যাতে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়। নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হবে। নিজেদের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা নৌকা মার্কায় ভোট দেব। জয় বাংলা।
এ বিষয়ে কালুখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শিহাব উদ্দিন জানান, ট্রেনিংয়ের মাঝখানে বিরতি থাকে ওই সময় হয়ত কোনো প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে পারে। তিনি ব্যস্ত ছিলেন। বিষয়টি তার নজরে পড়েনি।
আখরজানি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পাংশা-কালুখালী শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি মোকলেছুর রহমান বলেন, কালুখালী ও পাংশায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ হচ্ছে। এসব প্রশিক্ষণে নতুন কারিকুলাম বিষয়ে কথা বলেছি। প্রশিক্ষণের বাইরে বৃহস্পতিবার প্রাইভেট আলোচনার মধ্যে একটু কথা বলেছি। সেখানে অল্প কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন। এতে ট্রেনিংয়ের কোনো ব্যত্যয় ঘটানো হয়নি।
এ বিষয়ে মাছপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেলা পরিষদ সদস্য সফুরা বেগম বলেন, আমি রাজনীতি করি। আমি ট্রেনিং সেন্টারের ভেতরে ঢুকি নাই। যারা বাইরে ছিল তাদের কাছে ভোট চেয়েছি।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী জেলার মিডিয়া সেলের প্রধান মো. সোহাগ হোসেন জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলাকালীন একজন প্রার্থীর পক্ষে কতিপয় শিক্ষক ভোট চেয়েছেন। এছাড়া একজন প্রার্থী সেখানে ভোট চাইতে গিয়েছিলেন। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আমরা দুটি বিষয়কেই নিরুৎসাহিত করি। এর সঙ্গে যেসব শিক্ষক বা শিক্ষিকা জড়িত তাদেরকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটরিং করতে বলা হয়েছে।