রপ্তানি বন্ধ থাকায় লোকসানের মুখে বালিয়াকান্দির পান চাষীরা
- প্রকাশের সময় : ০৭:৪৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
- / ১৪৯৫ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ প্রকৃতিগতভাবেই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার পানের সুখ্যাতি রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বিদেশে রপ্তানি হতো বালিয়াকান্দির পান। করোনার মহামারিতে থমকে গেছে রপ্তানি। এতে করে লোকসানের মুখে পড়েছে পানবচাষীরা।
জানা গেছে, মিষ্টি পান চাষে উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত বালিয়াকান্দি উপজেলা। এ অঞ্চলের পানের সুখ্যাতি বহু পুরনো। এখানে সাধারণত দুই জাতের পান উৎপাদন হয়। মিষ্টি পান আর সাচি পান। এখানকার মিষ্টি পান রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভূটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল, সৌদি আরব, মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করা হয়। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়ে থাকে।
পান চাষী নিরঞ্জন দে জানান, বালিয়াকান্দি উপজেলার আড়কান্দি, বেতেঙ্গা, চরআড়কান্দি, ইলিশকোল, স্বর্প বেতেঙ্গা, খালকুলা, বালিয়াকান্দি, বহরপুর, যদুপুর এলাকায় পানের আবাদ বেশি হয়। পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারাও পান চাষ করছেন। এ অঞ্চলের সাচি ও মিষ্টি পান প্রচুর জন্মে। পান চাষ লাভজনক হলেও তাদেরকে মাঝে মধ্যে পড়তে হয় নানা সমস্যায়। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে তারা প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। অধিক পরিশ্রম করে সে ক্ষতি কাটিয়েও উঠেছিলেন। কিন্তু রপ্তানি বন্ধ থাকায় তারা পড়েছেন বিপাকে।
পান চাষী সঞ্জয় বলেন, বরজ থেকে পান তুলে বাজারে নিয়ে গেলে যে টাকা বিক্রি হয় তাতে খরচ ওঠাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। যেকারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এর উপর গত কয়েকদিনের ঘন বৃষ্টির কারণে পানের ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
পান চাষীরা আরো জানান, অর্থকরী ফসল পান হলেও তারা সরকারি কোন সহযোগিতা পাননি কখনও। সরকারি ভাবে তাদেরকে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করলে পান চাষকে আরো লাভজনক ও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি পান ও সাচি পানের আবাদ করা হয়েছে। গত বছর ৬৭০টি মিষ্টি পানের বরজ, ১৮০টি সাচি পান বরজসহ ৮৫০টি বরজে ১৩০ হেক্টর জমিতে পানের চাষ হয়েছিল।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, এখানকার মিষ্টি পান এলাকার চাহিদা মিটিয়ে আটটি দেশে রপ্তানি করা হয়। পান চাষীদেরকে সব সময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। সম্প্রতি ঘন বৃষ্টির কারণে পানগাছ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পানি শুকিয়ে গেলেই এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। করোনার কারণে এ বছর পান চাষীরা লোকসানের মুখে পড়েছে। তবে করোনার ধকল কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়াবে বলে বিশ্বাস তার। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।