Dhaka ০৫:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বালিয়াকান্দিতে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করেছে বন্যার পানি ॥ উৎকণ্ঠায় ৫ গ্রামের মানুষ

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ১১:০২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ অগাস্ট ২০২১
  • / ১৩৫৪ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা এলাকায় গড়াই নদীর পাড়ে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে বন্যার পানি। যেকারণে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মাঝে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে আশেপাশের পাঁচ গ্রামের মানুষ। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে একটি বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে।

এলাকাবাসী জানায়, তিন বছর আগে বর্ষা মৌসুমে গড়াই নদীর ভাঙনে বেড়িবাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা ধসে  যায়। যেকারণে রাস্তাটি চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। এক প্রকার বিলীন হয়ে গেছে রাস্তাটি। ফলে যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। বেড়িবাঁধ মেরামত বা নির্মাণ না করার কারণে চলাচলে মানুষ প্রতিনিয়তই চরম দুর্ভোগ পোহায়। গত কয়েকদিন ধরে বন্যার পানি বাড়ছে। বুধবার বিকেল থেকে বন্যার পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। এলাকাবাসী জানায়, এখনই কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মরাবিলা, চরঘিকমলা, বাকসাডাঙ্গি, কোনাগ্রাম, জামসাপুর গ্রাম প্লাবিত হতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা হাসান বিশ্বাস, নাদের আলী বিশ্বাস, পল্লী চিকিৎসক মুকুল হোসেনসহ অনেকেই জানান, ইতিপুর্বে বেড়িবাঁধ ও পাকা সড়কসহ প্রায় দুইশ বিঘা জমি নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে। বাঁধ ভাঙার কারণে এখন লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। তারা খুবই আতঙ্কে আছেন। কখন যেন বাড়িঘর তলিয়ে যায়। দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পাঁচটি গ্রামের মানুষকে রক্ষার আবেদন জানান তারা।

ইউপি সদস্য আবজাল হোসেন জানান, মরাবিলা এলাকায় বেড়িবাঁধ ও পাকা সড়ক বিলীন হওয়ার পর তিনবার সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। প্রতিবারই তা নদীতে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে যে অবস্থা দেখা দিয়েছে জরুরী ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে সমূহ বিপদ। এ এলাকায় স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

নারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম মাস্টার জানান, বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তি বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত তিন বছর আগে নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা এলাকায় পাকা সড়ক ও বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা ভাঙতে ভাঙতে অনেক দূর চলে এসেছে। জমি জিরেতও চলে গেছে নদীতে। নদী তীরবর্তী মানুষেরা অসহায় হয়ে পড়েছে। রাস্তা ভাঙনের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যেকারণে কৃষিপণ্য নিয়ে বাজারে যেতে কৃষকদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি মেরামতের জন্য স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে  বহুবার বলেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করতে আমরা  ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাটি ফেলেছিলাম। কিন্তু সেটিও ভেঙে গেছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানা জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। উপদ্রুত এলাকায় অস্থায়ী একটি বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বালিয়াকান্দিতে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করেছে বন্যার পানি ॥ উৎকণ্ঠায় ৫ গ্রামের মানুষ

প্রকাশের সময় : ১১:০২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ অগাস্ট ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা এলাকায় গড়াই নদীর পাড়ে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে বন্যার পানি। যেকারণে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মাঝে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে আশেপাশের পাঁচ গ্রামের মানুষ। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে একটি বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে।

এলাকাবাসী জানায়, তিন বছর আগে বর্ষা মৌসুমে গড়াই নদীর ভাঙনে বেড়িবাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা ধসে  যায়। যেকারণে রাস্তাটি চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। এক প্রকার বিলীন হয়ে গেছে রাস্তাটি। ফলে যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। বেড়িবাঁধ মেরামত বা নির্মাণ না করার কারণে চলাচলে মানুষ প্রতিনিয়তই চরম দুর্ভোগ পোহায়। গত কয়েকদিন ধরে বন্যার পানি বাড়ছে। বুধবার বিকেল থেকে বন্যার পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। এলাকাবাসী জানায়, এখনই কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মরাবিলা, চরঘিকমলা, বাকসাডাঙ্গি, কোনাগ্রাম, জামসাপুর গ্রাম প্লাবিত হতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা হাসান বিশ্বাস, নাদের আলী বিশ্বাস, পল্লী চিকিৎসক মুকুল হোসেনসহ অনেকেই জানান, ইতিপুর্বে বেড়িবাঁধ ও পাকা সড়কসহ প্রায় দুইশ বিঘা জমি নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে। বাঁধ ভাঙার কারণে এখন লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। তারা খুবই আতঙ্কে আছেন। কখন যেন বাড়িঘর তলিয়ে যায়। দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পাঁচটি গ্রামের মানুষকে রক্ষার আবেদন জানান তারা।

ইউপি সদস্য আবজাল হোসেন জানান, মরাবিলা এলাকায় বেড়িবাঁধ ও পাকা সড়ক বিলীন হওয়ার পর তিনবার সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। প্রতিবারই তা নদীতে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে যে অবস্থা দেখা দিয়েছে জরুরী ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে সমূহ বিপদ। এ এলাকায় স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

নারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম মাস্টার জানান, বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তি বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত তিন বছর আগে নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা এলাকায় পাকা সড়ক ও বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা ভাঙতে ভাঙতে অনেক দূর চলে এসেছে। জমি জিরেতও চলে গেছে নদীতে। নদী তীরবর্তী মানুষেরা অসহায় হয়ে পড়েছে। রাস্তা ভাঙনের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যেকারণে কৃষিপণ্য নিয়ে বাজারে যেতে কৃষকদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি মেরামতের জন্য স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে  বহুবার বলেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করতে আমরা  ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাটি ফেলেছিলাম। কিন্তু সেটিও ভেঙে গেছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানা জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। উপদ্রুত এলাকায় অস্থায়ী একটি বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে।